আজ ১৯/০৮/২০১৬, শুক্রবার।
দেওয়ানবাগ শরীফের বাবে রহমতে আয়োজিত সাপ্তাহিক বিশেষ আশেকে রাসূল (সঃ) মাহফিল ও ‘আল্লাহর দেয়া পুরস্কার ॥ পূর্ণিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগী’ উপলক্ষে মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, যুগের ইমাম, আম্বিয়ায়ে কেরামের ধর্মের দায়িত্ব ও বেলায়েত লাভকারী, হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব লাভকারী, আল্লাহ্র দেয়া পুরস্কার পূর্ণিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগীর জীবন্ত প্রতিচ্ছবি, সূফী সম্রাট হযরত মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী) হুজুর কেব্লাজান আশেকে রাসূল ও মুক্তিকামী মানুষের উদ্দেশ্যে যে বাণী মোবারক প্রদান করেন তার সংকলন]
=================================
=================================
নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লিয়ালা রাসূলিহিল কারিম। সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা আপনারা আমার সালাম গ্রহণ করুন। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আজ আল্লাহর দেয়াা পুরস্কার পুনিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগী অনুষ্ঠানে আমরা সালাতুস শুকুর নামাজ আদায় করেছি। হযরত রাসুল (সঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন শুভ সংবাদ পেলে শুকরিয়া আদায়ের জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। পূর্নিমার চাঁদের অনুষ্ঠানটা কি আমাদের জন্য একটা শুভসংবাদ নয়। আমরা প্রতি মাসে পূর্নিমার চাঁদ আসলে সালাতুস শুকুরের দুই রাকাত নামাজ আদায় করি।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের জীবনে কিছু ঘটনা আছে যেগুলোর সাথে অন্যদের মিল নেই। ফলে অনেকে এটার বিরোধীতা শুরু করে দেয়, না জেনে না বুঝে। সংস্কার করতে গিয়ে আমারা যখন ধর্মে প্রবিষ্ট ভুলগুলো সংশোধন করেছি তখন একটা শ্রেণী আমাদের বিরোধিতা শুরু করে। পরে অবশ্য সেটা মেনে নিতে বাধ্য হয়। যখন কোন ঘটনা ঘটে তখন তার ব্যাখ্যা আমাদের দিতে হয়, বলতে হয়। এটা আল্লাহর বিভিন্ন লিলা-খেলা। যেভাবে তিনি তাঁর ধর্ম প্রচার করতে চান ধর্ম সেইভবেই প্রচারিত হবে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে সকল মানুষই আল্লাহকে পাওয়ার জন্য নবী-রাসূলদের কাছে গিয়েছে। পরবর্তীতে অলী-আল্লাহদের কাছে গেছে। আমাদের বাংলাদেশে অলী-আল্লাহরা এসে আমাদের পূর্ব পুরুষদের মুসলমান বানিয়েছেন। গ্রাম বাংলায় এখনো জমিনের পুরনো দলিলের মধ্যে লেখা দেখতে পাবেন শ্রী শ্রী আব্দুল করিম, শ্রী শ্রী আব্দুল রহিম। এতে করে বুঝা যায় আমরা অন্য ধর্ম থেকে মুসলমান হয়েছি। এদেশের মানুষ অলী-আল্লাহদের মাধ্যমে ই ইসলাম গ্রহণ করেছে, তারপর আজকের এই অবস্থায় এসেছে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, হযরত রাসুল (সঃ)-এর জামানায় যারা ধর্ম গ্রহণ করেছিল তারা রাসুল এর অনুসরন করেছেন। হযরত রাসূল (সঃ)-এর কথাগুলোই পরবর্তীতে হাদীস হিসেবে সংকলিত হয়েছে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, ইসলাম শান্তির ধর্ম। শান্তির ইসলাম দেহে থাকে না আত্মায় থাকে। অন্তর দ্বারা শান্তিপেতে হয়। সঠিক ইসলাম পালন করলে আপনার হৃদয়টা প্রশান্তি লাভ করবে। কোন টেনশন আপনাকে স্পর্শ করবে না। আপনি যে রাস্তায় চলা-ফেরা করেন কোন টেনশন লাগে। কিন্তু অন্যদের দেখেন তাদের কাছে কেমন লাগে। এ শান্তিটা তো আত্মা থেকে আসে। আর এই শান্তি আনতে হলে শান্তির চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তির কাছে যেতে হয়। নবী-রাসুলগন যারা মূর্তি পুজা করতো এদেরকে শান্তির চরিত্রের শিক্ষা দিয়েছেন। এই শান্তির চরিত্র লাভ করার পরই তারা শান্তির চরিত্রে চরিত্রবান হয়েছে। সুন্দর চরিত্র কিতাব পড়ে হয় না, চরিত্রবান ব্যক্তির প্রয়োজন। নবুয়াতের যুগে নবী-রাসূলগণ মানুষকে চরিত্রবান করেছেন। আর বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম মানুষকে চরিত্রবান করছে। নিজের দোষ ক্রটি দূর করতে না পারলে সে চরিত্রবান হবে কি করে। এখন আপনাদের আশেকে রাসূল এর সংখ্যা অনেক। সবাইকে চেনা কঠিন। সুতরাং নিয়মিত আশেকে রাসুল এর চরিত্র অর্জন করতে চেষ্টা করেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, কিছু কিছু লোক আছে আশেকে রাসূল এর কথা আমরা যা আলোচনা করি সেটা শুনে। কিন্তুশোনা, বলা, আর আমল করা এক নয়। একটা শ্রেণী আছে যারা মানুষকে প্রতারিত করতে চেষ্টা করে। অলী-আল্লাহর দরবারে খারাপ ভালো দুই শ্রেনীর মানুষই আসে। সাধনা করতে করতে সেই খারাপ মানুষটা ভাল হয়ে যা। কিন্তুসাধনা করত হবে। আমাদের এখানে বাইরে থেকে বিভিন্নলোক আসে আমরা তরিকার বিধান অনুযায়ী সবক দিয়ে দেই। কিন্তু কিছু লোক ওয়াজিফা নিয়ে আলমারীতে রেখে দেয়। এখন স্কুলে ভর্তি হলেই কি মানুষ শিক্ষিত হয়ে যায়? তাদের কি নিয়মিত পড়ালেখা করতে হবে না? কিছু কিছুলোক আমাদেরও আছে বিপদগামী হয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলে। আপনারা যারা আপনাদের দয়ার মা’র রওজায় যান তাদের কাছে কি খারাপ লাগে, অশান্তিলাগে? যাদের কাছে অশান্তি লাগে খারপা লাগে তারা তো সঠিক পথে নেই। এই সব বিষয় নিয়ে একটা শ্রেনী ফেইসবুকে উল্টা-পাল্টা কথা লিখে। কিন্ত আমার সামনে আসে না। এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে, চালউ তোলে মিথ্যা কথা বলে। আশেকে রাসুল দবি করে কিন্তু আমার সাথে দেখা করে না। আমি এগুলোকে বের করে দিয়েছি। কর্মদোষেই এরা দরবার থেকে বিতারিত। আমার মোর্শেদের দরবারাও আমি এমন দেখেছি কর্ম দোষের কারণে দরবার থেকে বের হয়ে গেছে। এইগুলো আল্লাহর শক্র, আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর শত্রু, আমাদের শত্রু। এরা বিপদগামী। এরা শয়তানের চেয়ে খারাপ। এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে। আমি আপনাদের কাছে আগেও বলেছি এরা বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আপনাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। সেই টাকা নিয়ে আত্মসাত করে। সুতরাং এগুলোকে প্রশ্রয় দিবেন না। এগুলো সকল নবী-রাসূল এর যুগে মানুষ শয়তান হিসেবে কাজ করেছে। এর াই মানুষ শয়তান। এরাই বিভ্রান্তি সৃস্টি করে। হযরত রাসুল (সঃ)-এর যুগে এমন মানুষ শয়তান ছিল।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, সমাজের একটা শ্রেনী বলে হযরত রাসুল (সঃ) ৭০ তালিওয়ালা জামা পড়তেন। এটা রাসুল (সঃ)-এর যুগে কিছু মানুষ শয়তান প্রচার করেছিল এখনো কিছু মানুষ শয়তান এটাই প্রচার করছে। আমি আপনাদের ভিডিও সিডির মাধ্যমে দেখিয়েছি রাসুল (সঃ) স্বর্ণের সিংহাসনে বসতেন। হযরত রাসূল (সঃ) কুলকায়েনাতের রহমত। রাসূল (সঃ) গরীব ছিলেন, ৭০ তালিওয়ালা জামা পড়তেন এগুলো মিথ্যা কথা। চক্রান্তকারী সবযুগে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এদের থেকে আপনারা সাবধান থাকবেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, ময়ময়সিংহের ত্রিশালের বাবে বরকতে আমি আমার শাশুড়ির রওজা শরীফ বানিয়েছি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নিয়েছি? আমার স্ত্রী রওজা আমি বানাবো আমি কি কারো কাছে টাকা পয়সা চেয়েছি। যারা আপনাদের কাছে রওজার নাম করে টাকা চায় তারা প্রতারক। আমি আপনাদের এই বিষয়গুলো বলার কারণ হলো ফেইসবুকে এই প্রতারক চক্র মিথ্যা অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে আপনারা এদের কথা বিশ্বাস করবেন না। আপনাদের সাবধান করছি আপনারা যাতে করে এদের ধোঁকায় না পড়েন, এদের মায়া কান্না দেখে। আপনি সিরাতুল মোস্তাকিমে আছেন, তাই আপনি সরল বিশ্বাসী। এরা আপনাদের দুর্বল স্থানে আঘাত করে প্রতারিত করতে চেষ্টা করবে আপনারা সতর্ক থাকেবেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আপনারা পূর্ণিমার চাঁদের অনুষ্ঠান করে শান্তি পান? আমরা শুকরিয়া আদায় করে দুই রাকতা নামাজ পড়ি। আমাদের নামে একটা বদনাম আছে আমারা মিলাদে কিয়ামের সময় দাঁড়িয়ে ‘ইয়া নবী সালামুআলাইকুর’ স্থলে মিলাদে ‘ইয়া ইমাম সালামুআলাইকা’ বলি। ঘটনা হলো কেউ এম এ পাশ করলে তাকে কেউ বলে কি- মেট্রিক পাশ অথবা আই এ পাশ? আল্লাহ রাসূল (সঃ)-কে প্রথমে নবী বলেছেন। এরপর রিসালাত যখন আসছে তখন রাসূল (সঃ)-কে বলেছেন- হে রাসুল। যখন তিনি ইমামুল মুরসালিন হলেন অর্থাৎ উনি যখন মেরাজে যান তখন সেখানে বায়তুল মোকাদ্দাসে তিনি সকল নবী-রাসুলদের ইমাম হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়িয়ে ছিলেন। ঐখান থেকে তিনি ‘ইমামুল মুরসালিন’। সকল নবী-রাসূলগণের ইমাম। আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূল (সঃ)-এর এটা সর্বশেষ র্যাংক। তখন আমরা বলেছি- ‘ইয়া ইমাম সালামুআলাইকা।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমি কোরআন দিয়েই প্রমান করেছি আল্লাহর আকার আছে। আমি তাফসীরে ‘সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ লিখেছি। কোরআনের আয়াত দিয়েই প্রমান করেছি আল্লাহর আকার আছে। এলমে তাসাউফ, এলমে মারেফত। সকল নবী-রাসুল গন এই বিদ্যাটা চর্চা করেই আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করেছেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) থেকে যে আমাদের ধর্ম এসেছে এটা আমরাও জানতাম না। এখন দেখছি সকল নবী-রাসুল গন এক সুতায় গাঁথা। মাদ্রাসায় তো আমিও পড়েছি কিন্তু সিলেবাসে যা আছে শুধু তাই পড়েছি। কোরআনের প্রতিটি আয়াতের গবেষণা করার সুযোগ আছে কি আমাদের। আমরা এখন তাফসীর লিখতে গিয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন বিষয়ের সম্মুখিন হচ্ছি।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, সবই তো বিজ্ঞান। এক বিজ্ঞান পড়ে ডাক্তার হলেন। আরেক বিজ্ঞান পড়ে ইঞ্জিনিয়ার হলেন। আরেক বিজ্ঞান পড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানী হলেন। তাসাউফের বিদ্যা দিয়ে সকল নবী-রাসূল গণ আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করেছেন। হযরত নূহ (আঃ) কিভাবে নৌকা বানাবেন আল্লাহ তা শিখিয়ে দিয়েছেন। হযরত দাউদ (আঃ) লোহাকে ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করেছেন। আল্লাহ তাদের কাছে বসে থেকে শিক্ষা দিয়েছেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের সমাজে প্রচলন আছ জিব্রাইল রাসুল (সঃ)-এর শিক্ষক। জিব্রাইল কি আদম (আঃ) সেজদা করেনি? তাহলে সে রাসূল এর শিক্ষক হলো কি করে? আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে রাসূল! আমি আপনাকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি।’ তাহলে হযরত রাসূল (সঃ)-কে জিব্রাইল কিভাবে কোরআন শিক্ষা দিলো? রাসুল (সঃ) বলেন, ‘আমি শিক্ষক রূপে প্রেরিত হয়েছি।’ যিনি শিক্ষক হিসাবে জন্ম হলেন তিনি কি করে জিব্রাইলের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। আমরা এই বিষয়গুলো তাফসীরে লিখছি। আপনারা তাফসীর পড়লে জানতে পারবেন। আমাদে জানা দরকার আল্লাহ কি বলেছেন এবং রাসুল কি বলেছেন। আগে আল্লাহ সম্পর্কে জানেন তারপর মানেন। না জেনে মানার কোন মূল্য নেই। আগে চেষ্টা করেন ক্বালব থেকে শয়তান তাড়াতে। হযরত ওমর (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর কাছে গিয়ে বলেন, ইয়া রাসূল্লালাহ! আমি নামাজে দাঁড়ালে দুনিয়ার কথা মনে আসে। তখন রাসূল (সঃ) তার বুকে হাত রাখলেন। এরপর বললেন এখন। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, এখন শুধু আমার নিজের কথা মনে আসে। রাসূল (সঃ) আবার তার বুকে হাত রাখলেন এবং এরপর জিজ্ঞাসা করলেন এখন। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূল্লালাহ (সঃ) এখন আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই মনে আসে না। এভাবেই আল্লাহর রাসূল (সঃ) তাসাউফের শিক্ষা দিয়েছেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের তাফসীরটা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। এতে সব কথা পাবেন যা আগে কখানো শুনেননি। এগুলো আমাদের জানার প্রয়োজন আছে। জানেন তারপর পালন করেন। আমরা আসছি দরবারে ঈমানদার হওয়ার জন্য, মুনেন হওয়ার জন্য, আল্লাহকে পাওয়ার জন্য, হযরত রাসূল (সঃ)-কে পাওয়ার জন্য। আমি কতটুকু আল্লাহকে পেলাম, রাসূল (সঃ)-কে পেলাম, কতটুকু ঈমানদার হতে পারলাম এগুলো আমাদের চিন্তা করা দরকার। আমার মোর্শেদের দরবারে মোর্শেদের পর আমার স্থান ছিল। আমিই সেখানে সবক দিতাম। ১২ বছর কাজ করেছি। আমার আল্লাহ আমাকে দয়া করেছেন। এখনো যদি কেউ আমরা মোর্শেদের কথা এসে আমাকে বলে যে, উনি এই বিষয়ে এই কথা বলেছেন। আমি বলে দিব কোনটা উনার কথা আর কোনটা আপনি সংযোগ করেছেন। তরিকাটা হলো সহবতের । তরিকা কাছে থেকে শিখতে হয় তাহলে ভুল কম হয়। মানুষ শয়তান থেকে সাবধান থাকেন কারণ মানুষ শয়তানই মানুষকে বেশি বিপথগামী করে
আসুন মহান আল্লাহর সাহায্য চাই। তিনি যেন দয়া করেন আমাদের কবুল করে নেন। আমিন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আজ আল্লাহর দেয়াা পুরস্কার পুনিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগী অনুষ্ঠানে আমরা সালাতুস শুকুর নামাজ আদায় করেছি। হযরত রাসুল (সঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন শুভ সংবাদ পেলে শুকরিয়া আদায়ের জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। পূর্নিমার চাঁদের অনুষ্ঠানটা কি আমাদের জন্য একটা শুভসংবাদ নয়। আমরা প্রতি মাসে পূর্নিমার চাঁদ আসলে সালাতুস শুকুরের দুই রাকাত নামাজ আদায় করি।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের জীবনে কিছু ঘটনা আছে যেগুলোর সাথে অন্যদের মিল নেই। ফলে অনেকে এটার বিরোধীতা শুরু করে দেয়, না জেনে না বুঝে। সংস্কার করতে গিয়ে আমারা যখন ধর্মে প্রবিষ্ট ভুলগুলো সংশোধন করেছি তখন একটা শ্রেণী আমাদের বিরোধিতা শুরু করে। পরে অবশ্য সেটা মেনে নিতে বাধ্য হয়। যখন কোন ঘটনা ঘটে তখন তার ব্যাখ্যা আমাদের দিতে হয়, বলতে হয়। এটা আল্লাহর বিভিন্ন লিলা-খেলা। যেভাবে তিনি তাঁর ধর্ম প্রচার করতে চান ধর্ম সেইভবেই প্রচারিত হবে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে সকল মানুষই আল্লাহকে পাওয়ার জন্য নবী-রাসূলদের কাছে গিয়েছে। পরবর্তীতে অলী-আল্লাহদের কাছে গেছে। আমাদের বাংলাদেশে অলী-আল্লাহরা এসে আমাদের পূর্ব পুরুষদের মুসলমান বানিয়েছেন। গ্রাম বাংলায় এখনো জমিনের পুরনো দলিলের মধ্যে লেখা দেখতে পাবেন শ্রী শ্রী আব্দুল করিম, শ্রী শ্রী আব্দুল রহিম। এতে করে বুঝা যায় আমরা অন্য ধর্ম থেকে মুসলমান হয়েছি। এদেশের মানুষ অলী-আল্লাহদের মাধ্যমে ই ইসলাম গ্রহণ করেছে, তারপর আজকের এই অবস্থায় এসেছে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, হযরত রাসুল (সঃ)-এর জামানায় যারা ধর্ম গ্রহণ করেছিল তারা রাসুল এর অনুসরন করেছেন। হযরত রাসূল (সঃ)-এর কথাগুলোই পরবর্তীতে হাদীস হিসেবে সংকলিত হয়েছে।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, ইসলাম শান্তির ধর্ম। শান্তির ইসলাম দেহে থাকে না আত্মায় থাকে। অন্তর দ্বারা শান্তিপেতে হয়। সঠিক ইসলাম পালন করলে আপনার হৃদয়টা প্রশান্তি লাভ করবে। কোন টেনশন আপনাকে স্পর্শ করবে না। আপনি যে রাস্তায় চলা-ফেরা করেন কোন টেনশন লাগে। কিন্তু অন্যদের দেখেন তাদের কাছে কেমন লাগে। এ শান্তিটা তো আত্মা থেকে আসে। আর এই শান্তি আনতে হলে শান্তির চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তির কাছে যেতে হয়। নবী-রাসুলগন যারা মূর্তি পুজা করতো এদেরকে শান্তির চরিত্রের শিক্ষা দিয়েছেন। এই শান্তির চরিত্র লাভ করার পরই তারা শান্তির চরিত্রে চরিত্রবান হয়েছে। সুন্দর চরিত্র কিতাব পড়ে হয় না, চরিত্রবান ব্যক্তির প্রয়োজন। নবুয়াতের যুগে নবী-রাসূলগণ মানুষকে চরিত্রবান করেছেন। আর বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম মানুষকে চরিত্রবান করছে। নিজের দোষ ক্রটি দূর করতে না পারলে সে চরিত্রবান হবে কি করে। এখন আপনাদের আশেকে রাসূল এর সংখ্যা অনেক। সবাইকে চেনা কঠিন। সুতরাং নিয়মিত আশেকে রাসুল এর চরিত্র অর্জন করতে চেষ্টা করেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, কিছু কিছু লোক আছে আশেকে রাসূল এর কথা আমরা যা আলোচনা করি সেটা শুনে। কিন্তুশোনা, বলা, আর আমল করা এক নয়। একটা শ্রেণী আছে যারা মানুষকে প্রতারিত করতে চেষ্টা করে। অলী-আল্লাহর দরবারে খারাপ ভালো দুই শ্রেনীর মানুষই আসে। সাধনা করতে করতে সেই খারাপ মানুষটা ভাল হয়ে যা। কিন্তুসাধনা করত হবে। আমাদের এখানে বাইরে থেকে বিভিন্নলোক আসে আমরা তরিকার বিধান অনুযায়ী সবক দিয়ে দেই। কিন্তু কিছু লোক ওয়াজিফা নিয়ে আলমারীতে রেখে দেয়। এখন স্কুলে ভর্তি হলেই কি মানুষ শিক্ষিত হয়ে যায়? তাদের কি নিয়মিত পড়ালেখা করতে হবে না? কিছু কিছুলোক আমাদেরও আছে বিপদগামী হয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলে। আপনারা যারা আপনাদের দয়ার মা’র রওজায় যান তাদের কাছে কি খারাপ লাগে, অশান্তিলাগে? যাদের কাছে অশান্তি লাগে খারপা লাগে তারা তো সঠিক পথে নেই। এই সব বিষয় নিয়ে একটা শ্রেনী ফেইসবুকে উল্টা-পাল্টা কথা লিখে। কিন্ত আমার সামনে আসে না। এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে, চালউ তোলে মিথ্যা কথা বলে। আশেকে রাসুল দবি করে কিন্তু আমার সাথে দেখা করে না। আমি এগুলোকে বের করে দিয়েছি। কর্মদোষেই এরা দরবার থেকে বিতারিত। আমার মোর্শেদের দরবারাও আমি এমন দেখেছি কর্ম দোষের কারণে দরবার থেকে বের হয়ে গেছে। এইগুলো আল্লাহর শক্র, আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর শত্রু, আমাদের শত্রু। এরা বিপদগামী। এরা শয়তানের চেয়ে খারাপ। এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে। আমি আপনাদের কাছে আগেও বলেছি এরা বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আপনাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। সেই টাকা নিয়ে আত্মসাত করে। সুতরাং এগুলোকে প্রশ্রয় দিবেন না। এগুলো সকল নবী-রাসূল এর যুগে মানুষ শয়তান হিসেবে কাজ করেছে। এর াই মানুষ শয়তান। এরাই বিভ্রান্তি সৃস্টি করে। হযরত রাসুল (সঃ)-এর যুগে এমন মানুষ শয়তান ছিল।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, সমাজের একটা শ্রেনী বলে হযরত রাসুল (সঃ) ৭০ তালিওয়ালা জামা পড়তেন। এটা রাসুল (সঃ)-এর যুগে কিছু মানুষ শয়তান প্রচার করেছিল এখনো কিছু মানুষ শয়তান এটাই প্রচার করছে। আমি আপনাদের ভিডিও সিডির মাধ্যমে দেখিয়েছি রাসুল (সঃ) স্বর্ণের সিংহাসনে বসতেন। হযরত রাসূল (সঃ) কুলকায়েনাতের রহমত। রাসূল (সঃ) গরীব ছিলেন, ৭০ তালিওয়ালা জামা পড়তেন এগুলো মিথ্যা কথা। চক্রান্তকারী সবযুগে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এদের থেকে আপনারা সাবধান থাকবেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, ময়ময়সিংহের ত্রিশালের বাবে বরকতে আমি আমার শাশুড়ির রওজা শরীফ বানিয়েছি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নিয়েছি? আমার স্ত্রী রওজা আমি বানাবো আমি কি কারো কাছে টাকা পয়সা চেয়েছি। যারা আপনাদের কাছে রওজার নাম করে টাকা চায় তারা প্রতারক। আমি আপনাদের এই বিষয়গুলো বলার কারণ হলো ফেইসবুকে এই প্রতারক চক্র মিথ্যা অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে আপনারা এদের কথা বিশ্বাস করবেন না। আপনাদের সাবধান করছি আপনারা যাতে করে এদের ধোঁকায় না পড়েন, এদের মায়া কান্না দেখে। আপনি সিরাতুল মোস্তাকিমে আছেন, তাই আপনি সরল বিশ্বাসী। এরা আপনাদের দুর্বল স্থানে আঘাত করে প্রতারিত করতে চেষ্টা করবে আপনারা সতর্ক থাকেবেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আপনারা পূর্ণিমার চাঁদের অনুষ্ঠান করে শান্তি পান? আমরা শুকরিয়া আদায় করে দুই রাকতা নামাজ পড়ি। আমাদের নামে একটা বদনাম আছে আমারা মিলাদে কিয়ামের সময় দাঁড়িয়ে ‘ইয়া নবী সালামুআলাইকুর’ স্থলে মিলাদে ‘ইয়া ইমাম সালামুআলাইকা’ বলি। ঘটনা হলো কেউ এম এ পাশ করলে তাকে কেউ বলে কি- মেট্রিক পাশ অথবা আই এ পাশ? আল্লাহ রাসূল (সঃ)-কে প্রথমে নবী বলেছেন। এরপর রিসালাত যখন আসছে তখন রাসূল (সঃ)-কে বলেছেন- হে রাসুল। যখন তিনি ইমামুল মুরসালিন হলেন অর্থাৎ উনি যখন মেরাজে যান তখন সেখানে বায়তুল মোকাদ্দাসে তিনি সকল নবী-রাসুলদের ইমাম হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়িয়ে ছিলেন। ঐখান থেকে তিনি ‘ইমামুল মুরসালিন’। সকল নবী-রাসূলগণের ইমাম। আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূল (সঃ)-এর এটা সর্বশেষ র্যাংক। তখন আমরা বলেছি- ‘ইয়া ইমাম সালামুআলাইকা।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমি কোরআন দিয়েই প্রমান করেছি আল্লাহর আকার আছে। আমি তাফসীরে ‘সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ লিখেছি। কোরআনের আয়াত দিয়েই প্রমান করেছি আল্লাহর আকার আছে। এলমে তাসাউফ, এলমে মারেফত। সকল নবী-রাসুল গন এই বিদ্যাটা চর্চা করেই আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করেছেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) থেকে যে আমাদের ধর্ম এসেছে এটা আমরাও জানতাম না। এখন দেখছি সকল নবী-রাসুল গন এক সুতায় গাঁথা। মাদ্রাসায় তো আমিও পড়েছি কিন্তু সিলেবাসে যা আছে শুধু তাই পড়েছি। কোরআনের প্রতিটি আয়াতের গবেষণা করার সুযোগ আছে কি আমাদের। আমরা এখন তাফসীর লিখতে গিয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন বিষয়ের সম্মুখিন হচ্ছি।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, সবই তো বিজ্ঞান। এক বিজ্ঞান পড়ে ডাক্তার হলেন। আরেক বিজ্ঞান পড়ে ইঞ্জিনিয়ার হলেন। আরেক বিজ্ঞান পড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানী হলেন। তাসাউফের বিদ্যা দিয়ে সকল নবী-রাসূল গণ আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করেছেন। হযরত নূহ (আঃ) কিভাবে নৌকা বানাবেন আল্লাহ তা শিখিয়ে দিয়েছেন। হযরত দাউদ (আঃ) লোহাকে ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করেছেন। আল্লাহ তাদের কাছে বসে থেকে শিক্ষা দিয়েছেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের সমাজে প্রচলন আছ জিব্রাইল রাসুল (সঃ)-এর শিক্ষক। জিব্রাইল কি আদম (আঃ) সেজদা করেনি? তাহলে সে রাসূল এর শিক্ষক হলো কি করে? আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে রাসূল! আমি আপনাকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি।’ তাহলে হযরত রাসূল (সঃ)-কে জিব্রাইল কিভাবে কোরআন শিক্ষা দিলো? রাসুল (সঃ) বলেন, ‘আমি শিক্ষক রূপে প্রেরিত হয়েছি।’ যিনি শিক্ষক হিসাবে জন্ম হলেন তিনি কি করে জিব্রাইলের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। আমরা এই বিষয়গুলো তাফসীরে লিখছি। আপনারা তাফসীর পড়লে জানতে পারবেন। আমাদে জানা দরকার আল্লাহ কি বলেছেন এবং রাসুল কি বলেছেন। আগে আল্লাহ সম্পর্কে জানেন তারপর মানেন। না জেনে মানার কোন মূল্য নেই। আগে চেষ্টা করেন ক্বালব থেকে শয়তান তাড়াতে। হযরত ওমর (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর কাছে গিয়ে বলেন, ইয়া রাসূল্লালাহ! আমি নামাজে দাঁড়ালে দুনিয়ার কথা মনে আসে। তখন রাসূল (সঃ) তার বুকে হাত রাখলেন। এরপর বললেন এখন। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, এখন শুধু আমার নিজের কথা মনে আসে। রাসূল (সঃ) আবার তার বুকে হাত রাখলেন এবং এরপর জিজ্ঞাসা করলেন এখন। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূল্লালাহ (সঃ) এখন আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই মনে আসে না। এভাবেই আল্লাহর রাসূল (সঃ) তাসাউফের শিক্ষা দিয়েছেন।
সম্মানিত আশেকে রাসূলেরা, আমাদের তাফসীরটা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। এতে সব কথা পাবেন যা আগে কখানো শুনেননি। এগুলো আমাদের জানার প্রয়োজন আছে। জানেন তারপর পালন করেন। আমরা আসছি দরবারে ঈমানদার হওয়ার জন্য, মুনেন হওয়ার জন্য, আল্লাহকে পাওয়ার জন্য, হযরত রাসূল (সঃ)-কে পাওয়ার জন্য। আমি কতটুকু আল্লাহকে পেলাম, রাসূল (সঃ)-কে পেলাম, কতটুকু ঈমানদার হতে পারলাম এগুলো আমাদের চিন্তা করা দরকার। আমার মোর্শেদের দরবারে মোর্শেদের পর আমার স্থান ছিল। আমিই সেখানে সবক দিতাম। ১২ বছর কাজ করেছি। আমার আল্লাহ আমাকে দয়া করেছেন। এখনো যদি কেউ আমরা মোর্শেদের কথা এসে আমাকে বলে যে, উনি এই বিষয়ে এই কথা বলেছেন। আমি বলে দিব কোনটা উনার কথা আর কোনটা আপনি সংযোগ করেছেন। তরিকাটা হলো সহবতের । তরিকা কাছে থেকে শিখতে হয় তাহলে ভুল কম হয়। মানুষ শয়তান থেকে সাবধান থাকেন কারণ মানুষ শয়তানই মানুষকে বেশি বিপথগামী করে
আসুন মহান আল্লাহর সাহায্য চাই। তিনি যেন দয়া করেন আমাদের কবুল করে নেন। আমিন।
No comments:
Post a Comment