হাদিসে কুদসিতে এরশাদ
হয়েছে,
"লাওলাকা লামা খালাক্তুল
আফ্লাক।"
অর্থাৎ "(হে হাবিব!)
আমি আপনাকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি করতাম
না।" (সিররুল-আসসার,
পৃষ্ঠা-৭০)
কুরআনে আল্লাহ্ এরশাদ
করেন,
"ওআমা আরসালনাকা ইল্লা- রাহামাতাল্লিল
আলামিন।"
অর্থাৎ
"আমি আপনাকে জগত-
সমূহের রহমত
হিসাবে প্রেরণ করেছি।" (সূরা- আল
আম্বিয়া; আয়াত-
১০৭) "আলম" শব্দ'টি এক
বচন
এর বহু বচন হল
"আলামিন"। "আলম"
বলতে একটা পৃথিবী-
কে বুঝায় আর "আলামিন"
বলতে সমগ্র পৃথিবী-
কে বোঝায়।
আর আল্লাহ্ হযরত রাসুল (সাঃ)- কে বলেছেন, "
"ওআমা আরসালনাকা ইল্লা-
রাহামাতাল্লিল
আলামিন।"( "আমি আপনাকে সমগ্র
জগত-সমূহের রহমত
হিসাবে প্রেরণ করেছি।")
কুরআনে আল্লাহ্ ফরমান,
"আল
হামদুলিল্লাহি রাব্বিল
আলামিন।"
অর্থাৎ, "সকল প্রশংসা আল্লাহ্-
তাআলার যিনি জগত-
সমূহের প্রতি-পালক"।
(সূরা-আল ফাতিহা-১)
অর্থাৎ, আল্লাহ্ যেমন
একটা পৃথিবীর জন্য নয় সমগ্র সৃষ্টি জগতের
মালিক, তদ্রুপ রাসুল
(সাঃ)- হলেন
সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য
রহমত। অথচ অন্য
নবীদের কে শুধু মাত্র
পৃথিবী নামক গ্রহের
জন্য, তাও নির্দিষ্ট
সম্প্রদায়ের জন্য
পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু হযরত রাসুল(সাঃ)
সারা জাহানের জন্য
প্রেরিত হয়েছেন।
যা কপনাতেও ভাবা যায়
না তিনি কতো বর
মহামানব। আমদের মাথার সাধারণ ব্রেইন
দিয়ে কখনোই হযরত
রাসুল(সাঃ)-এর
মর্যাদা বিচার
করতে পারব না । হযরত
রাসুল(সাঃ) বলেছেন, "মহিমান্নিত
আল্লাহ্
সর্ব-প্রথম আমার নূর
সৃষ্টি করেছেন।"
(তাফসীরে-রুহুল বয়ান,
২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৭০) রাসুল(সাঃ) আরো বলেন,
"আদম যখন কাদা মাটি-
তে ছিল তখনও
আমি নবী ছিলাম"। -(আল-
হাদিস)
আমরা জানি সর্ব-প্রথম আল্লাহ্ আদম(আঃ)-
কে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন,
অথচ হযরত রাসুল(সাঃ)-
কে আদম
সৃষ্টির বহু
পূর্বে আল্লাহ- তাআলা সৃষ্টি করেছেন।
সুতরাং রাসুল(সাঃ)-
হলেন নূরের তৈরি,
যেহেতু আদম(আঃ)- ই প্রথম
যাকে আল্লাহ্
মাটি দিয়ে বানিয়েছেন। এর
আগে আল্লাহ্
মাটি দিয়ে কাওকে তৈরি করেননি।
তাই হযরত রাসুল(সাঃ)
বলেছেন,
"আমি আদম(আঃ)-এর সৃষ্টির ১৪- হাজার বৎসর পূর্ব
হতে আল্লাহ্র
সম্মুখে নূর-
হিসাবে অবস্থান
করেছিলাম।"
(তাফসীরে-রুহুল বয়ান, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৭০)
***তাই রাসুল(সাঃ) হলেন
নূরের*** রাসুল(সাঃ)- শুধু
উম্মতে মোহাম্মদীর
জন্যই শাফায়াত-
কারী নন, তিনি সকল নবী- রাসুলদেরও
শাফায়াত-
কারী এবং সাক্ষীদাতা।
রাসুল(সাঃ) কোন নবী-
রাসুলদের
অনুমতি না দিলে তারা তাদের নিজ উম্মতের জন্যও
শাফায়াত বা সুপারিশ
করতে পারবে না। তাই
কুরআনে এরশাদ
হয়েছে, "বিচার
দিবসে আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে তাদের
একজন (নবী) সাক্ষী দাড়
করব
এবং আপনাকে [রাসুল
(সাঃ)] আমি তাদের
সত্তায়নকারী সাক্ষী হিসাবে আনয়ন করব।" (সুরা-আল নামল;
আয়াত-৮৯) তাই
চিন্তা করে দেখুন,
আমাদের দয়াল রাসুল
(সাঃ)-এর সম্মান-
মর্যাদা কতো বেশি। হযরত রাসুল(সাঃ)
ফরমান, আল্লাহ্-
তাআলা সর্ব-প্রথম আমার
নূর সৃষ্টি করেছেন,
আমি আল্লাহ্র নূর
থেকে আর সমগ্র সৃষ্টি - রাজি আমার নূর থেকে।"
তাইতো আল্লাহ্
হাদিসে কুদসিতে বলেছেন,
"আমি আমার
চেহারা মুবারকের নূর
দ্বারা হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-কে সৃষ্টি করেছি।"
(সিররুল-আসসার, পৃষ্ঠা-৩)
আমাদের নবীজির
মর্যাদা কতো বেশি,
রাসুল(সাঃ)- আল্লাহ্র
কতো প্রিয়...... আল্লাহ্ বলেন, "হে রাসুল
(সাঃ)! নিশ্চয়ই
যারা আপনার
কাছে বায়াত গ্রহণ
করেছে, তারা আল্লাহ্র-
ই কাছে বায়াত গ্রহণ করেছে। তাদের
হাতের উপর
রয়েছে আল্লাহ্র হাত।
(অথচ সাহাবায়ে-
কেরাম দেখেছেন
তাদের হাতের উপর রয়েছে রাসুল(সাঃ)-এর
হাত) ।" (সূরা- আল
ফাতাহ-৪৮;
আয়াত-১০) আল্লাহ্
অরো বলেন,
"হে মাহবুব(সাঃ)! আপনি বদরের
যুদ্ধে যে কঙ্কর নিক্ষেপ
করেছেন,
তা আপনি নিক্ষেপ
করেননি; বরং আল্লাহ্
নিজেই নিক্ষেপ করেছেন।" (অথচ
সাহাবায়ে- কেরাম
দেখেছেন রাসুল(সাঃ)
বালি নিক্ষেপ করেছেন)
(সূরা- আল আনফল;
আয়াত-১৭) তাই দেখা যায় রাসুল
(সাঃ)-এর হাতই ছিল
আল্লাহ্র হাত।
তিনি যুগে যুগে এই
পৃথিবীতে আগমন
করে মানব- জাতিকে উদ্ধার
করে থাকেন। আর তাই
রাসুল(সাঃ)-হলেন
"হায়াতুন্নবি"........
ইবনে আব্বাস (রাঃ)-
হতে বর্ণিত। তিনি ফরমান, " হযরত
রাসুল(সাঃ)
নবীগণের পৃষ্ঠ-
দেশে বার বার জগতের
বুকে তাসরিফ গ্রহণ
করেছেন, পরিশেষে তিনি স্বীয়-
মাতা আমিনা(আঃ)-এর
কোলে তাশরিফ গ্রহণ
করেন।" (তাফসীরে-
দুররে মানসুর- ১৯ত্ম
খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩২) তিনি যে সকল নবীগণের
সাথে ছিলেন তা আয়াত
দ্বারাই বোঝা যায়।
হযরত রাসুল(সাঃ) বলেন,
"আমি আদম সন্তানদের
প্রত্যেক যুগের উত্তম শ্রেণীতে প্রেরিত
হয়েছি; অতঃপর ওই
যুগে প্রেরিত
হয়েছি যে যুগে আমি বর্তমানে আছি।" (বুখারি শরীফ
১ম খণ্ড,
পৃষ্ঠা-৫০৩; মেশকাত- শরীফ-এর ৫১১পৃষ্ঠা,;
মুসনাদে-আহমদ ৯ম খণ্ড,
পৃষ্ঠা-২৫ & ২৬;
তাফসীরে মাজারি ১ম
খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৩৪) হযরত
রাসুল(সাঃ)- যে সব নবীর মাঝে ছিলেন,
তিনি যে নূরের
এবং আদম(আঃ) থেকে শুরু
করে এক লাখ ২৪-হাজার
নবি-
রাসুলদের সবার মাঝে যে তিনি ছিলেন
তা কুরআনের পরিষ্কার
দলিল-প্রমান
পাওয়া যায়। রাসুল
(সাঃ) যে সব নবীর
মাঝে ছিলেন এবং তিনি সব কিছু
প্রত্যক্ষ করেছেন
তা আল্লাহ্ "আলাম-তারা"
শব্দ টি দ্বারা প্রকাশ
করেছেন। আল্লাহ্
পবিত্র কুরআনে বলেছেন,
"আলামতারা কাইফাফা আলা রাব্বুকা..........."
অর্থাৎ,
আপনি কি দেখেন নাই
আমি কিভাবে "আদ-সামুদ"
জাতি-কে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। এই
ঘটনা রাসুল(সাঃ)-এর
জন্মের
বহু আগের ঘটনা। রাসুল
(সাঃ)
যদি সেখানে উপস্থিত না থাকতেন,
তাহলে কিভাবে আল্লাহ্
বলেন
"আপনি কি দেখেন নাই" ।
আর এই "আলামতারা" অর্থ
"আপনি কি দেখেন নাই"। যখন আল্লাহ্ নবীদের
ঘটনা বর্ণনা করছিলেন
তখন
রাসুল(সাঃ)-কে উদ্দেশ্য
করে "আলামতারা"
অর্থাৎ, "আপনি কি দেখেন নাই"
শব্দটি ব্যবহার
করেছেন।
(বিঃদ্রঃ- কুরআনে ৩১-
বার আল্লাহ্
"আলামতারা" অর্থাৎ, "আপনি কি দেখেন নাই"
শব্দটি ব্যবহার
করেছেন) এতে স্পষ্ট
বোঝা যায়
হযরত রাসুল(সাঃ)-সকল
যুগে সকল নবি-রাসুলদের মাঝে ছিলেন, আছেন
এবং থাকবেন।
তাইতো তিনি বলেছেন,
"আমি আদম সন্তানদের
প্রত্যেক যুগের উত্তম
শ্রেণীতে প্রেরিত হয়েছি; অতঃপর ওই
যুগে প্রেরিত
হয়েছি যে যুগে আমি বর্তমানে আছি।"
তাই রাসুল(সাঃ)-হলেন
সৃষ্টি-জগতের
সর্বকালের, সর্ব-শ্রেষ্ঠ মহা-মানব...... ****রাসুল
পাক (সাঃ)-
যে সর্বকালের, সর্ব-
শ্রেষ্ঠ মহা-মানব
তা খ্রিস্টান-
বিধর্মীরা পর্যন্ত অকপটে স্বীকার
করতে বাধ্য
হয়েছেন। খ্রিস্টান ও
পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি:
প্রখ্যাত ইংরেজ
বৈজ্ঞানিক মি. এডওয়ার্ড টিম্বার
প্রৃথিবীর
মহাপুরুষগণের
মধ্যে শ্রেষ্ঠ ১৭ জন
মহাপুরুষের
নাম the faith and Favour পুস্তকে লিপিবদ্ধ
করেছেন।
তন্মধ্যে প্রিয় নবিজীর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর নাম প্রথমে স্থান পেয়াছে। নোবেল
বিজয়ী চিন্তাবিদ
প্রখ্যাত সাহিত্যিক
জর্জ বার্নার্ডশ
রাখঢাক না করেই
বলে গিয়েছেন, বিশ্ববাসী!
যদি তোমরা নিজেদের
সমস্যা সমাধান
করতে চাও
এবং সর্বাঙ্গীন সুন্দর
জীবন ব্যবস্থা কামনা করো,
তবে বিশ্ব-সংসারের
নিয়ন্ত্রন ভার
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর হাতে ছেড়ে দাও।
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক
জোসেফ হেল বলেন,
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এমনই একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন,
যাকে না হলে বিশ্ব
অসম্পুর্ন
থেকে যেতো।
তিনি নিজেই নিজের
তুলনা। তাঁর কৃতিত্বময় ইতিহাস মানব জাতির
ইতিহাসে এক সমুজ্জল
অধ্যায়
রচনা করেছে।
আমেরিকার
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে র
ইহুদী প্রফেসর জুল
ম্যাসারমান
বলতে বাধ্য হয়েছেন
যে,
সর্বকালের সর্বশ্র্রেষ্ঠ অনুসরনীয়
ও অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব
হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম।