Saturday, December 19, 2020

ওয়াহাবী বনাম ইসলাম ও কারেন্সীওয়ার পঞ্চম পর্ব

১৯১০ সাল, জেকিল আইল্যান্ড, জর্জিয়া আমেরিকা।

 বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী ৭ জন মানুষের ছোট একটি গ্রুপ গোপন সভায় একত্রিত হয়েছে।

এই সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে পরে পুরো পৃথিবীর নিয়ন্ত্রন এই ৭ জন মানুষের হাতে বন্দী হয়ে যাবে। 

যারা এখনো এই পৃথিবীর ভাগ্যনিয়ন্তা। এই দ্বীপটির মালিক নিউ ইয়র্কের কয়েকজন বিলিয়নিয়ার, যাদের ভিতর আছে জেপি মরগ্যান, রকফেলার, রথচাইল্ড পরিবার। এই দ্বীপটিকে বলা হত সোশাল ক্লাব। 

শীতের সময় এই বিলিয়নাররা এখানে সময় কাটাতে আসত। ক্লাবটি এখনো আছে এবং এর দরজার উপর লেখা আছে. “In this room the federal reserve system was created” । কারা ছিল এই ৭ জন ? প্রথম জন ছিল রিপাবলিকান সিনেটর Nelson Aldrich, chairman of the national monetary commission and business associate of JP Morgan, সে আমেরিকার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট Nelson Aldrich Rockfeller এর দাদা।

দ্বিতীয় জন ছিল Abraham Andrew, Assistant secretary of the Treasury. পরে সে কংগ্রেসম্যান হয়েছিল।

তৃতীয় জন ছিল Frank Vanderlip যে ছিল আমরিকার সবথেকে বড় Banking netweork New York City Bank এর প্রেসিডেন্ট।

চতুর্থ জন ছিল Henry Davison, senior partner of JP Morgan ।

পঞ্চম জন ছিল Charles Norton যে ছিল নিউ ইয়র্কের প্রথম ন্যাশনাল ব্যাংক প্রেসিডেন্ট।

৬ষ্ঠ জন ছিল. Benjamin Strong যে ছিল Head of the JP Morgan Bnakers Trust Company । যে তিন বছর পর Federal reserve system এর প্রধান নিযুক্ত হন।

৭ম জন ছিল Paul Warburg এবং সেইই ছিল এদের ভিতর সবথেকে গুরুত্বপুর্ন ব্যাক্তি। Germany তে জন্ম নেয়া এই আমেরিকান ছিল ইউরোপের রথচাইল্ডে ব্যাংকিং সাম্রাজ্যের রিপ্রেজেন্টিটিভ।

মজার ব্যাপার হল এই সাত কুখ্যাত মহারথি একজন আরেকজনের চরম প্রতিদ্বন্দী ছিল কিন্তু আরো অধিকতর ফায়দার জন্য এরা একসাথে হয়েছিল। তাঁরা একটি বিল তৈরী করেছিল যেটা ফেডারেল রিজার্ভ এক্ট নামে পরিচিত এবং সেই এক্ট অনুযায়ী এই ৭ জন আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার। এ বিষয়ে তৃতীয় পর্বে আলোচনা করেছিলাম। 

এই বিল পাশ করা হয় ১৯১৩ সালে এবং President widroow Wilson এই বিল পাশ করেন। তিনি কেন এরকম অসংবিধানিক বিল পাশ করলেন সেটা খুজতে গিয়ে দেখা যায়।

 তিনি বিবাহ বহির্ভুত পরকিয়ায় জড়িত ছিলেন তারই অধিনস্ত এক প্রফেসরের বউ এর সাথে যখন তিনি Prinston University র প্রফেসর ছিলেন। উনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার কয়েকদিন পর তাঁর অফিসে একটি ল ফার্ম থেকে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর সাথে দেখা করতে যায়। আসলে তাঁরা ছিল রথচাইল্ডেরই পোষা গোয়েন্দা। তাঁরা ছিল Samuel Untermayer, Guggenheim এবং Marshall । তাঁরা উইলসনের কাছে ওই পরকিয়ার কথা ফাঁস করার হুমকি দিয়ে তাঁর কাছে ৪০,০০০ ডলার দাবি করে।

উইলসন বেকায়দায় পড়ে যায় কারন তাঁর কাছে অত টাকা ছিল না। তখন Samuel Untermayer নিজে থেকে এই টাকা তাঁর পকেট থেকে দিয়ে দেয় একটা শর্তে আর সেটা হল যখন আমেরকান সুপ্রীম কোর্ট প্রধানের পদ খালি হবে তখন যে উইলসন তাঁকে মনোনীত করে। এবং এবছরই মানে ১৯১৩ সালে Federal Reserve Bank প্রতিষ্ঠা করে তাঁরা এবং বিলটি কংগ্রেসে পাশ করা হয়। এবং এর মাধ্যমে বিশ্বের সবথেকে ভয়ংকর ক্রাইম সিন্ডিকেটকে আইনত বৈধতা দেয়া হয়।

 প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি কোন ধরনের অডিট করা হয়নি অথবা কোন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। না এটা কোন ফেডারেল না এর কোন রিজার্ভ আছে। এর সাথে রথচাইল্ডের আরেকটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান আছে SWIFT, তাঁরা এটাকে International Gateway হিসাবে ব্যবহার করে। 

পৃথিবীর সবগুলো দেশকে এই SWIFT এর মাধ্যমে ডলারে আন্তর্জাতিক ব্যবসা করতে হয়। এটা পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যা একচেটিয়া মনোপলি। SWIFT ছাড়া কেউ পেমেন্ট করতে পারবে না আবার ডলার ছাড়া পেমেন্ট করা যাবেনা। কেন করা যায়না সে বিষয়ে পরে আসব। এই SWIFT হ্যাক করেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করা হয় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে। এবং এর সম্পুর্ন দায়ভার SWIFT এর হলেও তাঁরা দায় নিতে নারাজ। অথচ বাংলাদেশের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ফেডারেল ব্যাংকে জমা আছে। কোন কারনে যদি সেগুলো লক করে দেয় তাহলে কিছুই করার নেই বাংলাদেশের । যেমন সব রকম চেষ্টা করেও এই চুরি যাওয়া টাকা বাংলাদেশ সরকার উদ্ধার করতে পারছেনা তাঁদের কাছ থেকে। SWIFT কে ব্যবহার করে তাঁরা যখন ইচ্ছা যাকে ইচ্ছা তাঁর উপর বাণিজ্যি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। তাঁদের কাছে সারা বিশ্বই এভাবে বন্দী।

২০০০ সাল । পৃথিবীর ৮ টি দেশে রথচাইল্ডের প্রাইভেট ব্যাংক সিস্টেমের বাইরে ছিল। দেশগুলো হল, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান, সুদান, কিউবা এবং উত্তর কোরিয়া। 

ইরান, কিউবা এবং উত্তর কোরিয়া বাদে বাকি দেশগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর মানুষ মনে করে এই সব দেশে আমেরিকা হামলা করেছে সন্ত্রাসী মারার অথবা গণতন্ত্র ঢোকানোর জন্য, কারন মিডিয়াতে এই কথাগুলোই প্রচার করা হয়েছে আর মাইন্ড কন্ট্রোলের শিকার সাধারন বিশ্ববাসী তাই গিলেছে। 

আসল বিষয় হল তাঁরা রথচাইল্ডের এই সিস্টেমের কাছে মাথানত করছিল না । গাদ্দাফী এবং সাদ্দাম বিপুল পরিমান সোনা মজুত করেছিল একটি সুন্নাহ কারেন্সী চালু করবে বলে। গাদ্দাফীকে বলা হত আফ্রিকানদের রাজা। 

সে চেয়েছিল আফ্রিকান দেশগুলি নিয়ে একটি আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করবে যার একটাই কারেন্সী হবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যেরকমভাবে একক মুদ্রা ইউরো ব্যবহার করে সেরকম কিন্তু পার্থক্য হল এই কারেন্সী হবে সোনা। আপনারা বোধহয় জানেন না লিবিয়ার পরিস্থিতি কি ছিল গাদ্দাফি বেচে থাকা অবস্থায়।

 লিবিয়ানদের মাথাপিছু আয় ছিল ১২,০০০ হাজার ডলার। চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা ছিল ফ্রী। তেল,গ্যাস থেকে সরকার যা আয় করত তাঁর একটা অংশ সব লিবিয়ানদের একাউন্টে স্বয়ংক্রিয় ভাবে পৌছে যেত।

উচ্চশিক্ষার জন্য কেউ বিদেশে পড়াশোনা করতে গেলে তাঁর সমস্ত খরচ বহন করত সরকার। ১৪৩ টন সোনা এবং এরং এর কাছাকাছি পরিমান রুপা মজুদ ছিল। আর এখন সেখানকার মানুষ পালাচ্ছে নৌকায় করে আর পালাতে গিয়ে ডুবে মরছে। দাস ব্যাবসা চলছে খোলা বাজারে। 

ইরাক ধ্বংস করে ১৫০ টন সোনা লুট করেছে তাঁরা। মাত্র ৩৬ ঘন্টার ভিতরে ইরাক মিউজিয়াম থেকে ১৫ হাজার পুরাতন মহামূল্যবান আর্টিফ্যাক্ট চুরি হয়েছিল ।

যে উর শহরে নবী ইবরাহীম আ: এর জন্ম এবং BAAL এর প্রথম মন্দির স্থাপিত হয়েছিল তা দীর্ঘ কয়েক বছর আমেরিকান সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছিল। এখনো তাঁরা সেখানে অবস্থান করছে কিনা জানা নেই। আফগানিস্থান এখন বিশ্বের সবথেকে বেশী হেরোইন উৎপাদন করে এবং সেটা নিয়ন্ত্রন করে সিআইএ এবং হেরোইন বিক্রির বিপুল পরিমান টাকা তাঁরা খরচ করে বিভিন্ন দেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন, বিভিন্ন জিহাদী গোষ্ঠীর পিছনে। 

সারা বিশ্বের বেশীরভাগ মানবাধিকার এবং এনজিও গুলো প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে এদের টাকাতেই চলে। যখন কোন দেশকে এরা Target করে তখন দেখবেন Amnesty International এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো ওই সব দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিষয়ে বড় বড় লেকচার দেয় এবং সেগুলো মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার করে। এনজিওগুলোকে দিয়ে তাঁরা সরকার বিরোধী আন্দোলনকে উস্কে দেয় এবং ফান্ডিং করে।

 তাঁরপর সেই মানবাধিকারের ধুয়া তুলে এরা ওইসব দেশের সরকারগুলোকে কোনঠাসা করে ফেলে কিন্তু এরা ইসরাইল এবং সৌদী আরবের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে এক লাইন খরচ করবেনা । সিরিয়াতে এরকমই একটি লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন তাঁরা তৈরী করে ভিতরে ঢুকিয়েছিল যারা আসলে ছিল সালাফি ওয়াহাবী জঙ্গী, এদের নাম দিয়েছিল হোয়াইট হেলমেট। এদের দিয়ে গ্যাস বোমা হামলা করে আবার দোষ দিয়েছিল আসাদকে । 

৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে পেন্টাগন একটি বৃটিশ পিআর কোম্পানী Bell Potingger কে ভাড়া করেছিল। যাদের কাজ ছিল গ্যাস হামলায় আহতদের নাটক শুটিং করা, গাড়ী বোমা হামলার নাটক শুটিং করা এবং বিভিন্ন ফলস ফ্লাগ অপারেশনের নাটক বানিয়ে সেগুলো বিশ্বমিডিয়ায় অথেনটিক সোর্স এর ব্যানারে প্রচারের ব্যবস্থা করা। 

সুদানে গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে এখন দুইভাগে বিভক্ত করেছে। এবং সুদানকে সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে কালো তালিকায় ফেলে দিয়েছিল এবং শেষমেষ এখন সেই তালিকা থেকে সুদানের নাম মুছে দেয়া হল যখন সুদান ইসরায়েলের সাথে আরব ওয়াহাবী দেশগুলোর মত সম্পর্ক স্বাভাবিককরনের চুক্তি করতে বাধ্য হলো ।

যেসব বাংলাদেশী বিদেশে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের মানবাধিকার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে সরকারবিরোধী প্রোপাগান্ডায় যুক্ত এরা সবাই হোয়াইট হেলমেটের মত একই গোয়ালের গরু। সব রসুনের গোড়াই হল এক। 

গাদ্দাফি এত সুযোগ সুবিধা দেয়ার পরেও কিন্তু হিলারী আর ন্যাটো বেঈমান লিবিয়ানদেরকেই কাজে লাগিয়েছিল গাদ্দাফিকে ফেলতে। । জিয়নিষ্টদের আরেকটি গোপন অস্ত্র হল তথাকথিত ইসলামী (ওয়াহাবী) দলগুলো। এদের ইতিহাস না জানলে আপনি ঘরের শত্রুদের চিনতে পারবেন না।

 আর ঘরের শত্রুদের চিনে আপনি যদি এদের নিকেষ না করতে পারেন তাহলে আপনি বাইরের অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবেন না। পাকিস্তানীরা আমাদের অতটা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারত না কিংবা আমাদের দেশে ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী জেনোসাইড হত না যদি না আমাদের নিজেদের লোক জড়িত না থাকত। 

এবার আসুন এদের আসল হাকিকতটা একটু পরখ করে নেই। তাঁরা যেমন জুডাইজমকে তালমুদ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করেছিল তেমনি মুসলিম এবং হিন্দুদেরকেও তাঁরা পথভ্রষ্ট করেছে রীতিমত বিপুল পরিমান টাকা এবং সময় নিয়ে গবেষনা করে।

পাছার দুই ভাগ এর মত এই উপমহাদেশের ৯০ % মানুষ ( মুর্খ) হিন্দু -মুসলমান দুই ভাগে বিভক্ত। ঠিক পাছার মতই চলতে ফিরতে বারবার ঘষাঘষি। এই ৯০% মুর্খদের ভিতর কিন্তু পিএইচডি করা শিক্ষিত, তারকা মহাতারকারাও আছে। তাঁরাও একটা পর্যায়ে আসলে নিরেট মুর্খ ছাড়া কিছু না। 

এদের বেশিরভাগই উত্তরাধীকার সুত্রে হিন্দু অথবা মুসলমান। তারমানে এদের ধর্ম জ্ঞান কম। যাদের আছে তাঁরাও অল্প বিদ্যায় ভয়ংকরী, মানে তাঁরা আরো বেশী ক্ষতরনক। বৃটিশ জিয়নিষ্টদের সহায়তায় তৈরী এই দুই অংশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল হিন্দু সংঘ বা RSS- বিজেপি এবং জামায়াত ইসলাম একই বৃন্তের দুটি ফুল।  একইরকম উগ্র সাম্প্রদায়িক, লেভেল একই বৈশিষ্ট একই চিন্তারধারার, শুধু নাম আর লেবাস আলাদা। ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে এরা হল দানব।  উদহারন দিচ্ছি।


১৯২৫ সালে যখন হিটলারের মেইনক্যাম্প বই বের হয় তখন সাভারকর এই বই পড়ে মুগ্ধ হয়ে আরএসএস এর গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় এবং আন্দামানে জেলে থাকা অবস্থায় বৃটিশ সরকারের কাছে মার্সি পিটিশন দাখিল করে। এবং সেখানে সে অঙ্গিকার করে যে সে বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনকিছুই করবে না এবং তাঁর অনুসারীরাও তাঁকেই অনুসরন করবে এক্ষেত্রে। বৃটিশ সরকার তাঁকে মুক্তি দিয়ে অফিস সহকারের চাকরী দেয় এবং দল চালানোর জন্য মাসিক ৬০ টাকা ভাতাও ঠিক করে দেয়। যেখানে ভগত সিং, শের খাঁন রা হাসিমুখে ফাঁসি নিয়েছে সেখানে সাভারকর স্বাধীনতার বিপক্ষে সরাসরি অংশ নিয়েছে। সবাই জানে আরএসএস স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। কাকতালীয় (? )ভাবে একই রকম ভাবে জামাতে ইসলামও পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধীতা করেছিল। মুসলীম লীগ এবং জিন্নাহ কে হেন গালাগালি নেই যে তাঁরা করেনি। আর ৭১ এ তাঁদের ভুমিকাও ছিল বাংলাদেশ সৃষ্টির বিপক্ষে এবং ইতিহাসের সবথেকে জঘন্যতম ৫ টি জেনাসাইডের সরাসরি সাথী ছিল তাঁরা। এথেকে একটি জিনিস প্রমানিত সত্য যে, তাঁরা দেশের জনগনের ইচ্ছা আকাঙ্খাকে কখনো সম্মান তো করেইনি বরং সবসময়ই তাঁরা বিদেশী প্রভুদের কথা অনুযায়ী চলেছে এবং এখনো চলছে এবং যতদিন এই দল এবং এই দলের লোকরা জীবিত থাকবে ততদিন তাঁরা একইরকম থাকবে। কারন এদের সৃষ্টিই করা হয়েছে এইভাবে। ৪৭ এও তাঁরা এটা করেছে ৭১ এও তাঁরা এটা করেছে। মাওলানা মাওদুদী এবং মাওলানা নোমান এবং আরও একজন নাম মনে করতে পারছিনা জামাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে। মাওলানা মাওদুদী ওয়াহাবী চিন্তাধারার একজন ছিলেন এবং তাঁর বাগ্মীতা মুগ্ধ করত মানুষকে। তিনি খুব দ্রুত মুসলিমদের ভিতর জনপ্রিয়তা পেয়ে যান এবং দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন। কারন বৃটিশ আমলে মুসলিমদের অবস্থা ছিল শোচনীয় তাই মুসলিমরা একজন নেতা খুজছিল যার উপর ভরসা বাখা যায়। তাঁরা তিনজন একটি পত্রিকা চালাতেন আর সেই পত্রিকাই হয়ে ওঠে তাঁদের মতবাদ প্রচারের হাতিয়ার। পরে মাওলানা নোমানের সাথে মাওদুদীর মতভিন্নতা দেখা যায়, এবং ধীরে ধীরে সেটা বাড়তে থাকে। ইসলামের অনেক কিছুই মনগড়া ব্যাখ্যা দিতে থাকেন মাওদুদী এবং সেটা নিয়েই নোমানের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। মাওলানা নোমান অনেক ভাবে তাঁকে বোঝাতে ব্যর্থ হন। এমনকি মাওদুদী তাঁকে বলেন যে, দুনিয়াতে রাসুল (সা:) এর পরে ১৪০০ বছরের ভিতর একমাত্র সেই কোরআন কে ঠিক ঠাক ভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাঁর এই কথা শুনে নোমান হাল ছেড়ে দেন এবং দুরে সরে আসেন। নোমান তাঁর বই তে লিখেছেন আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমরা জামায়াতে ইসলাম নামের একটা দানব সৃষ্টি করে ফেলেছি এবং তা ধ্বংস করার উপায় আমার জানা নেই। কারণ মাওদুদী ইতিমধ্যেই অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে এবং মানুষ তাঁর পান্ডিত্যে মুগ্ধ। নোমান শুধু হতাশ না ধীরে ধীরে অপরাধবোধে অসুস্থ হয়ে পড়েন। লেখালেখি বন্ধ করে দেন। এবং এতটাই মুষড়ে পড়েন যে বিছানাগত হয়ে যান এবং কয়েক বছর পর মারা যান।

হিন্দু আরএসএস এর মতই জামাতে ইসলামীও বৃটিশদের সাহায্য সহযোগীতা পেয়েছিল কিন্তু সাভারকরের মত খুল্লামখুল্লাহ না বরং গোপনে।

এবার দেখা যাক কেন জিয়নিষ্ট বৃটিশরা এই দুইটি দলকে সাহায্য করেছিল এবং কি উদ্দেশ্যে । এবং এটা শুনি একজন বৃটিশ স্পাই মি: হেমফারের এর আত্মকাহিনীতে। তিনি তাঁর বই " কনফেশন অফ এ বৃটিশ স্পাই এনিমিটি এগেইনষ্ট ইসলাম" লিখেছেন,

Hempher says:

Our Great Britain is very vast. The sun rises over its seas, and sets, again, below its seas. Our State is relatively weak yet in its colonies in India, China and Middle East. These countries are not entirely under our domination. However, we have been carrying on a very active and successful policy in these places. We shall be in full possession of all of them very soon. Two things are of importance:

1- To try to retain the places we have already obtained;

2- To try to take possession of those places we have not obtained yet.

The Ministry of Colonies assigned a commission from each of the colonies for the execution of these two tasks. As soon as I entered the Ministry of Colonies, the Minister put his trust in me and appointed me the administrator of the company of East India. Outwardly it was a company of trade. But its real task was to search for ways of taking control of the very vast lands of India.

বাকিটা বাংলায় লিখছি: আমরা ভারতের ব্যাপারে চিন্তিতি ছিলাম না। কারন তারা বহু ভাষায়, বহু জাতিতে এবং বহু ধর্ম চিন্তায়, আচার আচরনে বিভক্ত ছিল। চীনের ব্যাপারেও চিন্তিত ছিলাম না কারন তাদের ধর্ম বুদ্ধইজম এবং কনফুসিয়াসিজম একরকম বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁদের জীবনযাপনে এসবের রেশ ছিলনা। যার কারনে এই দুই দেশের মানুষের ভিতর কোনধরনের দেশাত্মবোধ ধারনা ছিলনা এবং তাঁরা বৃটিশদের হুমকি বলেও মনে করত না। এবং ভবিষ্যৎ এ তাঁরা যাতে হুমকি না হয়ে দাঁড়ায় সেকারনে আমরা পরিকল্পনা করে তাঁদের ভিতর ভেদাভেদ, কুসংস্কার, তাদের শিক্ষা, গরীবি এমনকি রোগ ছড়িয়ে দিলাম। এবং তাঁদের সংস্কৃতি ( এই বিষয়টা মাথায় রাখবেন, পরে এ বিষয়ে আসব) বদলে দিলাম যাতে আমরা দীর্ঘ সময় সেখানে রাজত্ব করতে পারি।

কিন্তু আমরা টেনশনে পড়লাম মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে। মুসলিমরা অত্যন্ত ধর্মপরায়ন এবং একজন সাধারন ব্যক্তিও ইসলামকে এতটাই মেনে চলে যেমনভাবে একজন খৃষ্টান যাজক খৃষ্টান ধর্ম মেনে চলে। তাঁর মরে যাবে তবুও সেটা ছাড়বে না। এবং এদের ভিতর সবথেকে ভয়াবহ হল ইরানের শিয়া রা। এরা তো নিজেদের ছাড়া কাউকে এক পয়সা দাম দেয়না। তো আমরা সুন্নীদের কাছে গেলাম আগে"

যাই হোক লেখা বড় হয়ে যাবে বলে হুবহু লিখছি না, মুল কথাটা হল তাঁরা সুন্নীদের ভিতর ওয়াহাবী ধারাটা কৌশলে ঢুকিয়ে দেয় এবং এই হেমফার নিজেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং পাচ ওয়াক্ত নামায কোরআন সবই শেখে উপরে উপরে। কেউ কোনদিনই টের পায়নি যে সে আসলে জিয়নিষ্ট স্পাই। তাঁদের ৬ জনকে আরবে গোয়েন্দাগীরির করতে পাঠানো হলেও দুজন বাদে বাকিরা নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। হেমফারের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী সুন্নীরা বিভিন্ন স্কলারদের বই পত্র এবং স্কলারদের অনুসরন করত কিন্তু শিয়ারা তাঁদের ইমাম ছাড়া কাউকে পরোয়া করত না। তাঁদের ইমাম যা বলবে তাই তাঁরা মানবে। একজন ইমাম মারা গেলে তাঁরা ওই ব্লাড লাইনের আরেকজন ইমামকে স্থলাভিষিক্ত করত। কিন্তু সুন্নিদের ভিতর এ চল ছিলনা যে কারনে সুন্নীদের ভিতর ঢোকা শিয়াদের থেকে সহজ।

ওয়াহাবী ধারাটা কোথা থেকে এল সেটা আপনাদের জানা লাগবে নাহলে এই বিষয়টা পরিপূর্ন হবে না। তাঁর আগে রাসুল সা: একটি হাদিস উল্লেখ করা প্রয়োজন।

সহিহ বুখারীর ৭০৯৪ নং হাদিস । এটা নজদী হাদিস নামেও পরিচিত। গুগলে hadith of Najd লিখে search দিলে পেয়ে যাবেন। যাই হোক হাদিসটি হল এরকম, একদা রাসুল সা: কে ঘিরে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত কিছু মুসলিম বিভিন্ন বিষয়ে অবগত হচ্ছিল। এর ভিতর তাঁরা রাসুল সা: কে ইয়েমেনের জন্য শাম বা সিরিয়ার জন্য এবং নজদের জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করলে রাসুল সা: ইয়েমেন এবং সিরিয়ার জন্য দোয়া করলেন কিন্তু নজদের ব্যাপারে চুপ থাকলেন। নজদের এক লোক আবার নজদের জন্য দোয়া চাইলে রাসুল সা: আবার ইয়েমেন এবং শাম বা সিরিয়ার জন্য দোয়া করলেন কিন্তু নজদের কথা উল্লেখ করলেন না। নজদের লোকটি তৃতীয় বারের মত দোয়া চাইলে রাসুল সা: বললেন. সেখান থেকে ভুমিকম্প এবং ফেতনার উদয় হবে এবং সেখান থেকে শয়তানের শিং এর উদয় হবে।“

এই নজদ হলো এখনকার রিয়াদ আর এখানেই ওয়াহাবী মতবাদের গুরু আব্দুল ওহাব নজদীর জন্ম।

অনেকে মনে করেন আব্দুল ওয়াহাব নজদীকেই হাদিসে উল্লেখিত শয়তানের শিং হিসেবে ইঙ্গিত করেছিলেন রাসুল সা: । এই ঘৃণিত ব্যক্তিটি প্রথম প্রতিষ্ঠিত মুসলিম খেলাফতের ১১০০বছর পর ইসলামের মুল কাঠামোতে প্রবল ঝাকুনি দেয়। সে সমগ্র আরব ভূখণ্ডে তোলপাড় ও ফেতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। সে ইবনে তাইমিয়ার ছাত্র ছিল কিন্তু ইসলামের আক্বীদা বিষয়ে তাঁর উদ্ভট মতবাদের কারনে তাঁর আপন বড় ভাই বিখ্যাত সুন্নী আলেম শায়খ সুলাইমান ইবনে আব্দুল ওহাব তাঁর ছোট ভাই কে বলেন, “রাসুল সা: হাদিসে যে শয়তানের শিং এর কথা উল্লেখ করেছেন সেটা হলে তুমি।“ ( সাওয়াক্কিল ইলাহিয়া )

সুন্নীমতালম্বী আলেমদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আব্দুল ওহাব নজদী সৌদ বংশের নজরে আসে এবং সৌদরা তাঁকে আশ্রয় এবং তাঁকে সবধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দান করে এবং সৌদ দের নেতা নিজ মেয়ের সাথে আব্দুল ওহাবের সাথে বিয়ে দেয়।

তার মতবাদগুলো ছিলঃ

১ / প্রিয় নবীজী (সঃ) এর রওজা শরীফ জিয়ারত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যে ব্যক্তি এই নিষেধ অমান্য করবে, তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। তার হুকুম অমান্য করায় লোক মারফত জিয়ারতকারীর মাথা ও দাড়ি মুড়ায়ে দেয়।।

২/ আযানের মধ্যে মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বাক্য উচ্চারণ করা যেনার অপেক্ষা বড় অপরাধ। তার বাসস্থান সংলগ্ন এক মসজিদ থেকে আযানের সময়

 উক্ত বাক্য উচ্চারণের কারনে মুয়াজ্জীনকে ধরে এনে প্রকাশ্যে তার শিরোচ্ছেদ করা হয়।

৩/ কোরআন বুঝার জন্য কোন তাফসীর কিতাবের প্রয়োজন নাই,, যে যার মতো কুরআনের ব্যাখ্যা করতে পারবে। উক্ত ঘোষণার পর তার নেতৃত্বে

 ফিকাহ্ তাফসীর ও হাদীস গ্রন্থসমূহ পুড়িয়ে দেয়া হয়।

৪/ রাসূলুল্লাহ (সঃ) মরে মাটির সাথে মিশে

 গেছে, কাজেই তাকে কেউ দরূদ ও সালাম প্রেরণ করবে না, ইহা সকলের জন্য নিষিদ্ধ।

৫/ চার ইমাম কিছুই নয়। তাদের মাজহাব বাতিল। কেননা তাঁরা দিশেহারা ছিলেন।

৬/ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) ছিলেন ডাক পিয়নের মত।

৭/ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর হাতে যত মুশরিক বিভিন্ন যুদ্ধে শহীদ হয়েছে, তাঁর মুর্তি পুজা করলেও এক আল্লাহতে বিশ্বাসী হওয়ার কারনে তারা সবাই জান্নাতে যাবে। ( বলা বাহুল্য যে মক্কার প্যাগানরা মুর্তি পুজা করলেও তাঁরা এক আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল কিন্তু তাঁরা ভাবত মুর্তি তাঁদের হয়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে যেকারনে তাঁরা মুর্তি পুজাকে ভালবাসত, যে কারনে নবুয়ত পাওয়ার পর যখন রাসুল সা: ইসলামের বানী প্রচার শুরু করলেন ইবরাহীম আ: এর ধর্মের কথা বলে তখন মক্কার মুশরীকরা অবাক হয়ে রাসুল সা: কে বলত, এই তুমি আবার কোন আজগুবী নতুন ধর্ম নিয়ে এসেছ, আমরা তো শুরু থেকেই ইবারাহিমের ধর্মই পালন করি ! )

৮/ যারা ওয়াহাবী আকিদায় বিশ্বাসী হবে না, তাদের মাল সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া ও তাদের হত্যা করা জায়েজ হবে। ( এই ফতোয়াটা ভালভাবে মনে রাখবেন, কারন কোরআনে ২:২৫৬ আয়াতে ধর্মের ব্যাপারে জোরযবরদস্তি নিষেধ থাকলেও তাঁরা এটা করে থাকে )

৯/ আজ হতে আর কেউ আজান ও নামাজের শেষে দোয়া করবে না।

১০/ আওলিয়া কেরামের মাজার গুলো ভেঙে তদস্থলে পায়খানা নির্মাণ করা উত্তম। নজদীরা উক্ত আকিদার বাস্তবায়নের জন্য এহসা প্রদেশের পবিত্র মাজারগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এবং তারই মেয়ের জামাতা সৌদি প্রথম ওহাবী সরকার জান্নাতুল বাকীর হযরত মা ফাতেমা আ: সহ সকল বিখ্যাত সাহাবীদের রওজা মোবারক বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। যা আজও বিদ্যমান রয়ে গেছে।

(ফতওয়ায়ে “শামী, ইশয়াতে হক্ব,ওহাবীদের ইতিহাস, ওহাবীদের উৎপত্তি, সাইফুল মাযহাব, মাযহাব কি ও কেন, সাইফুল জাব্বার” ইত্যাদি কিতাবে মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর পরিচয় সম্পর্কে এইভাবে বর্ণিত আছে।)

এবার একটু খুবই সংক্ষিপ্তভাবে দেখে নেয়া যাক এই ওহাবিজমের ধারক বাহক আল-সৌদদের সম্পর্কে যারা বৃটিশ জিয়নিষ্টদের সহায়তায় তুরস্কের অটোমান খেলাফতকে উৎখাত করে তৎকালীন হেজাজ নামের এলাকা দখল করে নিজেদের বংশের নামে আজকের সৌদী আরব তৈরী করে এবং রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।

১৮০২ সাল : ১৮০১ এবং ১৮০২ সালে ওয়াহাবীরা তায়েফে হামলা করে এবং কয়েকশ থেকে হাজার নিরীহ পুরুষ, মহিলা, শিশু কে চুড়ান্ত নিষ্ঠুরতার সাথে খুন করে এবং সম্পদ লুঠ করে যেহেতু ওয়াহাবীদের ফতোয়া অনুযায়ী যারা ওয়াহাবী নয় তাদের হত্যা এবং লুঠ করা জায়েজ। আব্দুল আজিজ ইবনে মোহাম্মদ ইবনে সৌদ এর নেতৃত্বে ওয়াহাবীরা ইরাকের কারবালা এবং নাজাফে হামলা করে দখল করে নেয় এবং ২ থেকে ৫ হাজার নিরীহ বৃদ্ধ, নারী, শিশু হত্যা করে এবং ইমাম হুসাইন আ: এর রওজা গুড়িয়ে দেয় এবং বহু মুল্যবান সামগ্রী লুঠ করে।

শুধু তাই নয় তাঁরা জোর পূর্বক মুসলিমদের ওয়াহাবিজমে দিক্ষীত করতে থাকে শিরক, বিদাতের ফতোয়া দিয়ে। যারা মানত না, সে সব গোত্রের সব পুরুষদের হত্যা করে তাঁদের কেটে টুকরো করে তাঁদের নারীদের দিয়ে রান্না করিয়ে খেতে বাধ্য করত। যারা অবাক হচ্ছেন তাঁদের একটু নজর দিতে বলি এই একবিংশ শতাব্দীতেই মাত্র দুই বছর আগেই আমেরিকা ভিত্তিক সৌদী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে প্রিন্স সালমানের নির্দেশে কিভাবে জীবন্ত অবস্থায় করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে হত্যা করেছিল।

১৮০৫ সালে মরু ডাকাত উসমান আল মুদায়িকির নেতৃত্বে ওয়াহাবীরা মক্কায় হামলা করে মক্কা অবরোধ করে। অবরোধ এত ভয়াবহ অবস্থায় পৌছায় যে মক্কায় কোন কুকুর অবশিষ্ট ছিলনা। কারন অবরোধের শিকার মুসলিমরা বাধ্য হয়েছিল ক্ষুধার তাড়নায় কুকুরের মাংস খেতে। মক্কার অটোমান গভর্নর শরীফ গালিব এফেন্দী বাধ্য হয়ে ওয়াহাবিদের সাথে চুক্তি করে এক শর্তে যাতে তাঁরা মুসলিমদের কোন ক্ষতি না করে এবং শহর হস্তান্তর করে। ওয়াহাবীরা ঢুকেই পবিত্র মক্কা শরীফে ভয়ঙকর তান্ডব শুরু করে। এবং সাথে সাথে মদীনাতেও হামলা করে। তাঁরা চুক্তির বরখেলাপ করে নিরাপরাধ মুসলিমদের উপর পৈশাচিক হামলা করে এবং আত্মসমর্পন করলেও সমস্ত অটোমান সৈন্যদের পবিত্র মদিনায় যেখানে রক্তপাত সম্পুর্ন হারাম সেখানে সবাইকে শিরচ্ছেদ করে তাঁদের কাটা মাথা মদীনার বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে ঝুলিয়ে দেয়। তারা বহু অমুল্য খাজানা-ই-নববী বা নবীর সঞ্চয়ে থাকা সমস্ত নিদর্শন লুঠ করে এবং ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা সমুহ ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় শিরক বিদাতের ফতোয়া দিয়ে।

১৮১১ সালে অটোমান খলিফা সুলতান মাহমুদ খান ২য়, চিঠি পাঠান মিশরের গভর্ণর মোহাম্মদ আলী পাশার কাছে, চিঠিতে তিনি নির্দেশ দেন ওয়াহাবীদের শায়েস্তা করার জন্য।

১৮১২ সালে মোহাম্মদ পাশার নেতৃত্বে মিশরীয় সেনাবাহিনী মক্কা, মদীনা ও তায়েফ থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পর। কাপূরুষ ওয়াহাবীরা পালিয়ে যাবার সময় তাঁদের কিছু নেতা ধরা পড়ে। মিশরীয়রা তাঁদের বন্দী করে তুরস্কে সুলতানের কাছে নিয়ে যায়। তাঁরা সুলতানের সম্মুখে প্যারেড করার পর তাঁদের বিচার করা হয় এবং মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

১৮৫৩ সালে ওয়াহাবীদের তথাকথিত নেতা বা ইমাম ফয়সাল বৃটিশদের কাছে সাহায্যের আবেদন করে। বৃটিশ জিয়নিষ্টরা অনেকদিন ধরেই তাঁদের গোয়েন্দাদের এই কাজে নিয়োগ দিয়ে রেখেছিল যাতে অটোমানদের ভিতর কোন বিদ্রোহী গ্রুপকে অটোমানদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো যায়। বৃটিশরা কালক্ষেপন না করে কর্ণেল লুইস পেলিকে ওয়াহাবী সৌদদের সাথে চুক্তি করতে ১৮৬৫ সালে নজদ অর্থাৎ রিয়াদে প্রেরন করে। তৎকালীন বৃটিশ কলোনিষ্টদের সমস্ত মুসলিম বিশ্ব ঘৃনার চোখে দেখত তাঁদের মুসলিমদের উপর দমন, পীড়ন, অত্যাচারের কারনে কিন্তু ওয়াহাবী আল সৌদ তাঁদের সাথে বন্ধুত্বের চুক্তি করে। এবং এর ফলে মরু ডাকাত ওয়াহাবীরা নজদের আশে পাশে বৃটিশদের সহায়তায় এবং বৃটিশদের অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দখলদার বনে যায়।

১৮৯১ সালে অটোমানদের প্রতিনিধি রাশেদীরা নজদ বা রিয়াদে হামলা করে ওয়াহাবীদের তাড়িয়ে দেয়।

১৯০২ সালে ওয়াহাবীরা আবার বৃটিশদের সহায়তায় নজদে হামলা চালায় এবং নজদ পুনরুদ্ধার করে। এবং পরের দুই বছরে অর্ধেক নজদ তাঁদের করায়ত্ব হয়ে যায়।

১৯০৪ সালে অটোমানরা তাঁদের সেনাবাহিনী পাঠায় রাশেদীদের সহযোগীতা করার জন্য । এবং ১৫ই জুন ১৯০৪ সালে অটোমান এবং রাশেদীদের মিলিত বাহিনী ওয়াহাবীদের পরাভুত করে এবং ওয়াহাবিরা বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে আবার মরুভুমিতে পালিয়ে যায়।

১৯১৫ সালের ডিসেম্বরে ওয়াহাবীরা আবার বৃটিশদের সাথে চুক্তি করে ইতিহাসে এই চুক্তি Treaty of Darin নামে পরিচিত। এই চুক্তির ফলে ওয়াহাবীদের জমি জায়গা বৃটিশদের তত্বাবধানে এবং সিকিউরিটিতে থাকবে বলে উল্লেখ করা হয় এবং এর বিনিময়ে বৃটিশরা সরাসরি অটোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ওয়াহাবীদের সাথে লড়াই করবে।

রথচাইল্ডের ব্যাংক বৃটিশ সরকারের মাধ্যমে সৌদদের ২০০০০ স্বর্ণমুদ্রা লোন দেয়, সাথে ১০০০ বিভিন্ন অস্ত্র, ২০০,০০০এ্যামুনিশন প্রদান করে। এবং ভাতা হিসেবে প্রতিমাসে ৫০০০ স্বর্ণমুদ্রা বরাদ্দ করা হয় যে বরাদ্দ ১৯২৪ সাল অবধি বলবত থাকে।

Percy Cox, Captain Prideaux, Captain Shakespeare, Gertrude Bell, and Harry Saint John Philby ( তথাকথিত আবদুল্লাহ) এবং আরো বহু বৃটিশ নাগরিক সামরিক উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগীতা এবং দেখাশোনার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হলো এবং এরা সবসময় আবদুল আজিজ সৌদতে ঘিরে থাকত। এবং সবশেষে ১৯২০ সালে ওয়াহাবীরা বৃটিশদের টাকা,অস্ত্র, উপদেষ্টাদের পরিকল্পনায় রাশেদীদের উপর আক্রমন করে এবং নিষ্টুরভাবে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় নিরাপরাধ মুসলিমদের উপর এবং রাশেদীদের পরাজিত করে পুরো আরব উপদ্বীপ দখল করে তৃতীয় সৌদী ওয়াহাবী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। যেটা আজ সৌদী আরব নামে সবাই জানে। এবং তাঁরা পবিত্র মদীনাতে বৃটিশদের সরবরাহ করা বোমা দিয়ে ব্যাপক হামলা চালায় এবং মসজিদে নববীর বড় অংশ ধ্বসীয়ে দিয়ে সারা বিশ্বে মুসলিমদের হতবাক করে দেয়।

১৯৩২ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর আব্দুল আজিজ বিন সৌদ নিজেকে রাজা ঘোষনা করে এবং ওয়াহাবিজমকে সৌদী আরবের রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে ঘোষনা করে।

এর আগে খাজারিয়ানরা বৃটিশদের ঘাড়ে পা দিয়ে ১৯১৭ সালেই Belfore Declaration এর বদৌলতে পেলেষ্টাইনে ইহুদীদের আবাসভুমি ইসরাইলের জন্য জমি নিয়ে নেয় এবং এভাবেই তাঁরা আবরাহামিক রিলিজিয়নের ৩ পবিত্র স্থান মক্কা মদীনা এবং জেরুযালেম দখল করে জিয়নিষ্ট ইসরাইল এবং ওয়াহাবী সৌদি আরব প্রতিষ্ঠা করে।

এবং ১৯২৩ সালে অটোমান খলিফাকে ১০০ বছরের গোলামী চুক্তি যেটা লুজার্ন চুক্তি নামে পরিচিত সেটা করতে বাধ্য করা হয় এবং অটোমান খেলাফত তথা মুসলিম খেলাফতকে চিরদিনের জন্য দুনিয়া থেকে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। অটোমানদের সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে খলিফাকে কপর্দকহীন অবস্থায় ফ্রান্সে নির্বাসনে পাঠানো হয় ঠিক যেভাবে শেষ মুঘল বাদশাহ বাহাদুর শাহ জাফরকে রেঙ্গুনে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। অটোমান খেলাফত ভেঙ্গে ৪২ টা ছোট দেশ তৈরী করে তাঁরা এবং সেগুলোতে নিজেদের আজ্ঞাবহ পুতুল সরকার বসায়। এই সব পুতুল সরকারের বিরুদ্ধেই সামরিক অভ্যুথ্থান করে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পিতা আসাদ, লিবিয়ায় গাদ্দাফী, ইরাকে সাদ্দাম এবং ইরানে খোমেনী ক্ষমতা দখল করে। এদের সাথে খোমেনীর পার্থক্য ছিল একটাই সেটা হল খোমেনী ইসলামী বিপ্লব করে ক্ষমতা নিয়েছিলেন। এসব দেশ এবং এসব নেতার সবার ভাগ্যে কি ঘটেছে আপনারা জানেন, এখন ইরানের পালা।

এবার আসি বৃটিশ ভারতে। বৃটিশ ভারতে খাজারিয়ানরা মুসলিমদের সাথে কি করেছে তাঁর এক ঝলক দেখলেই আপনাদের পুরো বিশ্বের চিত্রটা একেবারে পরিস্কার হয়ে যাবে।

বৃটিশরা যেহেতু মুঘলদের উতখাত করে ক্ষমতা দখল করেছিল এখানে সেহেতু সবথেকে বেশী ক্ষতি হয়েছিল মুসলিমদেরই এবং বৃটিশদের বিরুদ্ধে ১ম দেড়শ বছর শুধু মুসলিমরাই লড়াই করেছিল। প্রথম বিরোধীতা এবং বিদ্রোহ করেছিল বাংলার সুফিরা। ফকির মজনু শাহ এর নাম আপনারা শুনে থাকবেন, এই মানুষটি সর্বপ্রথম ভারতের বিভিন্ন সুফি, ফকির, বাউল, বৈষ্টমদের নিয়ে দল তৈরী করে এবং একাধারে ২২ বছর বৃটিশদের উপর গেরিলা কায়দায় হামলা করতে থাকে। সবশেষে বৃটিশরা তাঁকে ধরতে সক্ষম হয়। এরপর বৃটিশদের বিরুদ্ধে শরীয়তি আলেম যারা ছিল তাঁরা লড়াই শুরু করে এবং বৃটিশরা দিল্লী থেকে লাহোর পর্যন্ত প্রতিটি গাছে এইসব আলেমদের ফাসির দড়ীতে ঝুলিয়ে রাখে যতদিন না শকুন আর কাক তাদের মাংস ছিড়ে খেয়ে শেষ করেছে।

ভারতের মুঘলদের দাপ্তরিক ভাষা ছিল ফারসী। এবং এই উপমহাদেশের মুসলিমরা ফারসী ভাষায় জ্ঞানচর্চা ও লেখাপড়া করত। কিন্তু বৃটিশরা এসেই ফারসী ভাষা বাতিল করে ইংরেজী চালু করে। মুসলিমরা স্বভাবতই বৃটিশদের উপর ক্ষেপা ছিল তারউপর বৃটিশরা কৌশলে মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে স্থানীয় কিছু মোল্লাদের দিয়ে ফতোয়া জারি করল যে মুসলিমদের ইংরেজী শেখা বিদাত এবং যে ইংরেজী শিখবে তাঁর বউ তালাক হয়ে যাবে। এতে মুসলিমরা এমনিতে অসহায় ছিল তারউপর এই উদ্ভট ফতোয়ায় আরো কোনঠাসা হয়ে পড়ল। উচ্চ বর্ণ হিন্দুরা মানে ব্রাহ্মনরা দলে দলে ইংরেজী শিখতে লাগল এবং বৃটিশদের অফিস আদালতে চাকরী করতে লাগল আর মুসলিমদের অশিক্ষিত হবার শতাব্দীর শুরু হল। যারা একদা ছিল রাজা তারাই হয়ে গেল লানছিত অপদস্ত এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। এবং এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল বৃটিশরা। এরপর তারা সবথেকে বিধ্বংসী মারাত্মক আরেক কাজ করল।

তাঁর আগে বলে নেই ব্রাহ্মনরা কিন্তু মুঘলদের অফিস আদালতেও বহু পদে চাকরি করত। মজার ব্যাপার হল ব্রাহ্মনরা মুঘলদের বলত যে তাঁরা হিন্দু নয়, কারন তাঁরাও মুঘলদের মত বাইরে থেকে এসেছে বিজয়ীর বেশে অতএব তাঁদেরকে যেন স্থানীয় হিন্দুদের কাতারে না ফেলা হয়। অথচ এরাই এখন হিন্দুইজম নতুন করে তৈরী করে ভারতের হিন্দুদের মাথায় বসে ছড়ি ঘুরাচ্ছে। এদের বিষয়ে আরো পরে আসছি।

বৃটিশরা হঠাত করে মুসলিম দরদী সেজে বসল এবং তাঁদের সবথেকে মারাত্মক অস্ত্র তৈরী করে তাঁরা এই উপমহাদেশের কোটি কোটি মুসলিমদের ইসলামের পথ থেকে সরিয়ে আনল যে ধারা এখনো বলবত আছে।

 তাঁরা ১৭৮০ সালে কলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা তৈরী করল। এবং ধর্মীয় শিক্ষায় আরবী ভাষার প্রচলন ঘটাল মুসলিমদের শিক্ষাস্তরে। এবং সাথে সাথে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়া সংষ্কৃত ভাষাও উদ্ধার করল তাঁরাই এবং তাঁর প্রচলন ঘটাল আবার হিন্দুদের ভিতর। ফারসী ভাষার দখলে থাকা মুসলিমরা উপায় না দেখে সরকারী চাকরীর লোভে আলীয়াতে দলে দলে ভর্তি হল লাগল। যার সিলেবাস ছিল পুরোটাই ওয়াহাবিজম। যার সাথে শিয়া –সুন্নী কোন কিছুর মিল ছিল না। টাইটেল দিল তাঁরা “মাওলানা”। বাংলা করলে দাঁড়ায় “আমাদের প্রভু”। এই উপমহাদেশ সহ সারা বিশ্বে ইসলাম প্রচার করেছিল আহলে বাইতরা যাদের আমরা ওলি আউলিয়া বলি। তাঁদের শিক্ষার সাথে এই শিক্ষার কোনরকম মিল নেই। এটা উগ্র, ভ্রান্ত এবং বিধ্বংসী। এবং এই সিলেবাস যাতে ভালভাবে গেলানো যায় সেকারনে আলীয়া মাদ্রাসার প্রথম ২৫ জন প্রিন্সিপালই ছিল সাদা চামড়ার বৃটিশ। ভাবা যায় !! ইসলাম শিক্ষা দিচ্ছে জিয়নিষ্ট বৃটিশরা যারা ইসলামের সবথেকে বড় শত্রু। আপনাদের বিশ্বাস না হলে গুগল করলেই নাম সহ তালিকা পেয়ে যাবেন। এবং আলীয়া থেকে যেসব ওয়াহাবীরা পাশ করে বের হত বৃটিশরা তাঁদের সরকারী চাকরী দিতে থাকল এবং এইভাবে এই উপমহাদেশ সহ সারা বিশ্বে যেখানে যেখানে বৃটিশদের কলোনী ছিল সেই সব দেশে সুন্নীদের ভিতর মাদ্রাসা স্থাপন করে ওয়াহাবিজম শেখাতে লাগল। এদিকে আরেকদল মুসলিম তারা কওমী মাদ্রাসা নামে পিউর সাম্প্রদায়িক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করল ১৮৫৭ সালে যেটা দেওবন্দ নামে পরিচিত। এরা ছিল হানাফি মাজহাবের। এরা আলীয়া মাদ্রাসার ওয়াহাবিজমকে কাউন্টার করার উদ্দেশ্যেই দেওবন্দকে মুলত প্রতিষ্ঠা করেছিল। শুরুতে এখানকার সিলেবাসে সাইন্স ছিল, ম্যাথ, দর্শন সবই ছিল কোরআন হাদিসের পাশাপাশি। এবার বৃটিশরা নড়েচড়ে বসল। এদের পরিকল্পনা পানিতে পড়তে যাচ্ছে দেখে এরা কাশেম নানুতুবিকে হাত করে হোক আর চাপ দিয়ে হোক সিলেবাসে বদল নিয়ে আসল এবং সাইন্স, ম্যাথ, দর্শন বাদ দিয়ে সেমি ওয়াহাবি সিলেবাস চালু করল। এবং ভারতের প্রথম সারির শরীয়তি আলেমদের বৃটিশরা আন্দোলন দমনের নামে আগেই ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল যে কারনে দেওবন্দের মুরুব্বীদের লোকান্তরে চলে যেতেই ধীরে ধীরে দেওবন্দ হয়ে পড়ল আরো বিভ্রান্ত। এবং বৃটিশদের আরো ভাল হল এই কারনে যে তাঁরা দুই ধারার শিক্ষাকেই ইসলামের মুল শিক্ষা থেকে দুরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল এবং মুসলিমদের একটা বিরাটা অংশকে unproductive খাতে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হল। এবং দুই শিবিরে বিভক্ত করে দুটোকেই মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিল। দেওবন্দীরা আলীয়াদের দেখতে পারত না আর আলীয়া থেকে পাশ হওয়া ওয়াহাবী জামাত শিবিররা তো নিজেদের বাইরে কাউকে মুসলিমই মনে করতনা। খেয়াল করে দেখবেন ১০ বছর আগেও ক্বওমী মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের ভিতর জামাত শিবির ছিল না। জামাত শিবির ছিল শুধু আলীয়াতে এবং এরাই সরকারী চাকরী পেত এবং এখনো পায়। আর কিছুদিন আগে ক্কওমী থেকে পাশ করা ছাত্রদের দে সরকারী চাকরীতে ঢোকার অনুমতি দিল শেখ হাসিনা সরকার। যে কারনে জামাত শিবির ঘরানার বাবুনাগরী এবং মামুনুলরা, দেওবন্দ ঘরানার হাটহাজারী তথা তথাকথিত হেফাজত ইসলামের দখল নিয়ে নিল বৃদ্ধ অসুস্থ শফী সাহেবকে তাঁরই যত্নে গড়া হাটহাজারী মাদ্রাসা এবং হেফাজত ইসলামের নেতৃত্ব থেকে টেনে হিচড়ে নামিয়ে। শফী সাহেব মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে অসহায়ের মত দেখেছেন ভুল পথে পা বাড়ানোর খেসারত।  এবং এই উপমহাদেশের যত মসজিদ আছে বেশীরভাগ মসজিদের ইমাম এই দেওবন্দের সেমি ওয়াহাবি মতবাদের যারা নিজেরাও ইসলাম থেকে বহুদুরে অবস্থান করে। এর একটা ছোট উদাহারন দিলেই বুঝে যাবেন। কোরআনে আল্লাহ জ্ঞান অর্জনের উপর এত গুরুত্ব দিয়েছেন যে, ইলম শব্দটার উল্লেখ আছে ৮০০ বারের অধিক। এবং মুসলিম নরনারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ করা হয়েছে আর এদেশে দেওবন্দী ধারার সবথেকে বড় মুরুব্বী ফতোয়া দেয় মেয়েদের ৩ ক্লাস পড়াশোনা করলেই হবে, বেশী পড়াশোনা করার দরকার নেই। স্বামীর টাকা পয়সা গুনতে পারলেই চলবে। অথচ পৃধিবীর সর্বপ্রধম বিশ্ববিদ্যালয় মরক্কোতে ৮৪৯ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একজন নারী যার নাম ফাতিমা আল ফিহির। যেখানে বিজ্ঞান, অংক,জ্যামিতিসহ বিজ্ঞানের অন্যন্য ধারা যুক্ত ছিল। রাসুল সা: ১ম স্ত্রী খাদিজা আ: ছিলেন আরবের সবথেকে ধনী ব্যবসায়ী এবং যারা ক্যারাভান কোম্পানী সমস্ত আরবের সবথেকে বড় এবং তিনি ছিলেন আজকের মতন আধুনিক কোম্পানীর সিইও । বৃটিশরা কৌশলে এই উপমহাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার নামে মুসলিমদের ইসলামের থেকে যোজন যোজন মাইল দুরে সরিয়ে নিয়ে এসেছে। সবথেকে দু:খের বিষয় হল বৃটিশরা চলে গেলেও এরা এদের সিলেবাসের উন্নতি ঘটায়নি। কোরআনে বর্নীত প্রতিটি নবী রাসুল কে বলেছেন বলে দিতে যে, আমি তোমাদের আল্লাহর পথে আহবান করার অথবা জ্ঞান শিক্ষার জন্য মুল্য চাইনা। ইসলাম প্রচার করে পয়সা নেয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ কোরআনে। এরা ইসলাম বেচে খায় কিন্তু কেয়ামত অবধি চেষ্টা করেও একটা উদাহারন দেখাতে পারবে না যে কোন নবী রাসুল পয়সা নিয়েছে কিংবা ওয়াজের নামে ব্যাবসা করেছে। কোরআনের স্পষ্ট আয়াত দেখুন আল্লাহ বলছেন,

১. “বস্তুত, যারা আল্লাহ কেতাবে যা অবতীর্ণ করেছেন তা গোপন করে এবং এর বিনিময়ে পার্থিব তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ঢুকায় না। এবং আল্লাহ হাশরের দিন তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। এরাই হচ্ছে সেই সমস্ত মানুষ যারা সঠিক পথের (হেদায়াহ) পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা (দালালাহ) এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে। আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল (সুরা বাকারা ১৭৪)।

২. তাদের অনুসরণ করো যারা তোমাদের কাছে কোনোপ্রকার বিনিময় চায় না এবং যারা সঠিক পথে (হেদায়াত) আছে (সুরা ইয়াসিন ২১)।

পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ রসুলাল্লাহকে (সা.) সত্য প্রচারের বিনিময়ে কোনো মজুরি, সম্পদ, বিনিময় (payment, wealth, reward) গ্রহণ না করার জন্য অন্তত ছয়টি আয়াতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ বলেছেন,

৩. তুমি তাদের নিকট কোনো মজুরি দাবি কোরো না। এই বাণী তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ মাত্র (সুরা ইউসুফ ১০৪)।

৪. বল! আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোনো পারিশ্রমিক চাই না। এবং যারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাদের দলভুক্ত নই (সুরা সা’দ ৮৬)।

৫. বল! আমি এর (দ্বীনের) বিনিময়ে তোমাদের কাছ থেকে আমার নিকটআত্মীয়দের ( আহলে বাইত) প্রতি মুয়াদ্দাত ( প্রকা্শ্য প্রেম-ভালবাসা ) ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার ব্যতীত অন্য কোনো মজুরি চাই না। (সুরা শুরা - ২৩) [ এই আয়াতটি ভাল করে মনে রাখবেন. আপনারা নিজেদের যে মুসলিম বলেন বা ইসলাম মানেন সেটার একটি বিনিময় মূল্য আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন আর সেটা হল আহলে বাইতদের প্রতি মুয়াদ্দাত বা প্রকাশ্য ভালবাসা এবং প্রেম। আল্লাহ এখানে মুয়াদ্দাত শব্দ ব্যবহার করেছেন মুহব্বতের স্থলে। মুহব্বত আপনি গোপনেও করতে পারেন কিন্তু মুয়াদ্দাত হল প্রকাশ্য এবং এটিই হল আপনার ইসলামে ঢোকার বিনিময় মুল্য যেটা হল ফরজ। তাঁর মানে এই দাড়ায় যে যদি আপনি এটা না মানেন তাহলে আপনি যতই ইবাদত বন্দেগী করেন না কেন আপনি ইসলাম কিনতেই পারেননি তো আপনার ইবাদতই কি আর বন্দেগীই বা কি। এটিই হল সেই blood line যেটার গুরুত্ব এবং মাহাত্ম্য এর বিষয়ে আগের পর্বে অল্প আলোচনা করেছিলাম। এটা কেন এত অধিক গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে বিস্তারিত সাম্নের পর্বগুলোতে আলোচনা করব।)

৬. তবে কি তুমি তাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাচ্ছ যা ওরা একটি দুর্বহ বোঝা মনে করে (সুরা তুর: ৪০)?

৭. তাদেরকেই (নবীদেরকেই) আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেছেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর; বল! এর জন্য আমি তোমাদের কাছে কোনো মজুরি চাই না। এটা তো বিশ্ব জগতের জন্য উপদেশ (সুরা আনআম - ৯০)।

৮. (হে মোহাম্মদ!) তুমি কি তাদের নিকট কোনো মজুরি চাও? তোমার প্রতিপালকের প্রতিদানই তো শ্রেষ্ঠ এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রেযেকদাতা (সুরা মুমিনুন: ৭২)।

প্রত্যেক নবী-রসুল তাদের জাতির উদ্দেশ্যে একটি সাধারণ ঘোষণা দিয়েছেন যে, আমি তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাই না, আমার বিনিময় রয়েছে আল্লাহর কাছে। এ বিষয়ে নবী রসুলদের (আ.) বেশ কয়েকজনের ঘোষণা আল্লাহ দৃষ্টান্তস্বরূপ পবিত্র কোর’আনেও সন্নিবেশিত করেছেন।

৯. নূহ (আ.) এর ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! এর পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধন সম্পদ চাই না। আমার পারিশ্রমিক আল্লাহর নিকট (সুরা হুদ-২৯)।

১০. হুদ (আ.) এর ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! আমি এর পরিবর্তে তোমাদের নিকট কোনো মজুরি চাই না। আমার পারিশ্রমিক তাঁরই নিকট যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা কি তবুও বুদ্ধি (আক্ল) খাটাবে না (সুরা হুদ-৫১)?

১১. নূহ (আ.) এর ঘোষণা: আমি এর বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আমার পারিশ্রমিক তো কেবল বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে (সুরা শু’আরা ১০৯)।

১২. সালেহ (আ.) এর ঘোষণা: আমি তোমাদের নিকট এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে (সুরা শু’আরা-১৪৫)।

১৩. লুত (আ.) এর ঘোষণা: এর জন্য আমি কোনো মজুরি চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে (সুরা শু’আরা-১৬৪)।

১৪. নূহ (আ.) এর ঘোষণা: যদি তোমরা আমার কথা না শোনো তাহলে জেনে রাখ, আমি তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাই নি। আমার প্রতিদান কেবল আল্লাহর নিকট এবং আমাকে মুসলিম (সত্যের প্রতি সমর্পিত) হওয়ার জন্য আদেশ করা হয়েছে (সুরা ইউনুস ৭২)।

১৫. হুদ (আ.) এর ঘোষণা: আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট কোনো মজুরি চাচ্ছি না। আমার পারিশ্রমিক তাঁরই নিকট যিনি এই বিশ্বজাহানের ¯্রষ্টা (সুরা শু’আরা ১২৭)।

১৬. শোয়েব (আ.) এর ঘোষণা: আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোনো মূল্য চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে (সুরা শু’আরা-১৮০)।

ধর্মের কোনো কাজ করে নবী ও রসুলরা পারিশ্রমিক গ্রহণ করতেন না, সুতরাং তাঁদের অনুসারী উম্মতের জন্যও পারিশ্রমিক গ্রহণ করা বৈধ নয়। তবু পূর্ববর্তী কেতাবধারী জাতিগুলোর মধ্যে একটি ধর্মজীবী পুরোহিত শ্রেণির উত্থান হয়েছিল যারা ধর্মের মূল শিক্ষাকে বিকৃত করে ফেলেছে। তাদের সেই অপকর্মের ইতিহাস পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ বারংবার উল্লেখ করেছেন যেন আখেরি নবীর (সা.) উম্মাহর মধ্যে এমন ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উদ্ভব না হয়। আল্লাহ বনী ইসরাইলকে বলেছিলেন,

১৭. তোমরা কেতাবের প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর তুচ্ছমূল্যে আমার আয়াত বিক্রি করো না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ। তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বেও সত্যকে গোপন করো না। (সুরা বাকারা ৪১, ৪২)

১৮. আল্লাহ যখন তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন যে, তোমরা নিশ্চয়ই এটা মানুষের মধ্যে প্রচার করবে এবং তা গোপন করবে না। কিন্তু তারা তা তাদের পেছনে নিক্ষেপ করল এবং খুব কম মূল্যে বিক্রয় করল, অতএব তারা যা কিনল তা নিকৃষ্টতর। (সুরা ইমরান ১৮৭)

১৯. নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর অঙ্গীকার ও নিজের ওয়াদা সামান্য মূল্যে বিক্রি করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। আল্লাহ বিচার দিবসে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে দৃষ্টি দিবেন না। আল্লাহ এদেরকে পাপ থেকে পরিশুদ্ধও করবেন না। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা ইমরান ৭৭)

২০. তাদের (নবী ও প্রকৃত মো’মেন) পরে আসলো অপদার্থ উত্তরাধিকারীগণ, তারা সালাহ বিকৃত ও নষ্ট করল ও লালসা পরবশ হলো। সুতরাং তারা অচিরেই তাদের কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে (সুরা মারইয়াম ৫৯)।

২১. তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কেতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা মনে কর যে, তার কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে (সুরা ইমরান ৭৮)।

২২. সুতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা নিজ হাতে কেতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে: এটা আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে। তাদের হাত যা রচনা করেছে, তার জন্য তারা শাস্তিপ্রাপ্ত হবে এবং তারা যা উপার্জন করেছে সেজন্যও তারা শাস্তি প্রাপ্ত হবে। (সুরা বাকারা ৭৯)।

২৩. হে মো’মেনগণ! অধিকাংশ আলেম ও সুফিবাদীরা মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে এবং মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করে। তারা স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে। তাদেরকে কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা (সোনা ও রূপা) উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং সে সঞ্চিত সম্পদের স্বাদ আস্বাদন করো (সুরা তওবা ৩৪-৩৫)।

হাদীসে রসুল (সা.)

১. আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে পাওয়া যায়, রসুলাল্লাহ (সা.) সাহাবিদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা সৌভাগ্য দ্বারা পরিবেষ্টিত রয়েছ। তোমরা আল্লাহর কেতাব তেলাওয়াত করে থাকো। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রসুল বর্তমান। অদূর ভবিষ্যতে এমন এক যামানা আসবে যখন তীরের ফলক যেরূপ সোজা করা হয় লোকেরা কোর’আন তেলাওয়াতকে সেভাবে সোজা করবে। তারা দ্রুত তেলাওয়াত করে নিজেদের পারিশ্রমিক আদায় করবে এবং এতে তাদের কোনো বিলম্ব সহ্য হবে না। (ভূমিকা, তাফসির ইবনে কাসীর)।

২. উবাদা ইবন সামিত (রা.) বলেন, “আমি আহলে-সুফফার কিছু লোককে লেখা এবং কোর’আন পড়া শেখাতাম। তখন তাদের একজন আমার জন্য একটি ধনুক হাদিয়া হিসেবে প্রেরণ করে। তখন আমি ধারণা করি যে, এ তো কোন মাল (সম্পদ) নয়, আমি এ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় তীরন্দাযী করবো।

এরপর রসুলাল্লাহর (স.) নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি: ইয়া রসুলাল্লাহ (স.)! আমি যাদের কোর’আন পড়া এবং লিখা শিখাই, তাদের একজন আমাকে হাদিয়া হিসেবে একটি ধনুক প্রদান করেছেন, যা কোন সম্পদই নয়। আমি এ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় তীরন্দাযী করবো। তিনি (স.) বলেন: তুমি যদি তোমার গলায় জাহান্নামের কোন বেড়ি পারাতে চাও তবে তুমি তা গ্রহণ করো।’ (আবু দাউদ, চতুর্থ খণ্ড, হাদিস-৩৩৮১)।

৩. রসুলাল্লাহ ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন, “এমন সময় আসবে যখন (১) ইসলাম শুধু নাম থাকবে, (২) কোর’আন শুধু অক্ষর থাকবে, (৩) মসজিদসমূহ জাঁকজমকপূর্ণ ও লোকে লোকারণ্য হবে কিন্তু সেখানে সঠিক পথনির্দেশ (হেদায়াহ) থাকবে না, (৪) আসমানের নিচে নিকৃষ্টতম জীব হবে আমার উম্মাহর আলেম সমাজ, (৫) তাদের সৃষ্ট ফেতনা তাদের দিকেই ধাবিত হবে (আলী আ:. থেকে বায়হাকি, মেশকাত)।

৪. ওসমান বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস। তিনি বলেন, রসুলাল্লাহ আমাকে আমার গোত্রের ইমাম (নেতা) নিযুক্ত করে বললেন, “তোমাকে তাদের ইমাম নিযুক্ত করা হলো। তুমি দুর্বল ব্যক্তিদের প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখবে এবং এমন এক ব্যক্তিকে মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করবে যে আযানের কোনোরূপ বিনিময় গ্রহণ করবে না (নাসাঈ, তিরমিযী, মুসলিম, ইবনে মাজাহ)।”

যে বিষয়গুলো আল্লাহর কেতাব অনুযায়ী হারাম এবং রসুলাল্লাহর পবিত্র জীবনীতে যেগুলোর বৈধতার নিদর্শনও খুঁজে পাওয়া যায় না, সেগুলোকে কোনো অসিলায় বৈধতা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

পবিত্র কোর’আনের উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসসমূহ বিবেচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, আল্লাহর কোনো আদেশ, নির্দেশ, বিধান গোপন করা যাবে না এবং দীনের কোনো কাজ করে অর্থ গ্রহণ করা আগুন খাওয়ার সমতুল্য অর্থাৎ হারাম। যারা এই কাজ করবে তারা পথভ্রষ্ট ও জাহান্নামী। যারা ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে অর্থ আশা করে তাদের ইত্তেবা অর্থাৎ আনুগত্য ও অনুসরণ করা যাবে না। মো’মেনের আনুগত্য করার নিদর্শন হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যারা বিনিময় নিবে তাদের পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ হবে কিনা আপনারাই ভেবে দেখেন।

একইভাবে পবিত্র কোর’আন পাঠ করে বা দীন শিক্ষা দিয়ে ‘হাদিয়া’ গ্রহণ করতে আল্লাহর রসুল সরাসরি নিষেধ করেছেন। নামাজ পড়িয়ে, খোতবা দিয়ে, ওয়াজ করে, কোর’আন খতম করে, কোর’আন শিক্ষা দিয়ে, তাসাউফ শিক্ষা দিয়ে, মাজার বা দরবার শরীফের নামে অর্থ উপার্জন করা হয়। এ সবকিছুই শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম।

যে বিষয়গুলো আল্লাহর কেতাব অনুযায়ী হারাম এবং রসুলাল্লাহর পবিত্র জীবনীতে যেগুলোর বৈধতার নিদর্শনও খুঁজে পাওয়া যায় না, সেগুলোকে কোনো অসিলায় বৈধতা দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই। সুতরাং যারা ধর্মীয় কাজ করে কোনো বিনিময় নেবে না এবং নিজে সত্যের উপর দ-ায়মান থাকবে কেবল তাদের অনুসরণ, আনুগত্য করাই জায়েজ হবে।

এখন আপনারা বলতে পারেন যে, এই ইমামদের সংসার চলবে কিভাবে? তো ভাই নবী রাসুলদের সংসার কিভাবে চলেছে ? তাঁরা ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি কাজ করেছেন আর তাই দিয়ে সংসার চালিয়েছেন। আর আপনাকে তো কেউ বলেনি এই রাস্তায় আসতে, আপনি অন্য রাস্তায় যান। আমরা যারা মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ছি তাঁরা ৫/৭ টা সুরা সবাই জানি। আমাদের ভিতর সহজেই ইমামতি করতে পারি যে কেউ। তাতে পয়সাও দেয়া লাগল না এবং কোরআনের নির্দেশও অমান্য করা হলনা। মসজিদ কমিটি নিয়ে ইদানিং দেখি ভোটাভুটিও হয়। তো তাঁরাও এই দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

এই উপমহাদেশে ওয়াহাবী আরেক গ্রুপ ছিল যার গুরু মোহাম্মদ হোসেন বাটালভি বৃটিশ ভাইসরয় এর কাছে আবেদন করে তাঁদেরকে যেন এখন থেকে ওয়াহাবী না বলে “আহলে হাদিস” বলা হয়। তাঁর আবেদন গৃহিত হলে সে ফতোয়া দেয়, বৃটিশদের বিরুদ্ধে যিহাদ হারাম। ( ইক্তিসাল ফি মাসাসিদ জিহাদ)

ওয়াহাবীরা বিশ্বে ৪টি নামে পরিচিত। ওয়াহাবি, নজদী, সালাফি এবং আহলে হাদিস। এখন যদি আপনাদের সন্দেহ হয় তাহলে ইন্টারনেট আপনার হাতেই আছে। যা বলেছি তা একে একে মিলিয়ে নেন। আমার এসব খুড়ে বের করতে ২১ বছর সময় লাগছে। যেহেতু আপনাদেরকে আমি পয়েন্টগুলো ধরিয়ে দিলাম সেহেতু আপনাদের এত সময় লাগবেনা, কয়েক মাসের ভিতর বুঝে যাবেন কিভাবে আপনাদের ধোঁকা দিয়ে রাখা হয়েছে।

বৃটিশরা আরেকটি দল তৈরী করে আহমদীয়া নামে। এরাও বাতিল আরেকটি দল। বাহাই নামের শিয়াদের ভিতর আরেকটি দলকে পৃষ্ঠপোষকতা করে বৃটিশরা কিন্তু শিয়াদের দাপটে এরা টিকতে পারেনি। বলা যায় এদেরকে তাড়িয়ে ইরান থেকে বের করে দিয়েছে। আমাদের বাংলাদেশে যাকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই নামে জানি তার নাম আসলে আজিজ মোহাম্মদ বাহাই । সে এই ধর্মের একজন। সে যে একজন মাফিয়া সেটা সবাই জানে এবং তাঁর শক্তির উৎস কারা এবার বুঝে নেন।

জিয়নিষ্টরা মুলত সৌদী আরবকে দিয়ে এই তথাকথিত ইসলামী দলগুলোকে নিয়ন্ত্রন করে বিপুল পরিমান টাকা দিয়ে। একারনে এরা জানেনা যে এরা আসলে খাজারিয়াদের হয়ে তাঁদেরই মিশনে কাজ করছে অথচ এরা বিশ্বাস করে যে এরা ইসলামের জন্য করছে। এরা জন্মের শুরু থেকেই জিয়নিষ্টদের গোলাম। এরা ইসলামের নামে আরব ওয়াহাবীজম এবং আরব জাতীয়তাবাদ মিক্সড করে বিশ্বের নিরীহ কোটি কোটি মানুষকে ইসলাম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। যে কারনে আজ ১০০ বছর পর বিশ্বের ৭০ % সুন্নীরা জানেই না যে আসলে তাঁরা সুন্নীইজমের নামে ওয়াহাবিজম অনুসরন করছে যেটা ইসলাম থেকে কয়েক আলোকবর্ষ দুরে আর এরাই এখন আলেম, মুফতি সেজে ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।

সামনের পর্বতে ডলারকে সৌদীরা কিভাবে পৃথিবীর রিজার্ভ কারেন্সী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কলকাঠি নেড়েছে সেই তথ্য প্রমান দিব। এবং এরা কিভাবে পাকিস্তানকে ধ্বংস করছে সেটাও জানাব। আর যদি দেখি আজকের পর্ব আপনারা হজম করতে পেরেছেন তাহলে সামনে পর্বগুলোতে blood line কেন এত অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা এর হাকিকত বা স্বরুপ কি আর black magic বা শয়তানের উপাসনার সাথে এর কি সম্পর্ক এবং সামনে যে তুফান আসছে সেটার উপর বিজ্ঞান, কোরান ও হাদিস এবং রাজনৈতিক তথ্য প্রমান দিয়ে আলোকপাত করব।

৪ চতুর্থ পর্ব 

Friday, December 18, 2020

ধর্ম ও কারেন্সীওয়ার পর্ব চার

মহাজ্ঞানী বলেছেন, মানুষ ৪ রকমের ।

১/ যে জানে, কিন্তু সে জানেনা যে সে জানে। সে ঘুমন্ত অত্‌এব তাঁকে জাগাও ।

২/ যে জানে না, কিন্তু সে জানেনা যে সে আসলে জানেনা । সে বোকা ।

৩/ যে জানেনা, কিন্তু সে জানে যে সে জানেনা। সে শিশু । অতএব তাঁকে শেখাও।

৪/ যে জানে যে, সে জানে । সে হল বাদশাহ । অতএব তাঁকে অনুসরন কর।

মহাজ্ঞানী আরো বলেন, “ বেশীরভাগ সত্য সেখানে লুকানো আছে যা তুমি জানো না। যে বিষয়ে তোমার ধারনা বা জ্ঞান নেই সেটাকে অস্বীকার করাটা হল পৃথিবীর সবথেকে বড় মুর্খতার পরিচয়।“

আপনারা কি জানেন মহাবিশ্ব কতবড় ? ১৩ লক্ষ টি পৃথিবী অনায়াসে এঁটে যাবে আমাদের সূ্র্যের পেটের ভিতর। সাইজটি একটু কল্পনায় আঁকুন।


আপনারা কি পৃথিবীর সব বালুকনা গুনতে পারবেন ? অসম্ভব তাই না ? তাহলে শুনে রাখুন মহাবিশ্বে যত ষ্টার বা সূর্য আছে তার সংখ্যা পৃথিবীর সমস্ত বালুকনার থেকেও বেশী ! তাদের একেকটার সাইজ আমাদের প্রানপ্রিয় সুর্যের থেকেও বহু বহু গুন বড়। 

আমাদের সৌরজগতের সবথেকে কাছের ষ্টার হল Proxima centurai যা ৪.৫ আলোকবর্ষ দুরে অবস্থিত। আলোর গতিতে মানে সেকেন্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল বেগে এক বছরে যে পরিমান দুরত্ব অতিক্রম করা যায় সেটাকে ১ আলোকবর্ষ বলা হয়। তো আলোর গতিতেও যদি আপনি রওনা হন তাহলে সবথেকে কাছের ষ্টারে পৌছুতে আপনার সময় লাগবে সাড়ে চার বছর।

 আর এরকম ষ্টার আছে আমাদের মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীতে ১০ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটি । একটির থেকে আরেকটির দুরত্ব কমবেশী এরকম। আর আমাদের মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর আয়তন মানে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের দুরত্ব ৫২,৮০০ আলোকবর্ষ। আর মহাবিশ্বে এরকম বা এর থেকেও কয়েকশ গুন বড় গ্যালাক্সীই আছে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি।

আবার একটি সাধারন বালুকনার ভিতর পরমানু আছে সমগ্র মহাবিশ্বের সমস্ত ষ্টারের থেকেও বেশী। আর এসব কিছু মহাবিশ্বের মোট ভরের মাত্র ১% বাকি সবকিছুই dark matter বা অদৃ্শ্য।

এবার আপনার নিজের অবস্থান একটু কল্পনা করুন চোখ বন্ধ করে। এই মহাবিশাল মহাবিশ্বের ভিতর আপনি কি কিছু ?

এই সুবিশাল মহাযজ্ঞ একটি মাত্র অপারেটিং সিস্টেমে চলছে নিখুত ভাবে সৃষ্টির শুরু থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে। ১ম পর্ব ২য় পর্বে এর কিছু ধারনা আপনারা পেয়েছেন যে এর একটি ডিজাইন আছে এবং প্রতিটি ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ বস্তু তাঁর নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী চলছে। কারো একচুল এদিক ওদিক থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই।  এই একক সিস্টেমকে আমরা সুন্নাতআল্লাহ বলি বিজ্ঞানীরা বলেন কসমিক সিস্টেম।

পানিকে তাপ দিলে সে বাস্প হয়ে যায়। ঠান্ডা করলে সে বরফের আকার ধারন করে। আবার স্বাভাবিক তাপে সে তরল আকার ধারন করে। পানির এই তিন অবস্থাকে পানির ধর্ম বলা হয়। যদি তাপ দিলে পানি বাস্প না হয় তবে সে পানি নয়। কারন পানির ধর্ম তাপ দিলে সে বাস্প হয়ে উড়ে যাবে। সেরকম অন্য বাদবাকি সবার মত মানুষেরও নিজের ধর্ম আছে।

 সে যদি মানুষের মত আচরন না করে পানির মতই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তাহলে তাঁকে আর যাই হোক মানুষ বলা যাবে না যদিও সে মানুষের চেহারা নিয়ে জন্মায়।

 তাঁকে মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে উঠতে হবে এবং প্রতিটা ক্ষনে তাঁকে মানুষের মত চিন্তা, চেতনায়, আচরন করে সেটা প্রমান করাটাই হল তাঁর প্রাথমিক ধর্ম। আর এটাই হল মানুষের জীবনের একমাত্র চ্যালেঞ্জ । আর পুরো জীবনটাই হল পরিক্ষা। আর এই পৃথিবী হল পরিক্ষার হল। সবাই এখানে পরীক্ষা দিচ্ছে কিন্তু সবার প্রশ্নই আবার আলাদা। 

তাই কারো সাথে কারো জীবনের মিল নেই প্রতিযোগীতাও নেই তাই প্রতিদ্বন্দীতাও নেই। সবাই সবার মত আলাদা আবার সবাই এক। কারন সবার রূহ বা পরমাত্মা এক। তাই উপরে পার্থক্য থাকলেও সবার মুল এক। কেউ আলাদা নয়। আমিও যা আপনিও তাই।

 আপনিই হলাম আমি আর আমিই হলাম আপনি। আপনাকে আঘাত করা মানে আমাকেই আঘাত করা। পানি যেমন তাপ দিলে বাস্প হয়ে যায় আবার ঠান্ডা করলে বরফ হয়ে যায় কিন্তু নাম আর চেহারা আলাদা হলেও সেটা আসলে সেই হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনই। আবার সেই হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের পরমানু ভাঙলে সেই এনার্জি। সমুদয় বস্তুজগৎ এনার্জির ভিন্ন ভিন্ন রূপ ছাড়া কিছুনা।

এখন আপনি যদি এনার্জির টার্মে নিজেকে দেখতে পারেন তাহলে আপনি সমুদয় বিশ্বজগৎকে দেখতে পারবেন এক ও অভিন্ন সত্তায়। আপনার সামনে যে বসে আছে সে কুকুর হোক বিড়াল হোক আর মানুষ হোক তার সমস্ত গল্প আপনার এক নিমিষে জানা হয়ে যাবে।

মানুষ ভাবে সে একটা প্রাণী এবং তাঁর একটা জীবন আছে । কিন্তু আসল সত্যটা হল সে নিজেই জীবন এবং তার একটা টেম্পোরারী দেহ আছে। এই দুই উপলব্ধির ভিতর আকাশ আর পাতালের তফাত আছে।মৃত্যু বলে আমরা যা ভাবি আসলে সেরকম নয় বিষয়টা। 

মৃত্যুতে কোন কিছু শেষ নয় কারন এনার্জীর কোন জন্ম নেই ধ্বংসও নেই। মৃত্যু হল ট্রান্সফরমেশন। মৃত্যুর সময় মানুষ বুঝতে পারে যে সে আসলে দেহের ভিতর ছিল না বরং দেহ তাঁর ভিতরে ছিল। দীর্ঘ দিনের কঠোর মোরাকাবা বা মেডিটেশন সাধনা করলে আপনিও সেটা আপনার জীবদ্দশায় উপলব্ধি শুধু নয় বরং দেখতে পারবেনা এই কারনেই নিকোলা টেসলা বলেছিলেন, চিন্তা কর Energy, frequency, vibration টার্মে। নিকোলা টেসলার আগে কি কেউ একথা বলেনি ?

শুধু যে বলেছে তাইনা তাঁরা কঠোর সাধনার দ্বারা এমন অনেক কিছু করেছেন এবং করছেন যাকে আমরা মুজিযা বা কারামত বলে থাকি। আমরা এমনই নিম্নস্তরে বসবাস করি যে সেগুলোকে আমরা অলৌকিক বা যাদু বলে থাকি।

 ইসা আ: কে তাঁর সঙ্গীরা একবার জিজ্ঞাসা করেছিল আপনি কিভাবে পানির উপর দিয়ে হাটেন আর কিভাবেই বা পাথরকে সোনায় রূপান্তর করেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ তোমার কাছে কি সোনা আর পাথর সমান ?” সে বলেছিল, না। ইসা: আ: মুচকি হেসে বলেছিলেন, আমার কাছে দুটোই সমান তাই আমি পারি।

কোয়ান্টাম সাইন্সের আর এক দিকপাল শ্রোডিনগার বলেছিলেন, সমস্ত মহাবিশ্ব একটি বিশাল ব্রেইন। “ আর টেসলা বলেন, “ আমাদের ব্রেইন আসলে একেকটা রিসিভার। আমরা মুল সিস্টেমের কাছ থেকে ইনফরমেশন পেয়ে চলি।“ 

মানুষ তাই কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা শুধু আবিস্কার করতে পারে। এর একটি ছোট উদাহারন দিলে বুঝে যাবেন আমাদের দৌড় আসলে কতদুর। আমাদের যদি একটি রাক্ষসের ছবি বা দানবের ছবি আকতে দেয় তাহলে আমরা মানুষের বা কোন জন্তুর মুখ নাক দাঁত বিকৃত করে ছবি আঁকি। কারন আমাদের মস্তিস্কে এ চেনা প্রানীজগতের অভিজ্ঞতা ছাড়া কিছু নেই তাই আমরা সেগুলোকেই দুমড়ে মুচড়ে ভয়ঙকর চেহারা বানিয়ে ছবি আঁকি আর ভাবি এটাই রাক্ষস।

 আমার ফোর ডাইমেনশনের জগতে বসবাস করি। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর ভেদ এবং এর সাথে সময় যোগ করলে সেটা ফোর ডাইমেনশনে দাড়ায়। কিন্তু আরো ডাইমেনশন আছে কমপক্ষে ১০ টি। সেটা আপনি আপনার দেহের ইন্দ্রিয় দ্বারা বুঝতে পারবেন না। 

এটা জানা বা দেখার ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে এবং সে জগত আপনি পৃথিবীর কোন ভাষাতেই বলে বোঝাতে পারবেন না। এটাতে শুধু সে নিজেই যেতে পারবে এবং সে নিজেই বুঝতে পারবে। তাই মানুষ তার দুনিয়ার শিক্ষার বইপত্রের জ্ঞানের একটা পর্যায়ের বাইরে আসলে নিরেট মুর্খ ছাড়া কিছুনা।

সে নিজেই সবথেকে বড় বিস্ময় এবং তার মাঝেই সব আছে কিন্তু সে নিজেকে বাদ দিয়ে বাইরে খোজ করে। সে নিজেই তালা আবার চাবি সে নিজেই, সে নিজেই রোগ আবার রোগের ওষুধও তার ভীতরেই রয়েছে কিন্তু সে তা জানে না। আর সে অজ্ঞ বলেই সে আজ দাস কিন্তু সেটুকু বোঝার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

রুমি বলেন, যারা ক্বলব যত স্পষ্ট তার হৃদয়ে জ্ঞান তত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। কারন এটা বানানোই হয়েছে আয়নার মত করে যাতে মহাবিশ্বের প্রতিচ্ছবি তাতে ধরা পড়ে।

আপনারা জানেন কিনা জানিনা। মানুষের কিন্তু ৩ টি মস্তিস্ক। একটি মাথা, একটি পেট এবং আরেকটি হল হার্ট। আপনারা গুগল করে এ বিষয়ে ভাল করে জেনে নিবেন বিস্তারিত। এই অতীন্দ্রীয় জগতে ঢুকতে গেলে আমরা হার্ট ব্রেইন বা কোরআনের ভাষায় ক্বলব ব্যবহার করে থাকি। 

ক্বলব আসলে কি? এই হার্ট আসলে বিস্ময়কর একটি জিনিস। জার্মানীর Kassel university এর একদল গবেষক তাঁদের গবেষনায় দেখেন যে একজন সাধারন মানুষ তার বুক থেকে যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ২০ ফোটন লাইট পার সেকেন্ড ট্রান্সমিট করতে পারে সেখানে একজন মানুষ যখন মেডিটেশন করে হার্ট সেন্টারে ফোকাস করে এবং অন্যদেরকে যখন এনার্জী বলেন বা ভালবাসা বলেন আর লাইট যাই বলেন না কেন সেটা পাঠান তখন সেটা হয়ে দাড়ায় ১,০০,০০০ ফোটন লাইট পার সেকেন্ড। 

সেটা একজন সাধারন মানুষের থেকে প্রায় ৫০০০ গুন বেশী ! একাধিক গবেষনায় দেখা গেছে যখন কেউ  ভালবাসাকে ধ্যান জ্ঞান মনে করে তখন তার frequency এবং vibration এমন একটি উচ্চ লেভেলে পৌছায় যেটা দিয়ে আক্ষরিক অর্থেই সে matter বা বস্তুকে বদলাতে পারে এবং যে কোন রোগকে দুর করতে পারে এবং কোন নেগেটিভ ইভেন্ট কে পজিটিভ ইভেন্টে ট্রান্সফর্ম করতে পারে।

 ক্বালব বা হার্ট আবার চিন্তা করতে পারে, ভালবাসতে পারে, অনুভব করতে পারে, মনে করতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে এবং ইনফরমেশন ষ্টোর করতে পারে এবং প্রতি হার্ট বিটে সেই ইনফরমেশন সে সারা শরীরে ছড়িয়ে দিতে পারে এবং রিসিভ করতে পারে। এটার আরো যে সব কিছু করতে পারে তা আধুনিক বিজ্ঞান এখনো সে অবস্থায় ধারনা করতেও সক্ষম নয়।

ক্বলব শব্দের অর্থ করা যায় অন্তর। সুরা যুমার এর ২২ নম্বর আয়াতে দেখবেন লেখা আছে, “যার ক্বলব আল্লাহর স্বরনের ব্যাপারে কঠোর সে সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট।“ তার মানে দাড়ায় যতক্ষন আপনার ক্বলবে আল্লাহ আছেন বা আপনি তার স্বরন বা তাঁর frequency এবং vibration এর সাথে এলাইন আছেন ততক্ষন প্রকৃতির আইন অনুযায়ি আপনি সঠিক পথে আছেন এবং আপনার frequency কি করতে পারে তাতো গবেষকরা বলেছেন কিন্তু যখনই আপনার ফোকাস সরে যাবে তখনই প্রকৃতির আইন অনুযায়ী আপনি লোয়ার vibration এ চলে এলেন এবং শয়তানের খপ্পরে চলে গেলেন। 

 বিষয়টা এতটাই সুক্ষ এবং কঠিন।  এ বিষয়ের অবতারনা কেন করছি আর কারেন্সী ওয়ারের সাথেই বা এর কি সম্পর্ক সেটা আস্তে আস্তে বুঝে যাবেন। তাই এই সিরিজের শেষ পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতেই হবে। 

ক্বলব এর কথা কোরআনে এসেছে ১৩২ বার। যার ভরটেক্স নাম্বার হল ১+৩+২ = ৬ । সুরা হজ্বের ৪৬ নাম্বার আয়াতে বলা হচ্ছে, “ তাঁরা কি জমিনে ভ্রমন করে না যাতে তাঁদের হৃদয় চিন্তা অথবা শিখতে পারে এবং তাঁদের কান শুনতে পারে ? বস্তুত তাঁদের চোখ তো অন্ধ নয় বরং অন্ধ তাঁদের বক্ষস্থিত হৃদয়।“

রাসুল সা: বলেন, “ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের শরীর বা আকৃতির দিকে তাকান না, বরং তিনি তোমাদের ক্বলবের দিকেই তাকান।“ ( মুসলিম) আপনার বেশভুষা মাশাল্লাহ বিরাটই শরীয়তি লেবাস দ্বরা আবৃত কিন্তু আপনার অন্তরে ঘৃনা, বিদ্বেষ, হিংসা, ইর্ষা, লোভ, কাম তাহলে আপনার লোক দেখানো পোষাকি ইবাদতের এক পয়সা দাম নেই বরং সেটাই আপনার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। রাসুল সা: আরো বলেন, “ ক্বলব হল সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বাদশাহ ।

 ( মেশকাত ) তিনি আরো বলেন, “ জেনে রেখ মানুষের শরীরের ভিতর এক খন্ড মাংসপিন্ড আছে, যখন তা সংশোধিত হয় তখন সমস্ত দেহই সংশোধিত হয় আর যখন তা দুষিত হয় তখন সমস্ত শরীরই দুষিত হয়। মনে রেখ ওটাই ক্বলব ( বোখারী ও মুসলিম) । আরেক হাদিসে পাওয়া যায় , “ মানুষ যখন পাপ কাজ করে তখন তাঁর ক্বলবের উপর কাল দাগ পড়ে যায়।“

দেখুন ১৪০০ বছর আগে কোরানে হৃদয় যে চিন্তা করতে পারে শিখতে পারে এবং অন্ধও যে হতে পারে সে ব্যাপারে বলা হয়েছে এবং হাদিসেও পরিস্কার করে বলা রয়েছে যার যথার্থতা আজ একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে বের করছেন। দেখা গেছে মানুষ যখন ভয় পায় তখন তাঁর frequency and vibration সবথেকে low থাকে। 

এবং প্রেম বা ভালবাসায় সেই energy, frequency, vibration একলাফে কয়েক হাজার গুন বেশী হয়ে যায়। যে কারনে দেখবেন ওলি আউলিয়াদের সংস্পর্শে থাকাটাকে বড় ইবাদতের অংশ মানা হয়। কারন তাঁদের energy আপনাকে অনায়াসে এমন লেভেলে তুলে নিতে পারে যেটা আপনি বছরের পর বছর কঠোর ধ্যান সাধনা করেও সম্ভব না। 

আপনার ইমাম গাজ্জালী র: এর “কিমিয়ায়ে সা’আদাত বইটা পড়ে দেখতে পারেন। অথবা ইউটিউবে সংক্ষিপ্ত একটি ভিডিও দেখতে পারেন “ Alchemy of happiness” এটা কিমিয়ায়ে সাআদাতেরই ইংরেজী version। আপনারা যারা পশ্চিমা দার্শনিকদের দু চারটা বই পড়ে নিজেদের বিজ্ঞ ভাবেন তাঁরা ইমাম গাজ্জালী পড়ে বুঝে যাবেন তিনি কোন স্তরের এবং তাঁর বহু বই দ্বারা পরে ইউরোপিয়ানরা নিজেদের সমৃদ্ধ করলেও মুসলিমরা মোল্লাদের দ্বারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে বা সত্যি করে বললে পথভ্রষ্ট করানো হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে। 

সে বিষয়ে আপনাদের তথ্য-প্রমান সহ পরে ধীরে ধীরে জানাবো। এবং যদি বইটা পড়ে সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে পারেন তাহলে আপনার আফসোস হবে কেন এগুলো স্কুলের কারিকুলামে যুক্ত হয়নি। অথচ এটা একেবারে প্রাথমিক জ্ঞান হবার কথা ছিল। ডারউইনের ছাই পাশ অপ্রমানিত থিওরী আমাদেরকে শিশুকালেই পশ্চিমারা কেন গিলিয়েছে স্কুলে, সেটাও বুঝে যাবেন। 

সব কিছুরই যোগসুত্র আছে, দরকার শুধু দেখার মত অন্তর । কারন আমরা দুই চোখে যা দেখি কোয়ান্টাম সাইন্স অনুযায়ী তা ইলুশন ছাড়া কিছু নয়। এ কারনে কোরানে আল্লাহ বলেছেন , তাঁদের চোখ তো অন্ধ নয় বরং তাঁদের হৃদয় অন্ধ। এটা যে কতটা মারাত্মক কথা আপনাদের উপলব্ধী হবে না যতক্ষন না আপনার অন্তর চোখ খুলছে বা transformation হচ্ছে। আর এই transformation হলেই আপনি কেবল বুঝতে পারবেন মানব জীবন কি জিনিস এবং আপনি কে ? তাঁর আগ অবধি আপনার সাথে গরু আর ভেড়ার বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। রাগ হচ্ছে তাই না গরু ভেড়া বলেছি বলে ? কিন্তু আমি তো তাও ভাল বলেছি কোরআনে তো আল্লাহ এই ধরনের কিছু মানুষকে জানোয়ারের থেকেও নিকৃষ্ট বলেছেন। কিন্তু এটাই সত্য আপনাদের প্রমান দিয়ে দিচ্ছি ।

সমস্ত প্রানীজগতকে ৩ শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে।

১/ নিম্ন শ্রেনীর প্রানী যেমন- পিপড়া, তেলাপোকা, কেচো, মশা, মাছি ইত্যাদি । এদের পুরোজীবনকাল মাত্র ৪ টি গুন দ্বারা পরিচালিত হয়। যথা- 

ভয়, ক্ষুধা, সেক্স, ঘুম। 

এই ৪ টি ছাড়া এদের আর কিছুই নেই। এরা এই ৪ টি বৈশিষ্ট্য দ্বারা তাঁদের সারাটি জীবন পরিচালিত হয়।

২/ হিংস্র শ্রেনীর প্রানী। যেমন- বাঘ, সিংহ, কুকুর, নেকড়ে ইত্যাদি । 

এদের আগের ৪ টি সহ আরোও ৪ টি বৈশিষ্ট্য বা গুনাবলী দ্বারা পরিচালিত। 

সেই ৪ টি হল এদের রাগ আছে,

 দেখবেন এরা যখন তখন ক্ষিপ্ত হয়। অর্থাৎ হিংস্র স্বভাবের।

এরা লোভী । যেমন আপনি এক পোটলা খাবার সামনে ঝুলিয়ে একটা কুকুরকে ১০ মাইল হাটিয়ে নিয়ে যেতে পারেন ।

 কুকুরের একবারের তরেও মনে হবেনা যে আপনি তাঁকে মাংস দেবেন কি দেবেন না। সে পিছু পিছু যেতেই থাকবে। 

এরা দখলদারি স্বভাবের। দেখবেন এরা গাছের গায়ে পেশাব করে। এটা করে তাঁদের এলাকা চিহ্নিত করার জন্য । যাতে এদের কোন স্বজাতি এই পথ না মাড়ায়। আর যদি তাঁরা ঢুকে পড়ে তার মানে হল সে তাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অতএব অবধারিত ফাইট।

 এরা হিংসুটে স্বভাবের হয়। দেখবেন, নিজের খাবার থাকা সত্বেও এরা আরেকজনের খাবারে ভাগ বসায় এবং মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।

৩/ উচ্চ শ্রেণীর প্রাণী। এই তালিকায় আমরা শুধু মানুষই আছি । 

তো এদের স্বভাবে উক্ত ৮ ধরনের গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান এবং আরো ৪ টি দেখা যায় ।

 মোট তাহলে দাড়ায় ১২টি। বাড়তি ৪ টি হল। 

মানুষ মিথ্যা বলে যেটা প্রানীজগতের কেউ বলেনা।

মানুষ প্রতারনা করে যেটা প্রানী জগতের কেউ করেনা। 

মানুষ অহংকার করে যেটা প্রানীজগতের কেউ করেনা। 

এবং এরা ইর্ষাকাতর বা পরশ্রীকাতর এরা আরেকজনের ভালকে সহ্য করতে পারেনা। 

বলা বাহুল্য খেয়াল করে দেখবেন এই ৪ টি স্বভাব আসলে শয়তানে। শয়তান আদমের কাছে গন্ধম (রূপক) এর ব্যাপারে মিথ্যা বলে প্রতারনা করেছিল কারন সে আদমকে ইর্ষা করেছিল, আর ইর্ষা এসেছিল তার ভিতরে কারন সে অহংকার করেছিল। একটি আরেকটির সাথে যুক্ত। 

এবার আপনারা আমাকে বলেন মানুষের ভিতর এই সব নিম্নশ্রেনীর প্রানীদের গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য এবং শয়তানের গুনাবলী থাকা অবস্থায় সে কিভারে সৃষ্টির সেরা বলে নিজেকে দাবী করতে পারে ? বরং শয়তানের ওই ৪টি গুনাবলী যতক্ষন তাঁর ভিতর আছে তার একটি পরমানু সমান ইবাদতই কবুল হবে না। এটাই আইন।

 আপনারা বলতে পারেন মানুষের ভীতর দয়া আছে মমতা আছে, সহমর্মিতা আছে, সে অপরকে কেন স্বার্থহীনভাবে হেল্প করে। খুব ভাল। কিন্তু আপনি জানেন কি এগুলো আসলে কার গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য ? আল্লাহর ৯৯ টি নাম বা আসমাউল হুসনা পড়ে দেখেন তাহলে বুঝে যাবেন। এখনো বোঝেননি ? ভাল, আপনার বাম হাতের তালু খুলুন । দেখবেন ওখানে দুইটা চিহ্ন আছে পাশাপাশি একটি হল ‘^’ আরেকটি হল আলিফের মত খাড়া দাগ ‘1’ । 

আরবীতে ৮ লেখা হয় ^ চিহ্ন দিয়ে এবং আলিফ মানে ১ ধরা হয় । তারমানে আপনার বাম হাতে ৮১ বা ৮+১ =৯ । এবার আপনার ডান হাতের তালু খুলুন দেখবেন এখানে আছে ১৮ বা ১+৮=৯ । ভরটেক্স নাম্বার অনুযায়ী ৯ হল সর্বচ্চ নাম্বার। (২য় পর্ব পড়ে নিবেন) এতে মানুষের উচ্চতা এবং মর্যাদাকেই  প্রতিনিধিত্ব করে। কেন করে ? দুই হাতের তালু এক করেন ৮১+১৮ = ৯৯ । আপনি আসলে কে তাহলে ? কিছু বুঝেছেন ? আল্লাহ তাহলে কোথায় আছে ? কোরানে কিনতু বলাই আছে মহাধমনীর থেকেও নিকটে । হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়ার র: প্রধান খলিফা হযরত আমির খসরু র: লিখেছিলেন।

“ আমি তুমি হলাম,

তুমি আমি হলে,

আমি দেহ হলাম,

তুমি প্রান হলে,

যেন কেউ বলতে না পারে

আমি একজন আর তুমি আরেকজন”।

বিষয়টা কি দাড়াল তাহলে ? আপনাকে আসলে প্রতিনিয়ত আল্লাহর গুনাবলী নিজের ভিতর দিয়ে প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই আপনি ‘খলীফা’ হবেন। যে কারনে আপনি এখানে। তাহলে এই মহাবিশ্ব শুধু অপারেট নয় বরং নিজেই ইচ্ছামত program করতে পারবেন। সমগ্র সৃষ্টিজগত আপনার অধীন তখন, আপনি যা বলবেন তাই হবে। আল্লাহ কোরআনে একটি আয়াতে বলেছেন, “ তোমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হয়ে যাও” ( ২:১৩৮) । কি সুন্দর অনুমতি। 

কিন্তু আপনার ভিতর ওই ১২ টি জিনিস থাকা যাবেনা। আপনি বলবেন তাহলে কি ঘুমাব না ? ঘুমাবেন কিন্তু আপনার হৃদয় কখনো ঘুমাবেনা সদা জাগ্রত থাকবে। এরকমভাবে বাকিগুলোকেও আপনি সিস্টেম মত চালাতে পারবেন। এ বিষয়ে আর বলা উচিত হবে না বলে বিরত থাকলাম। এখন আপনি বলতে পারেন হাতের রেখায় আরবী ভাষায় দেখতে কেন হবে ? জ্বী এর উত্তর আছে কিন্তু এখন বলব না। পরে আসব সে বিষয়ে।

এইযে energy এটাকে আবার universal currency বলা হয়। আপনি যখন কোন কিছুতে ফোকাস করেন বা মনোনিবেশ জ্ঞাপন করেন তখন আসলে আপনি আপনার নিজের বরাদ্দকৃত energy currency থেকে খরচ করলেন। একারনে আমাদের নবী রাসুল ওলি আউলিয়ারা বারবার বলে গিয়েছেন এবং নিজেরা নিজেদের ওই লেভেলে নিয়ে গেছেন যেখানে গেলে এই energy currency কে সঠিকভাবে সঠিক স্থানে খরচ করা যায়। 

এখানে আবার ব্যাক্তিগত ফোকাস এবং সম্মিলিত ফোকাসের প্রভাব জড়িত আছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের উপর এবং পৃথিবীর সমুদয় প্রানীজগতের উপর। এটাকে বলে collective consciousness । কারন এই পৃথিবীটাকে আমরা যেভাবে দেখি সে কিন্তু মোটেও সেরকম না। সে নিজেই একটা সিস্টেমে চলে এবং নিজেই একটি প্রান এবং তাঁর নিজস্ব frequency আছে বাকি সবার মতই । আমরা যে একজন আরেকজন থেকে আলাদা ভাবি যদিও কোয়ান্টাম লেভেলে বা হাকিকতে তা নই সেটা আসলে আমাদের আলাদা আলাদা frequency বা vibration এর কারনে এমনটা হয়। একারনে দেখবেন সবাইকে সবার ভাল লাগে না, কাউকে কাউকে ভাল লাগে কারন এই যে frequency বা vibration সেটার match হওয়া না হওয়ার উপর নির্ভর করে।

 আর যখন মানুষ প্রেমে পড়ে এবং তাঁর ভালবাসা যত তীব্র হয় তাঁর প্রেমাস্পদের প্রতি তখন তাঁর frequency এবং vibration সবথেকে high থাকে যে কারনে সে অদ্ভুত এক সুন্দর জগতে বাস করে যে জগতে ময়লা ডাষ্টবিন আর জ্যামের শহর ঢাকাও তার কাছে গার্ডেন অব ইডেন মনে হয়। এবং তার প্রেমাস্পদের সাথে তার frequency আর vibration এক হয়ে যায়। একটা fusion ঘটে যায়। 

এবার একবার ভাবুন তো যে আল্লাহর প্রেমে পড়ে তার  frequency আর vibration এর কি অবস্থা হয়! তখন সারা মহাবিশ্বের সমস্ত frequency আর vibration তার frequency আর vibration সাথে match করার জন্য রীতিমত প্রতিযোগীতা করতে থাকে। সারা জগত তখন তাঁর পিছনে আঠার মত লেগে থাকে। তাঁদের সবার ভাষাই সে বোঝে এবং সবাই তাঁর ভাষা বোঝে। যেহেতু পুরো মহাবিশ্ব submission form এ বসবাস করে এবং যেহেতু মানুষকে সৃষ্টিই করা হয়েছে খলিফা হিসেবে সেহেতু তখন সমস্ত সৃষ্টিজগত তাঁর আজ্ঞাবহ হয়ে যায়। কারন তারা প্রথমেই আদমকে সেজদা করে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেছিল। কেন করেছিল ? কারন আল্লাহ আদমের ভিতর নিজ রূহ ফুকে দিয়েছিলেন। আহাদের দম থেকেই আদম। 

আর যেহেতু আহাদ মানে অখন্ড সত্বা বা যাকে খন্ডন করা যায়না সেহেতু আদমের ভিতর স্বয়ং আল্লাহই বসবাস করেন। কিন্তু মানুষকে সেই রূহকে জাগ্রত করা লাগে। কোরানে বলা আছে দেখবেন “প্রত্যেক নফস মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে।“ কিন্তু কোরানে কোথাও লেখা নেই “প্রত্যেক রূহ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে।“ কারন রূহ স্বয়ং আল্লাহর অংশ তাঁর মৃত্যু নেই।

 কিন্তু মোল্লারা এত বড় মুর্খ আর বেয়াদব যে তারা মানুষ মরলে রূহের মাগফেরাত কামনা করে অথচ মরেছে নফস, পাপ করেছে নফস। মানে আল্লাহর কাছে তাঁরা আল্লাহরই পাপের মাগফেরাত কামনা করছে। কি হাস্যকর। এই যে ভুল এটা যে কত মারাত্মক ভুল সেটা আরো সামনে যত যাবেন ততই টের পাবেন। একটা ভুল কিভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে অথচ তারা নিজের ভুলটাই না বুঝে ইহুদি নাসারা শয়তানের দোষ দিয়ে বেড়াচ্ছে ।

 একারনেই আল্লামা ইকবাল বলেছিলেন, “মোল্লারা কোরআনের যে তাফসির করেছে তাই দেখে স্বয়ং আল্লাহ তার রাসুল এবং জীবরাইল তাজ্জব বনে গেছে।“ ভুল যদি এই একটা হত তাহলেও মেনে নেয়ে যায় কিন্তু হাজার হাজার ভুল। যেকারেন জর্জ বার্নার্ড শ বলেছিলেন, “ইসলাম হল শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর মুসলিমরা হল তার নিকৃষ্ট অনুসারী”। তিনি আরো বলেছিলেন, যারা বিশ্বাস করে তাঁদের ইশ্বর আকাশে বসবাস করে তাদের থেকে সবসময় দুরে থাকবা কারন তাঁদের মত বিপজ্জনক কেউ নেই।“ এটা যে কত বড় সত্য সেটা আরো সামনে গেলে টের পাবেন।

তো আমরা যথন কোন নেগেটিভ বা আননেচারাল কিছু করি তখন সেটা সরাসরি তাঁর সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। যত ছোটই হোকনা কেন তার সরাসরি প্রভাব এই সিস্টেমের উপর পড়ে। আমাদের ব্যক্তিগত কাজ বা কথার বা চিন্তার প্রভাব যেমন পড়ে তেমন সম্মিলিত কাজ বা collective consciousnesses এর প্রভাব পৃথিবীর উপর পড়ে।

 আপনি যেমন উচু পাহাড়ের পাদদেশে দাড়িয়ে জোরে চিৎকার দিলে সেটার প্রতিধ্বনি ফিরে আসে এই পৃথিবীটাও তেমনি। আপনি যা করবেন সে তাই ফিরিয়ে দেবে। ভাল করলে ভাল খারাপ করলে খারাপ ফিরিয়ে দেবে। যখন সে সেটা ফিরিয়ে দেবে সেটা তাঁর নিজের ষ্টাইলেই ফেরত দেবে যেটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। কখনো কখনো সে এটা বাছবিচার না করেই সবার উপরেই ফেরত দেবে এবং তখন ভাল খারাপ সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 

আর এটাকেই আমরা ধর্মের ভাষায় আযাব বলে থাকি। কারন যেহেতু সে নিজেই একটি সত্তা সেহেতু সে তাঁর নিজের সিস্টেমের সুস্থতার জন্য বা নিজের ধর্ম অনুযায়ী বা প্রোগ্রাম অনুযায়ী যেটাই বলেন না কেন সে সেটা করবে তার ভারসাম্য ঠিক রাখতে। 

যেহেতু মহাবিশ্বের সবকিছুই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি সেহেতু এখানে চিন্তার অতীত নিখুত ভারসাম্য বজায় রেখে সৃষ্টিজগতকে চলতে হয়। ভারসাম্য একটু এদিক ওদিক হলেই পুরো সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে চোখের পলকে। ভাল কাজ, কথা কিংবা চিন্তার প্রভাব যেমন এই সিস্টেমের উপর পড়ে তেমন উল্টাটাও হয়। কারন কাজ কথা চিন্তা সবই শক্তির একেকটি রূপ।

ভুপৃষ্ঠে যেমন একটা টেকটোনিক প্লেটের সাথে আরেকটি টেকটোনিক প্লেটের সবসময় চাপাচাপি ঘষাঘষি লেগে থাকে যে কারনে ভুমিকম্পের উতপত্তি হয়। 

ঠিক তেমনি ভাল আর মন্দ দুটি শক্তির সবসময় ফাইট নিরন্তর চলছে সৃষ্টির শুরু থেকেই। এবং চলতেই থাকবে । এটাই মহাবিশ্বের ধর্ম। আজ যদি এখানে একজন চোর মারা যায় তাহলে পৃথিবীর আরেকজায়গায় আরেক চোরের জন্ম হয়।

 যদি আরেক জায়গায় কোন ভাল মানুষ মারা যায় তাহলে এখানে আরেকজন ভাল মানুষের জন্ম হবে। সিস্টেম একইরকম থাকবে কিন্তু প্রতিটা দিনই আবার আলাদা, গল্প, চরিত্রও আলাদা কিন্তু মুলভাব বা essence সেই একই ।

 তাই যারা মনে করেন যে শয়তান বলে কিছু নেই বা কোন শক্তি নেই তার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ বলেও কিছু নেই বা ভাল শক্তি বলেও কিছু নেই। এখন আপনি বলবেন, শয়তান বিষয়টি বা তার পুজা করা বিষয়টা উদ্ভট। হুম... তাহলে যে লোক দলে দলে মসজিদে যায় সেটা উদ্ভট লাগে না ? উত্তর নেই। এটা উদ্ভট লাগে না কারন জন্ম থেকেই আপনি এটা দেখে আসছেন। যেহেতু শয়তানের পুজার বিষয়টি আপনার অজানা বা সচরাচর দেখা যায়না তাই আপনি সেটা মেনে নিতে পারছেন না। 

অথচ কোরানে শয়তানকে ৮৮ বার উল্লেখ করা হয়েছে। শয়তানকে ৪ টা নাম দেয়া আছে। নাম ৪ টি হল- শয়তান, ইবলিশ, মরদুদ এবং খান্নাস। বলা হয়েছে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। কিন্তু না আপনি তাঁকে দেখতে পারছেন, না আপনি তাঁকে চিনতে পারছেন । কারন আপনি অজ্ঞ তাই।

 আপনি জানেন না কোথায় তাঁর আবাস কি তার অস্ত্র বা কোন সিস্টেমে কিভাবে সে আক্রমন করে। ৪ টি নাম কেন দেয়া হয়েছে আর কিভাবে সে কাজ করে বা কি তার অস্ত্র সবই জানাব। যদি বলেন ভাই আমি আপনার কোরান কেও বিশ্বাস করিনা । অসুবিধা নেই। অংক তো বিশ্বাস করেন নাকি, যে ২ আর ২ এ ৪ হয়, ৫ হয়না ? তাতেও হবে । সেভাবেও বুঝতে পারবেন।

(  আমি এই লেখা যেভাবে লিখছি তাতে যারা বিজ্ঞান বিশ্বাস করেন তারা তাঁদের মত করে বুঝবেন যারা ধর্ম বিশ্বাস করেন তাঁরা তাঁদের মত করে বুঝবেন আবার যারা রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন তাঁরা তাঁদের মত করে বুঝে যাবেন।

আর যারা তিনটাই বুঝেন তাঁরা আরো ভাল ভাবে ছবিটা পরিস্কার বুঝতে পারবেন। তবে অন্ধবিশ্বাসীদের জন্য লিখছিনা আমি অতএব আপনারা ঘুমিয়ে আছেন ঘুমিয়েই থাকুন। লেখাটা ভালভাবে বোঝার বা উপলব্ধি করার একটা ফরমুলা দিচ্ছি আপনাদের, সেটা হল যখনই নতুন কোন পর্ব পড়তে যাবেন তখনই শুরু করবেন একদম ১ম পর্ব থেকে । 

কারন আমি একটি বিষয়ে থেকে চট করে আরেকটি বিষয়ে লাফ দিচ্ছি , দেখা যাবে ১ম পর্বে একটি বিষয় অর্ধেক লিখে ছেড়ে এসেছি সেটার বাকিটুকু দেখা যাবে লিখছি ৩য় পর্বে আবার ২য় পর্বে ছেড়ে এসেছি যেটা সেটা জোড়া লাগছে ৫ম পর্বে এসে। আর আপনারা গড়গড় করে রিডিং পড়ার মত করে পড়লেও আবার এটা কিছু বুঝবেন কিছু বুঝবেন না। )  

মুলত তাঁদের জন্যই এই লেখা যাদের জ্ঞানের নেশা আছে। তাই বাকিরা এমনিতেই হতাশ হয়ে দুরে চলে যাবেন।

বস্তুজগতের ধর্ম অনুযায়ী কোন স্থান ফাঁকা থাকবে না। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় আমরা যখন সিরিঞ্জ দিয়ে শরীর থেকে রক্ত টেনে বের করি তখন কিন্তু আমরা আসলে রক্ত টেনে বের করিনা বরং বাতাস টেনে বের করি যে কারেন রক্ত বাতাসের জায়গা দখল করার জন্য সিরিঞ্জের ভিতর ঢুকে পড়ে।

 তাই আপনি যদি নিজেকে না জানেন তবে আপনি আসলে শয়তান দ্বারা পরিচালিত একজন মানুষ।

 যতই আপনি হাদিস কোরআন পড়ে মুফতি হন বা নামাজ পড়ে কপালে দাগ ফেলে দেন না কেন আপনি শয়তানের হাতের পুতুল ছাড়া কিছুনা। কেন সে বিষয়ে পরে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব। আর এব্যাপারে এই সিরিজের প্রথম পর্বে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করেছি পড়ে নিবেন।

সুন্নাতআল্লাহ বা এই Oneness বা তৌহিদের কোথাও শয়তানের থাকার জায়গা নেই শুধু দুটি স্থান বাদে। সেটা হল জ্বীন এবং ইনসানের হৃদয়ে। তাই প্লেটো, এরিষ্টটল থেকে শুরু করে শেষনবী মোহাম্মদ সা: পর্যন্ত সবাই বলে গেছেন Know Thyself বা নিজেকে জানো। 

মানুষ হল সমস্ত মহাবিশ্বের একটি মিনিয়েচার ফর্ম। আমরা যে পরমানু দিয়ে তৈরী তাঁর সৃষ্টি এই পৃথিবীতে নয় এমনকি এই সৌরজগতের সৃষ্টির বহু আগে কোন সুপারনোভা বিষ্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্ট কনা দিয়ে। এই কারনে বিজ্ঞানী Carl sagan বলেন we are all star dust । 

তাঁর আগে বলে নেই খাজারিয়ান জিয়নিষ্টরা এই collective consciousness বা যেটাকে আমরা energy currency বলছি সেটাও তারা বহুঅংশে নিয়ন্ত্রন করছে অনেকদিন ধরে। তাঁদের এই Mind control টা তাঁরা করছে ৩ ভাবে। একটা এডুকেশন সিস্টেম দিয়ে আরেকটা মিডিয়া তথা ইন্টারনেট, টিভি, সিনেমা দিয়ে এবং আরেকটা পলিটিক্স দিয়ে।

১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫৫ সালের ভিতর জিয়নিষ্টরা মোট ১০০০ নাজি জার্মান সাইন্টিষ্টকে “অপারেশন পেপারক্লিপ” এর মাধ্যমে জার্মানী থেকে আমেরিকায় বিভিন্ন গবেষনার কাজে এবং বিভিন্ন সংস্থায় নিয়োগ দেয়। তাঁর ভিতরে Warner Von Braun কে NASA Admin পোষ্টে, Arthur Rudolph কে NASA Scientist পোষ্টে, Sidney Gottlieb কে CIA/ TSS/ MK Ultra তে নিয়োগ দেয়। এই নাজি সাইন্টিষ্টরাই আমেরিকার এবং রাশিয়ার রকেট ইঞ্জিন তৈরী করে দেয়। 

বাকি সাইন্টিষ্ট এবং গেষ্টাপো বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন Top secret মিশনে লাগানো হয় যার ভিতরে হিটলারের  পিউর বা খাটি আরিয়ান বা আর্য রক্তের বংশ সৃষ্টির একটি প্রজেক্ট ছিল সেটা তাঁরা আমেরিকাতেও চালু রাখে। রক্তের এই বিশুদ্ধতা রক্ষা করা তাঁদের কাছে একটা মহাগুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। যেহেতু তারা রেসিস্ট একারনে এটা তাদের কাছে একটা ইবাদতের মত।

 ইহুদিরাও এটা করে থাকে আবার হিন্দুদের ভিতর ব্রাহ্মনরাও এটা করে থাকে বিয়ে শাদির ক্ষেত্রে কিন্তু হিটলার রীতিমত ল্যাবরেটরীতে প্রজেক্ট খুলে বসেছিল। ব্রাহ্মনরাদের কথাটা মাথায় রাখবেন। এই যে মিল দেখতে পান ইহুদিদের সাথে সেটা বোধহয় এমনি এমনি নয়। পিলে চমকানো একটা তথ্য আছে সে  ব্যাপারে সামনে লিখব।

নাজিরা আমেরিকাতে যাবার পরেও এটা চালু রাখে এবং আমেরিকার ইউটাহ তে এবং আরোও কিছু শহরে এটা আবার নতুন করে শুরু করে । আমরা সবাই জানি এবং বিশ্বাস করি যে নাজিরা হেরে গিয়েছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধে কিন্তু সত্যটা হল নাজিরা হারেনি বরং তাঁরা ভোল পাল্টিয়ে আমেরিকান হয়ে গিয়েছিল এবং নতুন করে আবার তাই শুরু করেছিল যা তারা হিটলারের হয়ে করত। 

তাঁরা শুধু হিটলারকে সরিয়ে দিয়েছে এবং জার্মানীকে ধ্বংস করে তাঁদের জাপানীদের মতই ইচ্ছার দাস বানিয়েছে এবং সেই সেট আপটাই তাঁরা আবার আমেরিকাতে চালু করেছে বিভিন্ন করপোরেশনের ব্যানারে। অপারেশন পেপারক্লিপ সে কথাই বলে। আপনারা এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত নেট ঘেটে বের করে নিয়েন। বলা বাহুল্য এরা মনে করে বা বিশ্বাস করে বা সত্যও হতে পারে  যে এরা মিশরের ফেরাউনদের বংশধর। আর মিশরেও ফেরাউনরাও BAAL এর উপাসনা করত। এবং তাঁদের যাদু বিদ্যার কথা তো বাইবেল এবং কোরআনেও উল্লেখ আছে ।

সব কিছুর শুরু ইরাকের উর শহর থেকে। সুমেরীয়দের এই শহরেই BAAL এর উপাসনার শুরু এবং শয়তানিজমের জন্ম। অদ্ভুত ঘটনা হল এই উর শহরেই একই সময় ইবরাহীম আ: জন্ম।  যার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের শেষ পর্যায়ের শুরু। কাকতালীয় ? nope যারা universal system সম্পর্কে জানেন তাঁরা খুব ভাল করেই জানেন যে এটা পরিকল্পিত। 

এই ইবরাহীম আ: যার হাত ধরেই ৩ ধারার Abrahamic religion এর শুরু। তিনিই ইহুদী, খৃষ্টান এবং মুসলিমদের ধর্মীয় জাতির পিতা। এবং এক্ষেত্রেও আমরা একই বিস্ময়কর ঘটনা দেখতে পাই আর সেটা হল ইবরাহীম আ: এর জন্মের পর থেকে সব নবী রাসুল জন্মের ক্ষেত্রেও এই একইভাবে রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করা হয়েছে । আল্লাহ  এই একই ইবারাহীম আ: এর বংশে সব নবী রাসুল পাঠিয়েছেন যাদের নাম আমরা কোরানে দেখতে পাই। এটা কি কাকতালীয় ?

মোটেও না। মহাবিশ্বে কাকতালীয় বলে কোন কিছু নেই। সেটা আরো সামনে এগিয়ে দেখতে পাবেন।

 এটা যেমন দুইটা শক্তির লড়াই তেমনি একইভাবে এই দুই শক্তি দুইটা blood line কে প্রতিনিধিত্ব করছে আমরা দেখতে পাই। মাথায় রাখবেন এই blood line এর কথা কারন এটার উপর পুরো ইসলাম বা একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং শয়তানের ধর্মের এবং আমার আপনার সবার জীবন সবকিছু নির্ভর করছে। এবং এটার উপরই এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। 

এই কাহিনীর শুরু একই শহরে এবং একই সময়ে। অতএব আমি এর পরের গল্প এভাবে্ই নিয়ে যাব। । তাহলে পুরো ছবিটা আপনারা পরিস্কার দেখতে পারবেন এবং এতদিন যে ভুল জেনেছেন কিংবা আরো ভাল করে বললে ভুল জানানো হয়েছে কোথা থেকে ভুলের শুরু এবং তার খেসারতটা কতখানি সেটাও পরিস্কার বুঝতে পারবেন।

১ম পর্ব বলেছিলাম মায়ানরা ৬ হাজার বছরের cycle এর কথা বলেছিল এবং তারা বিশ্বাস করত এবং জানত যে প্রতি ৬ হাজার বছর পর পর পৃথিবী আগের সিস্টেমকে ধ্বংস করে আরেকটা নতুন সিস্টেমের জন্ম দেয়। পাত্র পাত্রী বদলে যায় কিন্তু খেলার ধরন একই থাকে। তাই যদি হযে থাকে এবং আপাতদৃষ্টিতে তাই মনে হচ্ছে যে আমরা সেই ৬ হাজার বছরের সাইকেলের শেষ ২০-৩০ বছর দেখছি। নতুন সিস্টেম অলরেডী চালু হয়ে গিয়েছে ।

ইবরাহিম আ: এর দুই বউ। বড় বউ এর নাম সারাহ। তাঁর বাচ্চা হত না। যে কোন কারনেই হোকনা কেন তাঁরা নিজের শহর থেকে মিশরে যায়। এবং হাজেরা বা বাইবেলের হেগার নামক মিশরীয় এক প্রিন্সেস এর সাথে নবী ইবরাহিম আ: ২য় বিয়ে হয়। এবং হাজেরার গর্ভে ১ম সন্তান ইসমাইল আ: এর জন্ম হয়।

যিনি নিজেও নবী ছিলেন। বাচ্চা হবার পর সারাহ হাজেরার প্রতি তীব্র ইর্ষার কারনে সংসারে অশান্তি ডেকে আনে। তারপর আমরা দেখি ইবরাহীম নবী সংসারের ঝামেলা এড়াতে কিংবা আল্লাহর নির্দেশে হাজেরা এবং শিশু ইসমাইলকে নিয়ে ততকালীন হেজাজ এবং এখনকার মক্কার মরুতে রেখে চলে যান। যেখানে এখন কাবা সেখানে তখন জনমানবহীন ধুধু মরুভুমি ছাড়া কিছুই ছিল না।

পানির পিপাসায় শিশু ইসমাইল কান্না শুরু করলে মা হাজেরা পানির খোজে একবার সাফা পাহাড়ে একবার মাওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। যে কারনে হাজিরা হজ্ব করতে গিয়ে সেই হাজেরার স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ৭বার সাফা মাওয়াতে দৌড়াদৌড়ি করে।

যা হোক তিনি ৭ চক্কর লাগানোর পরে দেখেন শিশু ইসমাইলের পায়ের নীচ থেকে পানির ফোয়ারা ছুটছে। তাই দেখে তিনি কিছু পাথর দিয়ে পানিতে বাধ দিয়ে দেন। এটাই সেই বিখ্যাত জমজম কুয়া। এই পানি দেখে আকাশে পাখি উড়তে থাকে আর পাখি ওড়া দেখে বেদুইনরা পানির খোঁজে জমজমের কাছে আসে এবং এভাবেই জনমানবহীন মরু মক্কাতে মানুষের বসতি আরম্ভ হয়।

ওদিকে কিছু দিন পর দেখা গেল বড় বউ সারাহর বাচ্চা হল তার নাম ইসহাক বা আইজাক। তিনিও নবী ছিলেন। ইসহাকের ছেলে হল এবং তার নাম হল ইসরাইল। তিনিও নবী ছিলেন। ইসরাইলের ১২ জন ছেলে ছিল আর এই ১২ জন ছেলের বংশকেই কোরানের বনী ইসরাইল বলা হয় বা ইহুদি বলা হয়। মুসা বা মোজেস, হারুন বা এ্য্যরন, দাউদ বা ডেভিড, সোলায়মান, জেসাস বা ইসা আ: সবাই এই বংশের নবী রাসুল ছিলেন। কোরানে টোটাল ২৫ জন নবীর কথা বলা আছে যার অধিকাংশই ইহুদি বা ইবরাহীম আ: এব বড় বউএর সন্তান।

এদিকে কিছু দিন পর আবার আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহীম নবী যাকে আল্লাহ খলীলূল্লাহ উপাধী বা আল্লাহর বন্ধু উপাধী দিয়েছেন তিনি মক্কায় আসলেন এবং আল্লাহর নির্দেশে কাবা ঘর পুননির্মানে হাত দেন বা তৈরী করেন। কথিত আছে আগে থেকেই এখানে কাবা ঘর ছিল কিন্তু ধ্বংস হয়ে বালুর নীচে চাপা পড়ে ছিল। বাপ বেটা মিলে কাবা ঘর নির্মান করেন। 

তারপর ইসমাইলকে কুরবানির কাহিনী সবাই জানেন। নবী ইবরাহিকমকে বলা হয়েছিল তাঁর প্রিয় বস্তুকে কুরবানী করতে। সব নবীদের মত তিনিইও সেল্ফলেস ছিলেন বা ইগো বা আমিত্ব ছিল না তাই তার সব থেকে প্রিয় ছিল তার ছেলে ইসমাইল তাই তাকেই কুরবানী করতে গেলেন। হাকিকতে আমাদের প্রিয় বস্তু হল আমিত্ব বা আমাদের নফস বা ইগো। কুরবানী করার কথা আমাদের সেটা কিন্তু আমরা সেটা না করে গরু ছাগলের উপর দিয়ে চালিয়ে দেই। যাক সে কথায় পরেও আসা যেতে পারে। এই নবী ইসমাইলের বংশেই আসলেন শেষ নবী মোহম্মদ সা: । 

আর ইসমাইল আ: বংশই হল আরব বংশ। তারমানে হল আরব আর ইহুদিরা একই বাপের দুই বউএর রক্ত ধারা। ইসমাইল আ: আর শেষ নবীর মাঝে কোন নবী আসেনি হাজেরার এই ধারায় সুদীর্ঘ প্রায় ৩ হাজার বছর। ইহুদীরা কোনকালেই হাজেরাকে মেনে নিতে পারেনি। বলত সে ছিল দাসী এবং বিচিত্র কারনে বা অহংকারের কারনে ঘৃনা করত।  

ইহুদিদের কিতাবে শেষ নবীর আসার এবং সে কিরকম হবে না হবে সব কিছুর নিখুত বর্ননা দেয়া ছিল। এবং ইহুদি পন্ডিতরা দীর্ঘ সময় ধরে শেষ নবীর অপেক্ষা করছিল যে তাঁদের বংশেই শেষ নবীর জন্ম হবে। 

এ কারনে যখন কোন ব্যবসার কারনে যখনই আরবদের সাথে ইহুদিদের ঝগড়া হত তখনই ইহুদীরা আরবদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলত যেদিন আমাদের শেষ নবী আসবে সেদিন তোমাদের আমরা দেখে নেব। কিন্তু শেষ নবী আসলেন ঠিকই এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই ইবরাহিমের বংশেই কিন্তু আরেক বউ এর ধারায় আর এখানেই অহংকারী ইহুদিরা সব জেনেও মুখ ফিরিয়ে নিল এবং শেষ নবীকে হত্যার সব রকম চেষ্টাই তাঁরা করেছিল। 

সিরিয়ার খৃষ্টান যাজক বাহিরা  শেষ নবীকে ১২ বছর বয়সেই সর্বপ্রথম চিনে ফেলেন যে তিনিই শেষ নবী।

তখন তিনি চাচা আবু তালিবের সাথে সিরিয়া যাচ্ছিলেন কাফেলার সাথে। ২য় ব্যাক্তি যিনি শেষ নবীকে চিনেছিলেন তিনি হলেন আরেক পন্ডিত ওয়ারাকা বিন নওফেল। এবং আল্লাহ নিজেও কোরআনে বলেছেন শেষ নবীকে উদ্দেশ্য করে যে, তাঁরা তোমাকে নিজ সন্তানকে যেভাবে চিনে সেভাবেই চিনে কিন্তু তাঁরা তোমাকে মানবেনা। 

সবাই জানে যে মুসলিমদের প্রথম কেবলা ছিল যেরুজালেম এবং তাঁরা সালাত আদায় করত জেরুসালেমের দিকে তাকিয়ে। সব চেষ্টা যখন বিফলে গেল তখন আল্লাহ মুসলিমদের কেবলা বদলে দিলেন এবং কাবাকে নতুন কেবলা নির্ধারন করে দিলেন।

ইহুদীরা বরাবরই নবীর ধারাতে ছিল বলে তারা উচ্চ শিক্ষিত ছিল। এবং জ্ঞান গরীমায় তাঁরা ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। তাদেঁরকে একারনে আহলে কিতাব বলা হয়েছে কোরআনে বা তাঁরা আসমানী কিতাবধারী। 

আর অন্যদিকে আরবদের মাঝে ইসমাইল আ: থেকে  শেষ নবীর ভিতর এই ৩০০০ বছর কোন নবী না থাকার কারনে তাঁরা একটি জঘন্য এবং নিকৃষ্ট জাতিতে পরিনত হয়ে পড়েছিল পৃথিবীর বুকে। হেন খারাপ কাজ নেই যে তাঁরা করত না।

 আইয়ামে জাহেলিয়াত এমনি এমনি বলেনি। প্রচন্ড গোত্রপ্রীতি ছিল। এবং এক গোত্রের সাথে আরেক গোত্রের যুদ্ধ বিবাদ লেগেই থাকত। দেখা গেছে শুধু উটের পানি খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে তারা ১০০ বছর অবধি খুনাখুনি চালিয়ে গেছে। রাসুল সা: যে কুরাইশ বংশে জন্মেছিলেন তাঁরা ছিল আরবের সবথেকে ধনী এবং অভিজাত বংশ।

 কুরাইশরা আবার দুইধারায় বিভক্ত ছিল বনু হাশিম এবং বনু উমাইয়া। বনু হাশিমরা ছিল মক্কার নেতা এবং এই রক্তের ধারায় শেষ নবীর জন্ম। এরাই ছিল কাবার দেখভালের দায়িত্বে । এবং সন্দেহাতীতভাবেই এই ধারাতে কেউ মুর্তি পুজা করতনা। করাটাই অসম্ভব।

কারন রক্তের শুদ্ধতা স্বয়ং বিশ্ব জাহানের মালিক বজায় রেখেছেন যাতে সকল নবীদের শিরোমনী এই ধারাতে জন্মলাভ করে। যদিও কালক্রমে মক্কার অধীবাসীরা কাবার ভিতর মুর্তি পুজা শুরু করেছিল। এবং দিনের বেলায় পুরুষরা উলঙ্গ হয়ে কাবা তাওয়াফ করত রাতের বেলায় মেয়েরা উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করত। এদিকে বনু উমাইয়াদের সাথে বনু হাশিমের রেষারেষী ঝগড়া খুনোখুনি লেগেই ছিল। তারা কুরাইশ হলেও তাঁদের ধারা মুর্তি পুজারী এবং পেগান ছিল। এরা কাবার দখল নিতে চাইত কিন্তু তাদের শঠতা , নীচুতা আর নিকৃষ্টতা ছিল ভয়াবহ। এরাও BAAL পুজা করত। BAAL কে তারা বলত হুবাল। এই হুবালের মুর্তি ছিল সবথেকে বড়। এবং আদি ব্যাবিলনের বাকি দেব দেবীর পুজাও তারা করত তাদের ভিতর ছিল Moon God, মিশরের আমুন রা এবং অন্যান্য।

যাহোক শেষ নবী যখন আবার বনু হাশিম গোত্রে জন্মলাভ করল তখন এদের মাথায় ঠাডা পড়ার মত হল। কারন এদের নেতা ছিল কুখ্যাত আবু সুফিয়ান এবং সেও ছিল বিরাট প্রভাবশালী এবং ধনী এবং মক্কার মুর্তি ব্যাবসা এবং রেড লাইট এরিয়া ছিল তাঁর ।

তাঁর বউ কুখ্যাত হিন্দা ছিল বেশ্যাদের সর্দার । যখন নবী সা: ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত পেলেন এবং প্রচার করতে লাগলেন তখন এদের বিজনেস এর উপর হুমকি হয়ে দাঁড়াল সেটা। আবু সুফিয়ান মক্কার শুধু নয় আরবের সব পেগানদের নেতা ছিল এবং সবাইকে একজোট করে মোট ২৭ টি যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল শেষ নবীর বিরুদ্ধে এবং তাঁকে মক্কা থেকে বিতাড়িত করেছিল আরো মুসলিমদের সাথে। 

মুসলিমরা আবিসিনিয়ায় এবং মদীনায় পালিয়েও রক্ষা পায়নি তাঁর হাত থেকে। সেখানে গিয়েও সে আক্রমন করেছে, তাও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

 মুসলিমদের মক্কা বিজয়ের পরে সে কোন উপায় না দেখে ইসলাম গ্রহন করেছিল কিন্তু তার পরবর্তী কার্যকলাপে দেখা যায় যে সেও আসলে খাজারিয়ানদের মতই উপরে উপরে মুসলিম হয়েছিল যে ভাবে খাজাররা ইহুদি হয়েছিল। এ ইতিহাস অনেক লম্বা তাই আর এগোলাম না। এটুকু বলতেই হত তাই বললাম এখন । পরে আবার এসে এখান থেকে শুরু করা যাবে।

যাইহোক ১ম পর্বে বলেছিলাম ইসা আ: সুদ নিষেধ করেছিল বলে গিয়েছিল শেষ নবীর আসার কথা। তো যখন মদীনা রাষ্ট্র যখন তৈরী হল তখন তিনি সেই বিকল্প কারেন্সী বা মুদ্রা চালু করলেন। সেটাকে বলা হয় সুন্নাহকারেন্সি যা ছিল সোনা, রুপা। এছাড়াও বিনিময় হিসেবে ফসলের ব্যবহার চালু ছিল আগে থেকেই সেটা বলবত থাকল, যেমন খেজুর, লবন, যব এরকম অনেক কিছু। এখন রথচাল্ডের কাগজের নোট আবিস্কারের আগ অবধি এই কারেন্সি সারা বিশ্বে চালু ছিল।

কাগজের নোটের সাথে এর পার্থক্য কি সেটা দেখাচ্ছি এখন। ধরুন আপনার কাছে সোনা আছে এখন আপনি সোনা পুড়িয়ে ফেলেন বা গলিয়ে ফেলেন সেটা কিন্তু সোনাই থাকবে। কারন এই কারেন্সীর মুল্য নিহিত আছে সোনার ভিতরে, বাইরে নয়। এবং যার কাছে এটা আছে সেই এই সম্পদের মালিক বা সোনার মুল্যের মালিক ।

কিন্তু কাগজের নোট পুড়িয়ে ফেলেন আপনি ছাই ছাড়া কিছু পাবেন না। কারন কাগজের নোটের মুল্য নোটের ভিতরে নেই , আছে বাইরে এবং এর মালিকও আপনি নন মালিক হল যে ব্যাংক সেই নোট ইস্যু করেছে সেই ব্যাংক। এবং একারনে দেখবেন নোটের উপর লেখা থাকে চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকার কথা। তার মানে হল, আপনি শুধু বাহক কিন্তু মালিক নন। আপনি ভাবছেন এটা আর এমন কি বড় বিষয়। এখানে যে মার প্যাচ আছে তা অনেক বাঘা বাঘা মানুষই বুঝতে অক্ষম। 

ধরুন ৭০ সালে আপনি ৭ হাজার টাকার একভরি সোনা সিন্দুকে ঢুকিয়েছেন এবং একই পরিমান টাকাও আপনি সিন্দুকে ঢুকিয়েছেন এবং ২০২০ সালে সিন্দুক খুলে দেখবেন সোনার দাম হয়ে গেছে ৭০ হাজার টাকা আর আপনার ওই ৭ হাজার টাকা তাই থাকবে কিংবা বাতিল হয়ে গেছে এর ভিতরেই।

ম্যাজিকের মুল বিষয়টাই হল ধোকা। যেটা দেখানো হবে বা আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করবে সেটা আপনাকে বিভ্রম ঘটানোর জন্য কিন্তু আপনার দৃষ্টি যখন এখানে নিবদ্ধ তখন তাঁরা করবে আরেকটা তারা যেটা চায়। কৌশলে তাঁরা যেটা করেছে কিংবা এখনো করে তা হল বলে যে সোনার মুল্যমান অনুযায়ীে তারা কাগজের মুদ্রা ছাপায়। কিন্তু এটাও ভাওতাবাজী ।

চিন্তা করে দেখেন একটা একটি ডলারের নোট ছাপাতে তাঁরা তাঁদের তুচ্ছ কাগজ আর কালি ছাড়া কিছুই খরচ করেনা । কিন্তু সেটা সে আপনাকে দিচ্ছে সোনার মত মহামুল্যবান ধাতুর বিনিময়ে বিকল্প হিসেবে অথচ কাগজের কোন দামই নেই, মুল্য তাঁরা রেখেছে নিজের কাছে আবার আপনি সেই টাকার মালিকও নন। আপনারা ভাবেন জিনিসের দাম বাড়ে কিন্তু ঘটে উল্টোটা ।

 টাকার মুল্য আসলে কমে । এই কারনে ১০ টাকায় আগে যে জিনিস কেনা যেত সেটা তখন কিনতে লাগে ২০ টাকা। এবং এভাবে টাকার মুল্য যত কমতে থাকে জিনিসের দাম তত বাড়তে থাকে। এটা একটা প্রকাশ্য চুরি কিন্তু সেটাই তারা করে যাচ্ছে এতকাল। তারা আসলে এভাবে বাজার থেকে ধাতু আহরন করছে যেটা আমি ৩য় পর্বে বলেছি। 

আর সুদের প্রভাবে এটা বাড়তেই থাকবে এবং বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌছুবে যেখানে যারা পিরামিডের উপরে বসে আছে তারা ধনী থেকে আরো ধনী হবে আর গরীব আরো গরীব হবে। সুদ সমগ্র সমাজের উপর কি প্রভাব ফেলে তার একটা উদাহারন দিচ্ছি। ধরেন আপনি একটা বাড়ী কিনলেন ১০০ টাকা লোন করে ১০ টাকা সুদে। আপনি ফেরত দিলেন ১১০ টাকা। 

এবার আপনি যখন ওই বাড়ী বিক্রি করবেন ততদিনে টাকার মুল্য আরো কমে গেছে । আপনি ১০০ টাকা দামের আসল বাড়ী সুদসহ এবং কিছু লাভসহ ১২০ টাকায় বিক্রী করবেন। যে কিনল সে আবার ১২০ টাকা লোন করে কিনল ১০ টাকা সুদে এবার আবার যদি হাত বদল হয় তাহলে ১০০ টাকার বাড়ীর দাম হয়ে যাবে ১৪০ বা আরো বেশী। এভাবে যতবার হাতবদল হবে ততবার দাম বাড়বে। এবং টকার মুল্যমান কমবে। এটা শুধু একটা সাইড বললাম। কিন্তু আরো আছে। 

যে কোন ব্যাংক যখন তখন দেউলিয়া ঘোষনা করতে পারে। এবং এতে আপনার সমুদয় সঞ্চয় লোপাট হয়ে যাবে। কিছু করার থাকবেনা। এরকমই তাঁরা করেছে বহুদেশে বহুবার। শেষবার আমেরিকাতেই করেছে ২০০৮ সালে। তারপর থেকে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। কারন এটা একটি পঞ্জি স্কিম। এক সময় না এক সময় এটা এমনিতেই ধ্বসে পড়বেই এটার নিয়মেই। এটার আরো অনেক জটিল ব্যাখ্যা আছে সেটার দিকে না যাই। তবে এই ধ্বস হতেই হবে। এবং সেটাই ঘটতে যাচ্ছে আগামি কয়েক বছরের ভিতর।

ইকোনমিক ধ্বসের জন্য তাঁরা করোনাকে দায়ী করবে নিজেদের দায় এড়াতে। হঠাৎ করেই ডলারের পতন ঘটবে। এবং প্রতিটা দেশ তার পুরো রিজার্ভ কারেন্সী যেটা আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংকে জমা আছে সেটা হারাবে। ফেডারেল ব্যাংকে বলেও হয়ত কিছু থাকবেনা। 

কারন তার স্থানে নতুন ডিজিটাল কারেন্সী নিয়ে আসা হবে। এবং দেশগুলোকে উদ্ধার করার জন্য বিপুল পরিমান লোন দেয়া হবে নতুন শর্ত অনুযায়ী। ধরুন আপনি রিক্সা ভাড়া করবেন তাহলে আপনার মোবাইল থেকে রিক্সাওয়ালার মোবাইল একাউন্টে টাকা সেন্ড করতে হবে নিজের একাউন্ট থেকে। তবে অবশ্যই আপনাকে কিছু শর্ত পালন করা লাগবে। 

যেহেতু ক্যাশলেস সোসাইটি হবে সেহেতু আপনার সেটা না মেনে উপায়ও থাকবেনা । প্রতিটা দেশ এবং তাদের জনগন বাধ্য থাকবে সেই শর্ত পুরন করতে না হলে ভিক্ষাও জুটবে না কপালে। তবে সেগুলো কি কি হবে সেটা না বলতে পারলেও কি ধরনের হবে সেটা বলে দিতে পারব। এটা করা হচ্ছে যাতে absolute control করা যায়। RFID chip ঢোকানো হবে সব মানুষের শরীরে। সে তখণ একটি নাম্বারে পরিনত হবে। সোশাল সিকিউরিটি নাম্বার টাইপ। 

এই ডিভাইসে তার সমস্ত ডাটা থাকবে। ইতিমধ্যেই আমেরিকা এবং সুইডেনে পরীক্ষামুলকভাবে কিছু কোম্পানী তাঁদের এমপ্লয়ীদের শরীরে এই চিপ ঢুকিয়েছে। সুইডেনের আমার এক বন্ধু বলছিল। এটা কিভাবে কাজ করে। ধরেন আপনি আছেন টিএসসিতে এখন আপনি যাবেন মহাখালী কিন্তু আপনি রেসটিক্টেড এরিয়াতে আছেন মানে মহাখালী আপনার যাওয়া নিষেধ। তবুও যদি যান তাহলে আপনার দেহে থাকা ডিভাইস সেটা জানিয়ে দেবে মেইন ডাটা সেন্টারে যেটা আবার নিয়ন্ত্রন করে আবার Artificial intelligence। 

সে ততক্ষনাত আপনার ডিভাইস লক করে দেবে। আপনি দেখা যাবে কয়েক দিন থেকে কয়েক মাসের মত আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কিছুই ব্যবহার করতে পারবেন না। আর আপনাকে শায়েস্তা তারা আপনার ডিভাইস দিয়েও করতে পারবে চাইলে। সেটা আর বলছিনা।

এবার আপনি চিন্তা করে দেখেন স্বাধীন থেকে হয়ে যাবেন Farm Animal । এটাকেই New world order বা one world order বলা হচ্ছে। 

একটাই কারেন্সি একটাই world government । আপনি হয়ত ভাবছেন এরকম কিছু করতে পারবে না। আপনি কিন্তু লকডাউন ঠেকাতে পারেন নি। সরকার যা বলছে তাই করছেন। তখনো তাই করবেন। এর বিরোধীতা করে কোন সরকারই টিকতে পারবে না। সরকারগুলো অচিরেই বিগ করপোরশনের হাতের মুঠোয় চলে যাবে। গুটি কয়েক জায়ান্ট কোম্পানীই শুধু ব্যাবসা করবে বিশ্বময়। 

আপনারা গুগল করলেই জেনে যাবেন করোনা প্যানডেমিকের ভিতর জায়ান্ট কোম্পানীগুলো কি পরিমান মুনাফা করেছে বা সম্পদ নীচের থেকে লুটে নিয়েছে। অথচ ছোট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনমতে টিকে আছে। ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখেন কিভাবে আদানি আর আম্বানী ভারতীয় সরকারী সেবামুলক প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে নিচ্ছে।

 এবার কৃষির উপর হাত দিয়েছে। কৃষি আইনটা পাশ হয়ে গেলেই আগামী ৩-৫ বছর পরেই কৃষকরা সেই আগের জমিদারী সিস্টেম অথবা নীল চাষের সিস্টেমে ঢুকে যেতে বাধ্য হবে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে ২০০৮ সালে মালয়েশিয়াতে একটি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় এবং আজকে যা হচ্ছে সে বিষয়ে তখনই আলোচনা করা হয়। খেয়াল করে দেখুন আজ থেকে ১২ বছর আগেই এ বিষয়ে কিছু মানুষ জানত যা আপনারা এখনো জানেন না। 

বিশ্বের নামি দামী ইসলামী অর্থনীতিবিদ এবং গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌছেছিলেন যে একটি সুন্নাহকারেন্সী সিস্টেম বা Goldback system bank প্রতিস্থাপনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যাতে মুসলিমরা এই ফাদ থেকে উদ্ধার পেতে পারে। সেই সম্মেলনের কথা কোন মিডিয়া কাভারেজ দেয়নি তখন। 

সেই সম্মেলনে উপস্থিত থাকা একজন স্কলারকে অনুসরন করতাম বলে তখনই আমি এবিষয়ে জেনেছিলাম যে এরকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে অচিরেই । আগামি পর্বগুলোতে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।

১ প্রথম পর্ব

২ দ্বিতীয় পর্ব 

৩ তৃতীয় পর্ব 

৫ পঞ্চম পর্ব 

Sunday, December 13, 2020

বাংলাদেশ ও কিছু কথা

 পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলীর নাতি আমার সিনিয়র ফ্রেন্ড। তেমন ক্লোজ কেউ না মাঝে মাঝে বিভিন্ন পার্টিতে দেখা হত আড্ডা হত এইটুকুই। তিনি ছিলেন আবার MIT Graduate । ইন্জিনিয়ার। 

বাংলাদেশে চীনের মেজর ব্রীজ কোম্পানীর কনসাল্টেন্ট ছিলেন। আবার তিনি তখনকার বাংলাদেশে আমেরিকান রাষ্ট্রদুত ড্যান মজিনার স্কুল মেট। 

তো তিনি এক আডডায় গল্প বলছিলেন যে, মজিনা বাংলাদেশে নিয়োগ নিয়ে আসার পর আমেরিকান দুতাবাসে এক পার্টিতে মজিনার দাওয়াতে উপস্থিত ছিলেন। অনেক কথার পর মজিনা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আচ্ছা একটা জিনিস বলো তো, আমি যখন বাংলাদেশে আসি তখন আমাকে বাংলাদেশ আর বাঙালী সম্পর্কে ব্রীফ করা হয়েছিল যে, “বৃটিশরা বলত বাঙালীরা আজ যা চিন্তা করে পুরো উপমহাদেশ সেটা একদিন পরে চিন্তা করে। তো আমি তো সেরকম কাউকে দেখলাম না।“ 

তো উত্তরে আমার সিনিয়র বন্ধু হা হা হা করে হেসে বলেছিলেন. কিছু এখনো অবশিষ্ট আছে এদেশে তবে ওপার বাংলায় কিছু আছে আর আমাদের দেশের বেশীরভাগ ওইলেভেলের মানুষদেরকে ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বরে মেরে ফেলা হয়েছিল। মজিনা বলেছিলেন oh I see. 


আজকে পদ্মা ব্রীজের সাফল্যে একটা পক্ষের আনন্দ বা গর্বে উদ্বেলিত না হতে পারা দেখে মনটা বিষন্ন হল। যে কারনে আজকের লেখার অবতারনা।

জিয়নিষ্ট বৃটিশরা কিভাবে আমাদের বাংলাকে ধ্বংস করেছিল সেটা আমি কারেন্সী ওয়ার সিরিজে অল্প হলেও লিখেছি। কিন্ত যেটা লিখিনি সেটা হল। 

তাঁরা এখান থেকে চলে গেলেও তাঁদের “ভাগ কর শাসন কর নীতি” র বীজটা পাকা পোক্ত করে তারপর এখান থেকে গিয়েছিল যেটা আমরা অনেকে অনুধাবন করিনা গভীর দৃষ্টির অভাবে। এটা বানরের পিঠা খাওয়ার গল্পের মতন, যাতে তারা সবসময় ফায়দা হাসিল করতে পারে দুই পক্ষের ঝগড়া মেটানোর ছলে। 

তারা হিন্দু –মুসলিমে ভাগ করার পর, পুর্ব পাকিস্তানের মানুষ যখন তাঁদের রচিত সাম্প্রদায়িকতাকে পিষে ফেলে বাঙালী জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করে ফেলল তখন তাদের মাথায় ঠাডা পড়ে গেল। খেয়াল করে দেখুন ভাল করে। 

এই উপমহাদেশের এতগুলো জাতি আর ভাষায় বিভক্ত জাতির কেউ কিন্তু স্বাধীন দেশ বানাতে পারেনি। মনিপুরীরা পারেনি, নাগা বা পারেনি, গোর্খারা পারেনি, তামিল, কাস্মীরী, পাঞ্জাবী, সিন্ধি, বেলুচ কেউ পারেনি। তাঁরা এখনো ফাইট করে চলেছে কিন্তু তাঁরা পারেনি। 

আমরা পেরেছিলাম। কিন্তু সেটা ছিল বিপুল ক্ষয়ক্ষতির বদলে অল্প কিছুদিনের জন্য । তাঁদের ভাগ কর শাসন কর নীতি আবার কলকাঠি নেড়েছিল । এবং স্বাধীন বাংলাদেশ আবার দুভাগে বিভক্ত করে ফেলে তাঁরা ৭৫ এর পরেই। 

এবার হিন্দু মুসলীমে ভাগ করেনি এবার তাঁরা করেছে স্বাধীনতার পক্ষে এবং বিপক্ষে এই দুটি শক্তি দ্বারা। ভাল করে খেয়াল করে দেখবেন ৭০ সালে আওয়ামীলীগ ভোট পেয়েছিল ৯৮ % এবং তাঁরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষেই মত দিয়েছিল । কিন্তু ১৯৯১ সালের ভোটে দেখা গেল সেই আওয়ামী লীগ ভোট পেল ৩৬ % । আর বিপক্ষে বিএনপি জামাত পেল প্রায় সমান সমান। যারা নতুন ভোটার ছিল ২১ বছর পর তারা কেউ মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি বা ৭৫ দেখেনি।

 তারা কেবল শুনেছিল একটি মাত্র সরকারি রেডিও চ্যানেল এবং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের বদৌলতে। স্কুলের বইতেও তেমন কিছুই লেখা ছিলনা।

 এবং আমরা যারা ৮০র দশকে স্কুলে পড়েছি তাঁদের কাউকেই আমরা দেশ নিয়ে বা মুক্তিযুদ্ধের মত এতবড় ত্যাগের বিনিময়ে এতবড় বিশাল অর্জন নিয়ে কখনো গর্ব অনুভব করতে দেখিনি। ৭১এর যুদ্ধকে বলা হত গন্ডগোলের সময়। মানে দুইভাইের ভিতর কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারনে কিছুটা ঝগড়াঝাাটি হয়েছিল।এর বেশী কিছুনা। বঙ্গবন্ধুকে আমরা কখনোই রেডিও টিভিতে পাইনি ৯৬ এর আগে।

 যা এই উপমহাদেশের কেউ অর্জন করতে পারেনি হাজার চেষ্টা করে আমরা যখন সেটা পেরেছি সেটা নিয়েও আমাদের কোন অনুভুতি কাজ করেনা। কারন ৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত এতগুলি জেনারেশনকে মগজধোলাই করা হয়েছিল একটি রেডিও এবং একটি টিভি দিয়ে। কিন্তু কেন ?

এর উত্তর দিয়েছিলেন ফিডেল ক্যাষ্ট্রো ১৯৭৪ সালে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে । আলযিয়ার্সে যখন বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা হয় ফিডেলের তখন তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ্য করে, “কমরেড ইউ আর ফিনিশড” কারন বঙ্গবন্ধু ৭১ সালে যে সব আমলারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তিনি তাঁদের আবার সরকারী চাকরীতে স্বপদে বহাল করেছিলেন। 

বঙ্গবন্ধু তখন বলেছিলেন, আমি কি করব, আমার তো দেশ চালানোর জন্য অভিজ্ঞ লোক লাগবে যেটা আমার কাছে নেই। কারনটা সবাই জানেন কেন ছিল না। ১৪ই ডিসেম্বরই ছিল সেই কারন। 

ফিডেল পাত্তা না দিয়ে হাভানা চুরুটে টান দিয়ে আবার বললেন, “ কমরেড ইউ আর ফিনিশড. ইউ আর ফিনিশড। ভুলে যেওনা তুমি যাদের নিয়োগ দিয়েছ তারা কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েও পাকিস্তানের ধ্বংস ঠেকাতে পারেনি। তাহলে তুমি কিভাবে ধরে নিলে যে এরা স্বাধীন বাংলাদেশকে সঠিকভাবে সেবা করবে? তুমি সবাইকে সরিয়ে দাও ।

 যেসব অনভিজ্ঞ লোক আছে তারাই একদিন শিখে যাবে ভুল করতে করতে অর এলস ইউ আর ফিনিশড কমরেড।“ বিদায় নেবার সময় দুজনেই জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন। আর যাবার সময় বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।“

 তার কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য হয়েছিল। শুধু যে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে ফিনিশ হয়েছিল তাই নয় বিপুল পরিমানে রাজাকারদের পুনর্বাসন করা হয়েছিল সামরিক সরকারের আমলগুলোতে।যার ধারাবাহিকতা ৯৬ সাল পর্যন্ত ছিল। 

এবং এমন জেনারেশন তৈরী হল যাদের দেশপ্রেম কি জিনিস সে বিষযে ধারনা ছিল না। ১৯৭১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছিল মাত্র সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট ! শিল্প বিপ্লব হবে কি করে ? কারন পিছনে কলকাঠি নেড়েছিল বিশ্বব্যাংক। আর ২০০৭ থেকে ২০ এর ভিতর এখন ২২ হাজার মেগাওয়াট ।

 কারনটা সহজে অনুমেয়। শিল্প বিপ্লবটাও দেখেন চারপাশে ভাল করে। যেকোন দেশের উন্নয়নের পিছনে মুল শক্তি হল জ্বালানী। আর জ্বালানী খাতে বিশ্বব্যংক তৃতীয় বিশ্বের দেশের সাথে যা করে থাকে সেটা জমিদারীর নীল চাষের মত।

 সেই বিশ্বব্যাংকই এই পদ্মাসেতুর বিরুদ্ধে ছিল এবং চরম একটি অপবাদ দিয়েছিল বাংলাদেশের সম্মানে। আমরা যদি মেনে নিতাম অপবাদটা তাহলে আজকে আমরা এই অবন্থানে থাকতামনা। 

একটা মানুষের কঠিন জিদ আমাদের দেশের মর্যাদা এবং আত্মসম্মান উচু করেছে। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে কিন্তু একদল মানুষ সেটা উপভোগ করতে পারছেননা । এই মানুষগুলো জন্য দু:খ হয়। এরা না পারে ফেলতে না পারে গিলতে তবু মোহ ভাঙেনা । 

 পদ্মা সেতু তখন না হওয়াতে  আপনাদের কারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন আমি জানি না। তবে আমার ১১ লাখ টাকা গচ্চা গিয়েছিল তখন না হওয়াতে। যে টাকা এখনো শোধ দিতে পারিনি। আমরা কয়েকজন মিলে তখন ইনভেষ্ট করেছিলাম সাপ্লাইয়ের কাজ পাব বলে। দু:খ আমার হবার কথা কিন্তু আমি খুশী কারন আমি জানি এটা দেশের জন্য কত বিশাল অর্জন।


 যারা যারা এই বিশাল যজ্ঞে শামিল ছিলেন তাঁদের সবাইকে টুপি খোলা অভিনন্দন। আর যাদের কাছে মনে হচ্ছে এটা কিছুই না তাঁদের বলছি ছবিটা উপর থেকে দেখেন তাহলে বুঝবেন এটা কতবড় থাপ্পড় ছিল জিয়নিষ্টদের গালে। সবাইকে বিজয় দিবসের আগাম শুভেচ্ছা।

Tuesday, December 8, 2020

করোনা ও বাংলাদেশ & কারেন্সিওয়ার প্রথম পর্ব

বাংলাদেশের ঝুকি এবং আগুয়ান মহাবিপর্যয় নিয়ে লিখব। কিনতু লিখতে গিয়ে মনে হল এই উপরে উপরে ভাসা ভাসা না লিখে চরম সত্যটাই জানিয়ে দেই। কিনতু সত্য জানা যেমন কঠিন হজম করা তার থেকেও বহু গুন কঠিন। 



তাই আগেই বলে দিচ্ছি এই ধারাবাহিকটা সবার জন্য নয়। যারা দলীয় কিংবা কোন বিশেষ সম্প্রদায় বা কোন বিশ্বাসে বিশ্বাসী চশমা পরে দুনিয়া দেখে থাকেন তারা দয়া করে এই লেখাগুলো এড়িয়ে যাবেন । এই লেখাগুলো তাদের জন্য যারা চিন্তাশীল, ধৈর্যশীল এবং যারা সত্যের পুজারী, যারা জানেন সত্যই ধর্ম, সত্যই খোদা, এটা সেই সব মানুষের জন্য। 

ঘটনার পিছনে যেমন ঘটনা আছে তার পিছনেও ঘটনা আছে এবং তার পিছনেও ঘটনা আছে। এথন যদি কেউ ১ম ঘটনা দেখে ভেবে নেয় এটাই সত্য তাহলে বিষয়টা হবে অন্ধের হাতি দেখার মত। আবার কেউ যদি তার পিছনের ২য় ঘটনা দেখে ভেবে নেয় যে সত্য জেনে গেছে সেটাও পুরোটা জানা হল না। 

তাই পুরোটা জানতে হলে ধৈর্যের কোন বিকল্প নেই আর আল্লাহ কোরআন পাকে বলেছেন তিনি ধৈর্যশীলদের সাথে থাকেন। সত্যের তরবারী কাউকে বাছ বিচার করে না সবার উপর পড়ে তাই এই লেখাগুলো অনেকের বিশ্বাসের উপর চরম আঘাত হানবে। 

যারা গ্রহন করতে পারবে তারা জ্ঞানী বলেই পারবেন আর যারা হজম করতে পারবেন না তারা যে স্তরে আছেন সেখানেই থাকবেন। সত্য উলঙ্গ তাই শেষে আপনাকেও উলঙ্গ করে দেবে আর তাতেই আপনার মুক্তি। এই লেখাগুলো কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে আটকে থাকবে না।

 অর্থনীতি, সমরনীতি, ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি, বিজ্ঞান, অংক, স্পিপিচুয়ালিটি সব থাকবে। কত পর্বে এটা শেষ হবে সেটাও বলতে পারছি না। ছোট বেলায় স্কুলের বেঞ্চে বসে অনেকেই কম্পাস দিয়ে বেঞ্চের উপর ফুটো ফুটো করে বিভিন্ন ছবি এঁকেছি। 

লেখাগুলোতে যে সব ইনফরমেশন থাকবে সেগুলো একেকটা সেই কম্পাস দিয়ে ফুটো করা বিন্দুর মত। এগুলো এক করেই বিশাল ছবিটা আঁকতে হবে। আপনারাও নিজেরা ছরি তৈরী করে নিবেন। বিষয়গুলো খুবই জটিল তবে আমি আপ্রান চেষ্টা করব সহজ ভাবে উপস্থাপন করতে। 

দেশ, কাল, সীমানায় আটকে থাকবেনা লেখা। আবার বিষয়ের কোন ধারাবাহিতাও থাকবে না অনেক সময় । আপনার প্রাসঙ্গিক মনে হবে না অনেক সময় তবে ধৈর্য ধরতে পারলে লেথা যথন শেষ হবে তখন আর বেহুদা মনে হবে না।

বিষয়টা এমন না যে এক বসায় সব লেখা যাবে বা বুঝিয়ে বলা যাবে। মহা বিশাল কাহিনীর অংশ বাকী সব গল্প । একটার সাথে আরেকটা জড়িত সুতোর বুননের মত। কাপড় কত বড় আর সেই কাপড়ের ডিজাইন কি শার্ট না শাড়ীর সে আরও ওপরের বিষয়।

 আবার একেকজনের দেখার দৃষ্টভঙ্গিও একেকরকম। আমার পর্যবেক্ষনে দেখা যাক কতদুর যাওয়া যায়….বর্তমানে পৃথিবীর এমন কোন মানুষ নেই যে অস্বস্তিতে নেই করোনা নিয়ে। মানব জাতীর ইতিহাসে এমন সময় আগে আর আসেনি। 

বাপের জন্মে ও কেউ দেখেনি ভাইরাসের কারনে এভাবে পৃথিবী শুদ্ধ মানুষ গৃহবন্দী। চরম অনিশ্চয়তা চারিদিকে। সামনে কি হবে কেউ বুঝতে পারছে না। না কোন সরকার না কোন সংস্থা, কেউ জানে না সামনে কি হবে। কিন্তু এসবই উপসর্গ কিন্তু আসল রোগ না। তবে পৃথিবী যে আগের মত আর থাকবে না সেটা একেবারেই নিশ্চিত। কিন্তু এর ভিতরেও আরেক যুদ্ধ চলছে আমি সে বিষয়ে লিখছি।

অনেক বড় বড় বিশেষজ্ঞগণ মতামত দিচ্ছেন যে, করোনা ভাইরাস ল্যাবরেটরীতে সৃষ্ট একটি যুদ্ধাস্ত্র। আর যদি এটা যুদ্ধই হয়ে থাকে তাহলে এটা হয় চীন শুরু করেছে না হয় অ্যামেরিকা। তবে এই যুদ্ধ যেই শুরু করুক না কেন তা এখন আর তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
 আর এই করোনার ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে করোনা পরবর্তী নতুন এক দুনিয়া আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে। করোনা পরবর্তী সময়ে যা যা হতে পারে,
১। দুনিয়ার অর্থনীতি নতুন করে গঠিত হবে। বর্তমান অর্থনীতি হল কেইনেসিয়ান অর্থনীতি। অর্থনৈতিক এই মডেল ১৯৩০ সালের মহামন্দার পরে প্রয়োগ করা হয় যা আজ অবধি চলে আসছে। তবে ২০০৮ সালের মন্দার পর এক অর্থে বলতে গেলে গ্লোবাল ফাইন্যান্স সিস্টেম একেবারে ধ্বসে পড়েছে। 
পুঁজিবাদীদের হাতে অন্য কোন মডেল না থাকায় ১২ বছর ধরে এই মডেল দিয়ে কোনমতে চালিয়ে আসছিল। কিন্তু করোনা এর পথও রুদ্ধ করে দিল। ২০১০ সাল থেকে অ্যামেরিকার ফেডারেল ব্যঙ্ক মোট ৯০০ বিলিয়িন ডলার ছাপিয়েছে।
 কিন্তু করোনা আক্রমণের পরের এক সপ্তাহেই ডলার ছাপিয়েছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার! বেকার হয়েছে ৪০ লাখের বেশী মানুষ। ট্রাম্প এক দিকে চাচ্ছে FED দখলে নিতে আর FED চাচ্ছে ট্রাম্পকে ক্ষমতচ্যুত করতে। অবস্থা যাই হোক না কেন, করোনার পর সৃষ্ট হবে নতুন অর্থ ব্যবস্থা!
এখন প্রশ্ন আসে সেই অর্থনীতি কিসের ভিত্তিতে হবে? বণ্টন নীতি নাকি সম্পদকে গচ্ছিত করার নীতি? মুসলমানগণ যদি শক্তিশালী হত তাহলে এটা অনেক বড় একটা সুযোগ ছিল নতুন অর্থনীতিকে ইসলামী অর্থনীতির আলোকে সাজানোর।
২। পরাশক্তিদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। তবে এই যুদ্ধে যেই জিতুক মূল চাপ এসে পড়বে ভঙ্গুর দেশ সমূহের উপর। তথা এই যুদ্ধে পরাজিত দেশ এই দুর্বল ও ভঙ্গুর দেশ সমূহ থেকে সম্পদ লুণ্ঠন করে অতীতের মতই তাদের সাম্রাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। আর সম্পদ সমৃদ্ধ ও ভঙ্গুর দেশ সমূহ কোন গুলো?
এক কথায় উত্তর মুসলিম দেশ সমূহ !
সকল সম্পদে ভরুপুর এই দেশ সমূহ। যদি মুসলমানগণ নিজেদের সম্পদকে রক্ষা করার জন্য এখনি প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তাহলে আগামীতে মুসলমানরাই হবে বিশ্বের অনুঘটক। আর যদি না পারে তাহলে আরও যে কত দিন মার খেতে হবে তা আল্লাহ জানেন।
৩। ধর্মকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিবে কারণ তথাকথিত আলেমদের অযাচিত কথা বার্তার কারণে ধর্ম ব্যাপকভাবে গ্রহণ যোগ্যতা হারাবে। একটি মাত্র টিকার কাছে হেরে যাবে দ্বীন। যদি এই সকল মহামারীর ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই যে, খৃষ্টান ধর্ম কিভাবে মানুষের কাছে তার গ্রহণ যোগ্যতা হারিয়েছিল। যার ফলে মানুষকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ভাষা ব্যবহার করা হয় সেটাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
৪। শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। কারণ পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এই বেকার তৈরির কারখানা আর কেউ চালাতে চাইবে না। যার ফলে নতুন এক শিক্ষা ব্যবস্থা আসবে।
আসুন ঘরে বসে অন্যান্য বিষয়ের সাথে এই সকল বিষয় নিয়েও চিন্তা করি কই আযান দিল, কই কে গরুর মূত্র পান করল , কই থানকুনি পাতা পাওয়া গেল এই সব রোমান্টিক বিষয় বাদ দিলে বিশ্বকে ডকট্রিনাল দৃষ্টি কোন থেকে বিবেচনা করার জন্য করোনার পেছনে কি ঘটছে তা দেখার চেষ্টা করি।।
কারেন্সি যুদ্ধ নিয়ে লিখব যেটা কিনা আসল যুদ্ধ। আজকের লেখাটা অনেকের মাথার উপর দিয়ে যাবে কিন্তু ঘটনার পিছনের বিষয়টা আসলে এরকমই জটিল এবং হতবিহ্বলকর, কিছু করার নেই যদি কেউ না বুঝতে পারে। আজকের করোনা কিংবা লকডাউন অনেকদিনের প্রস্তুতির অংশ যেটা পুর্ব পরিকল্পিত একটি স্ক্রিপ্ট। এখানেও দুটি প্রতিপক্ষ যা সব সময়ই ছিল । 
এই দুই প্রতিপক্ষের শুরু সেই আদমের দুই সন্তান হাবিল আর কাবিলে কে দিয়ে। চেহারা আর আকৃতি বদল হয়েছে কিন্তু খেলোয়াড় সেই দুই । সবসময়ই তাই। দুই অদৃশ্য শক্তির লড়াই আর মানুষ হল সেই দুই শক্তির বাস্তব প্রতিনিধি বা Physical Appearance । এটাও একটা ফান্ডামেন্টাল ল জগতের।
কারেন্সী ওয়ার আসলে কি ? কিভাবে শুরু ? কারা এর খেলোয়াড় ?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখন জেনে নিলে, পরে ঘটনাগুলো (ডটগুলো) সচেতন ভাবে জোড়া দিতে সুবিধা হবে এবং যা দিয়ে একটা পূর্নাঙ্গ চেহারা বানানো যাবে যা আমার উদ্দেশ্য ।
আমরা এখন যে কাগজের মূদ্রা ব্যবহার করি। তার আগে আরেকটি মু্দ্রার প্রচলন ছিল যেটা গত শতাব্দীতেও ছিল বেশকিছু স্থানে। 
৬ষ্ঠ শতাব্দীতে জন্ম নেয়া এই পুরাতন মূদ্রা একচেটিয়া ভাবে সারাবিশ্বে ১৯ শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তার ছিল এবং এখনো আছে কিন্তু আড়ালে। তাহলে এই খেলায় পুরাতন একটি দল বা শক্তি আছে যারা এক পক্ষ আর একটা দল যেটা পৃথিবীর এখনকার সমস্ত কারেন্সী ( ৩টা দেশ বাদে…নাম গুলো পরে বলছি) এবং ব্যাংকিং একচ্ছত্রভাবে নিয়ন্ত্রন করে তাঁরা এক পক্ষ ।
 তাহলে আমরা দুইটা পক্ষ পেয়ে গেলাম । একটা পক্ষ পুরাতন আর একটা নতুন। এবার দেখে নেয়া যাক পুরাতন পদ্ধতি যেটা প্রায় দেড় হাজার বছর পৃথিবী জুড়ে রাজত্ব করেছে সেটা কেমন আর এখনকার কারেন্সী কেমন।
 কি এদের ব্যবধান আর এদের শত্রুতাই বা এতটা ভয়ঙ্কর কেন যার জন্য ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন অসহায় নিরীহ মানুষের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ভাইরাস দিয়ে গ্যাস দিয়ে মেরে ফেলাও মাছি মারার মতন ? এটা আসলেই কারেন্সী যুদ্ধ নাকি এর ভিতরেও অন্য কিছু আছে যার জন্য পরমাণু বোমা দিয়ে পৃথিবী ধ্বংস করতেও এরা পিছপা না ? ভিতরের বিষয়ে পরে আসি আগে উপরের টার আলোচনা শেষ করি ।
বলছিলাম দুই পক্ষের কারেন্সী যুদ্ধ টার স্বরূপ নিয়ে। আর এর পক্ষ নিয়ে । শুরু করছি প্রথম পক্ষ আর তাঁদের কারেন্সী সিস্টেম নিয়ে যেটা অলমোষ্ট ১৪০০ বছর পুরো দুনিয়া জুড়ে একচেটিয়া ব্যবহৃত হয়েছে। অনেকেই জানেনা কেন জিসাস (আ : ) কে ইহুদীরা মানেনি অথচ তিনি ইহুদীদেরই নবী ছিলেন। এই কারেন্সী যুদ্ধের শুরুটা এখান থেকেই। 
অনেকেই ভাবতে পারে আমি ইচ্ছা করেই ধর্ম টেনে আনছি কিন্তু ধর্ম যেখানে নিজেই ওতোপ্রতভাবে জড়িত সেখানে আমার কিছু করার নেই। জেসাস যেদিন নাজারন থেকে জেরুযালেমে প্রথম আসলেন তিনি দেখলেন আল আকসা মসজিদের ভিতর এলিট ইহুদীরা টেবিল সাজিয়ে বসে সুদের ব্যবসা করছে। জিসাস সেটা দেখেই টেবিল উল্টে দিয়ে বললেন এখন থেকে এসব আর চলবে না। সুদের ব্যবসা আজ থেকে চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হল।
 এতে এলিট ইহুদীরা ক্ষেপে গেল। তাঁরা জিসাস কে শুধু অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হয়নি তাঁরা জিসাসের বিরুদ্ধে যত রকম পথ আছে সব পথে ষড়যন্ত্র করতে লাগল। ইহুদীরা তখন ছিল রোমান দের কলোনী। রোমান গভর্নর Marcus Pontius Pilatus ছিলেন স্থানীয় শাসক। ইহুদীরা প্রথমে তার কাছে গিয়ে জিসাসের বিরুদ্ধে নালিশ করল যে, ভন্ড নবী জিসাস ইহুদীদের ভড়কাচ্ছে এই বলে যে তারা রোমানদের কে আর কর দেবে না।
 এখন রোমানরা যদি কর নিতে চায় তাহলে জিসাস কে শায়েস্তা করা লাগবে। রোমান গভর্নর সব কিছু খোঁজ নিয়ে দেখলেন যে যেসব ইহুদীরা নালিশ করেছিল জিসাসের বিরুদ্ধে তারা আসলে ডাহা মিথ্যাবাদী । সে যখন ইহুদীদের বলল যে তাঁদের কথা সঠিক নয় তখন এলিট ইহুদীরা আরো বেঁকে বসল এবং রোমানদের বিরুদ্ধে গন অসন্তোষ আর বিদ্রোহের হুমকি দিয়ে বসল। 
অবন্থা বেগতিক দেখে রোমান অফিসিয়ালরা ইহুদীদের দাবী মেনে নিল। এরপরের ইতিহাস মোটামুটি সবার জানা যে জিসাসের ভাগ্যে কি হয়েছে। জিসাস বা ইসা (আ:) শুধু নিষেধ করেছিলেন কিন্তু এর বদলে কোন ধরনের অর্থনীতি চালু হবে তার দিকনির্দেশনা তিনি দিয়ে যেতে পারেননি কিন্তু তিনি বলে গিয়েছিলেন ( দেখুন বাইবেল জন ১৬: ১২-১৬ ) যে, আমি তোমাদেরকে বাকী কিছু জানাতে পারলাম না কারন আমি বললেও তোমরা এখন বুঝবে না। আমি গেলে তাঁকে পাঠিয়ে দেব যে হবে সত্যের বাহক। সে নিজে থেকে কিছু বলবে না, সে যা শুনবে ( ওহি) তাই বলবে, এবং সে আমার প্রশংসা করবে। 
এরপর আরও ৫০০ বছর চলে গেছে কিন্তু জিসাস যার কথা বলেছিল সে আসেনি। মানুষ ইহুদীদের সুদভিত্তিক অর্থনীতিকেই মেনে চলেছে উপায় না দেখে। এইটুকু পর্যন্ত এখন মনে রাখলেই হবে। এতক্ষন পর্যন্ত ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার বছর মানে মোট ৫০০ বছরের গল্প বললাম। এবার আরো পিছনে যাই। তাহলে আমি যে ছবি টা আঁকছি সেটা আরো পরিস্কার হবে। পরে আবার এখানে ফিরে আসব। এবং বাকি গল্প এখান থেকেই শুরু করে শেষ করব।
যদি বলি এই যুদ্ধটা আসলে ৬ হাজার বছরেরর পুরোনো তাহলে হয়ত অনেকেই বিশ্বাস করবে না। কিন্তু এখনকার যুদ্ধের শুরু কিন্তু আসলেও তাই। শুধু চেহারা বদলে গেছে ।
মায়ান অধিবাসীরা খুব জ্ঞানী ছিল যাদের প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা যা স্পেনীয় রা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। সেই মায়ানদের একটি ক্যালেন্ডার ছিল যেখানে ৬ হাজার বছরের হিসাব দেয়া ছিল। ক্যালেন্ডার ২০১২ সাল অবধি এসে থেমে গেছে।
 এরপর আর নেই। কারন তারা বিশ্বাস করত প্রতি ৬ হাজার বছর পর পৃথিবী আরেকটা নতুন সিস্টেমে নতুন ভাবে শুরু হবে। শেষ নবী মোহাম্মদ (সা : )এর অনেক হাদিস আছে যা এরকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন আরো বিস্তারিত ভাবে। হিন্দুদের পুরানে ও সব যুগ কে ৪ ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে যেটা অনেকেই জানে। সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি । সত্য যুগে সত্য ১০০ ভাগ বিজয়ী হবে। 
ত্রেতা যুগে সত্য ৭৫% জয়ী হবে আর মিথ্যা জয়ী হবে বাকি ২৫% * ( দুই পক্ষের ফাইট শুরু), দ্বাপর যুগে ৫০%-৫০% । আর কলি যুগে বা অন্ধকার যুগে মিথ্যা ৭৫%-১০০% জয়ী হবে। আর এটা কলি যুগের শেষ ধাপ বা শেষ কিনারা। কারো যদি সন্দেহ কিছু থাকে তাহলে আসে পাশে একটু নজর দিলেই পরিস্কার হয়ে যাবে কিভাবে মিথ্যাকে সত্য বলে চালানো হচ্ছে আর অযোগ্যরা যোগ্য দের ডমিনেট করছে। উদহারন হাজারটা দিয়ে লেখা লম্বা করার দরকার নেই যারা বুঝদার তাঁরা বুঝে গেছে।
এতো গেল স্পিরিচুয়াল ফাইট এবার আসি বস্তুবাদে। যারা জানে না তাঁদেরকে বলে দেয়া ভাল যে কোন কিছুর ফিজিক্যাল এপিয়ারেন্স হওয়ার আগে তার স্পিরিচুয়াল এপিয়ারেন্স জরুরী। এটা আরেকটা ল এই জগতের। উদহারন হিসেবে বলা যায় আমরা যখন কোন কাজ করি তখন তার আগে চিন্তা করি।
 এই যে চিন্তা বা মনোজগতে কোন কিছু সাজানো সেটাই স্পিরিচুয়াল এপিয়ারেন্স। দুই পক্ষের আসল যুদ্ধটা আসলে এইখান থেকেই শুরু। কোয়ান্টাম সাইন্স বলে বস্তুজগত হল শক্তি বা এনার্জির লো ভাইব্রেশন। বস্তুজগত বলে আসলে কিছু নেই। পুরোটাই ইলুশন বা মায়া। পুরো জগতটাই এনার্জি বা শক্তি । শক্তির নিত্যতার সূত্র অনুযায়ী শক্তির সৃষ্টিও নেই ধ্বংসও নেই শুধু রূপ পরিবর্তন হয়।
এক্সারসাইজ করলে কি লাভ আর না করলে কি ক্ষতি সেটা কম বেশী সবাই জানে। কিন্তু মেডিটেশন, নামাজ, ইয়োগা অথবা জিকির না করলে কি হবে সেটা বলছি। আগেই বলেছি করোনা ল্যাবে বানানো একটি বায়ো উয়েপন। এটা এমনি এমনি বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দেয়নি। বা এটাই শেষ অস্ত্র নয় যেটা আমাদের উপর প্রয়োগ করা হবে।
এবার মুল আলোচনায় যাওয়া যাক আসলে আক্রমনটা কি উদ্দেশ্যে এবং কিভাবে ও কোথায় কোথায় এর নিশানা। এই তিনটা প্রশ্নের উত্তর যতটা সংক্ষেপে এবং সহজভাবে দেয়া যায় তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। তবে আগেই বলে নেয়া ভাল। 
এই জগতটা আমরা যেভাবে দেখি সেটা মোটেও এরকম না। এখানে প্রতিটি বস্তু, প্রতিটি অনু পরমানু, প্রতিটি ঘটনা একে অপরের সাথে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িত। সেপারেটনেস বা ইন্ডুভিডিয়ালিজম হল ইলুশন। যারা নিজেদের আলাদা ভাবে সবার থেকে, তাঁরা হল এই পৃথিবীর সবথেকে নিম্নশ্রেণীর আহাম্মক। আর এই জগতকে ভুল ভাবে দেখার খেসারত হল আমাদের এত কষ্ট, এত অশান্তি।
 এক কথায় বলতে গেলে ৯৯.৯৯% ভাগ মানুষই চিরকাল অজ্ঞতায় বসবাস করে। খুব সৌভাগ্যবান তাঁরা যারা এই অজ্ঞতার বাইরে বসবাস করে বা যারা অন্তত এটুকু বুঝতে পারে যে, সামথিং ইজ রং এবং খোঁজ করে এই ইলুশনের বাইরের পথ। বলা বাহুল্য যে আমার সব লেখাই তাঁদের জন্য যারা seeker বা ‘’খোঁজক’’ এবং ওপেন মাইন্ডেড বা ‘’ দেখক ’’। 
আমি চাইনা এমন কেউ আমার লেখা পড়ুক যারা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন বা লিমিটেড মাইন্ডেড বা “ মোদক”( যারা দুনিয়ার নেশায় আচ্ছন্ন) । কিছুই বুঝবে না উল্টা বিতর্ক করবে। নবী রাসুল এদের সাথে পারেনি তো আমি কোথাকার হাতি ঘোড়া।
এই মহাবিশ্ব একটি একক সিস্টেমে চলে। অনেকটা অপারেটিং সিস্টেমের মত। বেশীর ভাগ মানুষই ইউজার কিন্তু যারা প্রোগ্রামার তাঁরা সিস্টেম যেমন Hack করতে পারে তেমনি স্বাধীনভাবে প্রোগ্রাম লিখে নিজের মত করে অপারেট করতে পারে। 
৯০ এর দশকের শুরুতে যখন কম্পিউটার হাতে এলো তখন আমরা কম্পিউটার চালাতে DOS এ প্রোগ্রাম লিখে কম্পিউটারে ঢুকতাম, পরে বিল গেটস আপল এর ইন্টারফেস ডিজাইন নকল করে ইউজার ফ্রেন্ডলি অপারেটিং সিস্টেম বানালো মানে ক্লিক করেই ভিতরে ঢুকে কাজ করার ইন্টারফেস যেটা আমরা সবাই এখন ইউজ করি। 
অনেকটা তেমনি এই মহাবিশাল কল্পনার অতীত মহাবিশ্বও একটি একক অপারেটিং সিস্টেমে চলে। কম্পিউটার যেমন hardware and software এর কম্বিনেশনে চলে এই মহাবিশ্ব তেমনি দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান এর কম্বিনেশন।
 দৃশ্যমান জগত অদৃশ্যমান জগতের এক ভাগ। বাকি ৯৯ ভাগ জগতই অদৃশ্য বা আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরে। তার মানে এই না যে যা দেখিনা তা নেই। এর মানে এই যে দৃশ্যমান গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি সবকিছু বস্তুভরের মাত্র এক ভাগ এবং বাকি ৯৯ ভাগ অদৃশ্য। এবার দেখে নেয়া যাক বস্তুজগত বলে যে জগতে আমরা বসবাস করছি সেটার আসল স্বরূপ কি? বিজ্ঞান কি বলে আর নবী রাসুলের বা অবতারদের শিক্ষা কি বলে ?
কোয়ান্টাম সাইন্স হল সাইন্সের সবথেকে আধুনিক আবিস্কার যা নেচারাল ফিজিক্স এর সব সূত্রকে উল্টে দিয়ে বিজ্ঞানীদের চুল ছিড়তে বাধ্য করেছে এবং করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও করবে। কোয়ান্টাম সাইন্স বলে, বস্তুজগত বলে কিছু নেই। 
পুরোটাই ইলুশন। এনার্জির সবথেকে লো ভাইব্রেশনটাই হল বস্তুজগত। এবার দেখি ধর্ম কি বলে। আমরা যদি সনাতন ধর্মের পুরাতন সংস্করনে যাই তাহলে দেখব সেখানে বলা আছে পুরা জগতটাই মায়া, ভ্রম। এবার দেখি সনাতন ধর্মের সবথেকে আধুনিক ও সবশেষ সংস্করন কোরআনে কি বলা আছে।
 অনেকে হয়ত নাক সিটকাবে যে ইসলামকে সনাতন ধর্মের আধুনিক ও সবশেষ সংস্করন কেন বলছি। সুরা রুম ৩০-৩০ আয়াত পড়ে নিন। তারপরেও না বুঝলে কিছু করার নেই। পরে হয়ত কোনদিন বুঝিয়ে লিখব যদি মুড আসে কিন্তু এখন এই পেঁচালে যাবার মোটেও ইচ্ছা নেই।
তো মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর সবশেষ কিতাবে বলেছেন, “দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া কিছু নয়।“ ( ৩:১৮৫) তিনি আরও বলেছেন,
আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে। [ সুরা তীন ৯৫:৪ ]
ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَঅতঃপর তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি নীচ থেকে নীচে। [ সুরা তীন ৯৫:৫ ]
তাহলে কি মিলল এবং প্রমান কি হল কোয়ান্টাম সাইন্সের সবশেষ জ্ঞান এর সাথে হাজার হাজার বছরের পুরাতন জ্ঞানের? এখানে নীচ থেকে নীচে মানেই বস্তু জগত। যেটা এনার্জির লো ভাইব্রেশন । তো কথা উঠতে পারে কোয়ান্টাম সাইন্স তো বলে বস্তজগত বলে কিছু নেই পুরোটাই ইলুশন এবং আমাদের কোন অস্তিত্ব নেই ? অস্তিত্বে শুধু একটাই চেতনার অস্তিত্ব। শুধুই এনার্জি বা শক্তি।
 এবং শক্তির নিত্যতার সূত্র অনুযায়ী শক্তির জন্মও নেই ধ্বংসও নেই শুধু রূপ পরিবর্তিত হয়। তাহলে ধর্ম কি বলে,? রাসুল ( সা: ) এক হাদিসে বলেছেন, “মানুষ সবাই ঘুমাচ্ছে, তাঁরা সেইদিন জাগবে যেদিন তাঁদের মৃত্যু হবে।“ এই একটি হাদিসের উপলব্ধী যার হবে তাঁর জীবন আমুল বদলে যাবে। আমি খুবই অল্প করে বুঝিয়ে দিচ্ছি নাহলে হজম হবে না বা কেউ নিতেও পারবেনা চরম সত্য। এইটা জীবনের সবথেকে বড় বিস্ময় এবং সত্য। মৃত্যু যেমন চরম সত্য কিন্তু আমরা কেউই তা মেনে নিতে শিখিনি এটাও তেমনি।
যখন আমরা স্বপ্ন দেখি তখন কোন বাঘ যদি আমাদের তাড়া করে তখন আমরা দৌড়াই, যদি আমাদের কামড়ে দেয় তখন আমরা পেইন ফিল করি এমন কি ব্যাথায় কান্নাকাটিও করি।
 এমনকি কান্নার দমকে বিছানা বালিশ ভিজিয়ে ফেলি, কান্নার দমকে ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু ঘুম ভাঙা মাত্রই বুঝে ফেলি. ওহ ওইটা একটা স্বপ্ন ছিল। তারপর আবার পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ি। না স্বপ্নের জন্য টেনশন থাকে না পাত্তা দেয়ার টাইম থাকে। 
কিন্তু যখন আমরা স্বপ্ন দেখি তখন পৃথিবীর কোন মানুষ কি একবারো বুঝতে পারে যে ওই বাঘের কোন অস্তিত্ব নেই ! আর বাঘ আমাকে কামড়েও দিচ্ছে না তাড়াও করছে না, তাই পেইন অনুভব করার কোন কারন নেই বা দৌড়ানোর দরকার নেই! না পৃথিবীর কেউ এটা বুঝতে পারে না যখন স্বপ্ন দেখে। আমাদের এই যে জীবন এটাও স্বপ্ন। কিন্তু আমাদের বোঝার সাধ্য নেই। কারন আমরা ঘুমিয়ে আছি। রাসুল (সা: ) আরো বলেছেন, “মরার আগে মরে যাও”। মানে মৃত্যু আসার আগেই জেগে ওঠো। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, তোমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিমনা হয়ে মৃত্যুবরণ করো না (৩:১০২ )।
আরবী শব্দ “মুসলিম” এর অর্থ “যে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনকারী” । কোন মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেই সে মুসলিম নয় বা কারো আরবী নাম মুসলিম হবার কোন শর্ত নয় যতক্ষন না সে আল্লাহর কাছে বা আল্লাহর আইনের কাছে বা প্রকৃতি যেমন তাওহিদে বসবাস করছে বা submission form আছে সেরকম ভাবে জীবন যাপন না করে। মানে নিজের নফস বা ইগোকে পুরোপুরি কতল করার নামই ইসলাম। এবং যারা করে তারা সবাই মুসলিম। এ কারনে যারা যোগী বা সেইন্ট বা সুফী যেই হোক না কেন সে যে জায়গারই হোক না কেন যে ধর্মেরই হোক না কেন সবাই মুসলিম। কারন তাঁরা সবাই আত্নসমর্পনকারী। বছরের পর বছর ধরে কঠোর সাধনার দ্বারা মৃত্যুর আগেই মৃত্যু বরন করে নিয়েছে। আর এই সিস্টেম এই আইন পৃথিবীর আদিকাল থেকেই চলে আসছে। কোন আরবীয় বা ভারতীয় বা মিশরীয়দের জন্য বিশেষ বরাদ্দ নেই। এক শ্রেণীর তথাকথিত সুশিক্ষিত নিম্ন জ্ঞানের বলদ আছে যারা জাত পাত দেশ ভাষা নিয়ে বাগাড়ম্বর করে অথচ কোরআনে এসব লোকদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে।
এখন আসি সাবমিশন ফরমে না গেলে কি হবে। রাসুল (সা: ) বলেছেন, যে এপারে অন্ধ সে ওপারেও অন্ধ । মানে এই ইলুশনের জগত থেকে সে কোনদিন মুক্তি পাবে না। কেন পাবেনা? কারন সে নিজেই এই ইলুশন কে ভালবেসেছে তাই। যে যা ভালবাসবে হাশর তার সাথেই হবে।
 আর আল্লাহ কারো ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনা। এই নফসকে আত্নসমর্পন না করানোর নামই হল শিরক। আল্লাহ বলেছেন তিনি চাইলে সব অপরাধ ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শিরক ক্ষমা করবেন না। কেন?
এবার আসি এতবড় ভুমিকা কেন দিলাম ? করোনা বা কারেন্সী ওয়ারের সাথে এর কিসের লেনদেন?
আগেই বলেছিলাম করোনা একটা যুদ্ধাস্ত্র এবং এটা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এবং আগেও বহু বহু বার এরকম হয়েছে কিন্তু যারা করেছে তাঁরা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে গেছে সবসময়। যারা Black Magic এর বিষয়ে অল্প বিস্তর জানে তাঁরা সহজে বুঝে যাবে এই জ্ঞানটা হল নিষিদ্ধ জ্ঞান এবং এরাই হল সেই programmer যাদেরকে আল্লাহ তাঁর সিস্টেমকে সীমিতভাবে hack করার সুযোগ ও স্বাধীনতা দান করেছেন। আর আমাদেরকেও উনি দিয়েছেন সর্বোচ্চ জ্ঞান যা দ্বারা আমরা শুধু এইসব hacker কে প্রতিহত নয বরং পুরো universal operating system কে অপারেট করতে পারি এবং নিজের ইচ্ছামত programme করতে পারি। 
এবং আদম সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ ফেরেস্তাদের বলেছেন , “ আমি দুনিয়ায় খলিফা বা প্রতিনিধি সৃস্টি করতে যাচ্ছি। এই খলিফা মানেই হল মানুষ এবং খলিফা মানেই হল এই মহাবিশাল সিস্টেমকে শুধু ইউজ বা অপারেট করাই নয় বরং নিজের মত করে নিজের জান্নাত বা সিস্টেম বানিয়ে নেওয়া ক্ষমতার অধিকারী।
কেউ কি কখনো দেখেছে যে চাঁদ, সূর্য ভিন্ন দিক থেকে উদয় হতে ? বা দেরী করে আলসেমি করতে ? কিংবা পানিকে তাপ দিলে পানি বাস্প না হয়ে পানি হয়েই বসে থাকতে? অথবা কাঠাল গাছে আম ধরতে? অথবা নদীর পানি উজানে বইতে ? অথবা গাধা হাতির বাচ্চার জন্ম দিতে? না এটা কেউই দেখেনি। 
কারন সব কিছু তার নির্ধারিত ব্যবস্থায় চলমান। কারো তার নির্ধারিত ব্যবস্থার বাইরে যাবার এক চুল সম্ভাবনা নেই। আর এটাকেই কোরআনের ভাষায় বলে ‘তাওহীদ’। জগতের সবকিছুই submission form এ আছে । এটাকেই বলে Oneness. শুধু মানুষের খুবই সীমিত ইচ্ছাশক্তি আছে, ( এটাও একটা ইলুশন) চাইলে সে Submission form এ থাকতে পারে বা Oneness এ মিশে যেতে পারে বা ডুয়ালিটি বা শিরক এ বসবাস করতে পারে। মোল্লারা যেটাকে শিরক বলে সেটা খুবই সস্তা এবং স্হুল। বস্তুত, নিজের ইচ্ছাতে চলাটাই শিরক। বা যতদিন নফস বা ইগোকে সে আত্নসমর্পন না করাবে ততদিন সে শিরক এ ডুবে থাকবে।
তাহলে এটা দাঁড়াল যে, এই জগত যেটাকে আমরা ধ্যান জ্ঞান মনে করছি তাঁর পুরোটাই ধোঁকা । আর এই ধোঁকাটাই হল সবথেকে বড় পরীক্ষা। এই ধোঁকা কবে থেকে শুরু ? সে অনেক পুরাতন গল্প। 
কিন্তু এই ধোঁকাতে যাতে আমরা আটকে থাকি তার জন্য একটা শক্তি অনেক দিন ধরেই কাজ করছে। আর একটা শক্তি আছে যেটা আমাদের আহবান করছে এই ধোঁকা থেকে বের হবার জন্য । যে শক্তি আমাদেরকে আটকে রাখছে সে শক্তিটাই হল Hacker । এই শক্তিটাকে অনেকেই Black Magic বলে জানে।
 এখন যে সংস্করন চলছে এইটা মোটামুটি ৫ হাজার বছরের পুরাতন বিদ্যা । ডেভেলপ হইতে হইতে বিশাল মহিরূহ হয়ে গেছে। বেশ কিছু মানুষ আছে যারা এই শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে। এদের পরিচয় আমি আরকেটি লেখাতে লিখব । এখানে শুধু এটাই বলব। টোটকা না মানলে কি হবে।
করোনার পর আসবে ৫জি টেকনোলজি এবং এআই টেকনোলজি বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ।
 ৫জি একটা মিলিটারী ওয়েপন। এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এতই ছোট যে এর frequency আমাদের Brain যে frequency ইউজ করে তার সাথে মিলে যায়। মিললে কি হবে? একটা ৫জি টাওয়ারের আওতার ভিতর যত মানুষ বসবাস করবে তাঁদের মেন্টাল সিচুয়েশন নিয়ন্ত্রন করা ডাল ভাতের মতন হয়ে যাবে। যেমন উদহারন দিচ্ছি, একটা সিলেকটেড এরিয়ার মানুষদের কে খুব সহজে frequency এর মাধ্যমে উত্তেজিত করা যাবে। ওই মানুষগুলো বিনা কারনে কেন উত্তেজিত হবে তাঁরা নিজেরাই বুঝতে পারবেনা। 
কেউ গাল দিলে বা বাজে বিহেভ করলে সাধারনত আমরা উত্তেজিত হই কিন্তু এক্ষেত্রে সেরকম কিছুই ঘটবে না কিন্তু মানুষ উত্তেজিত হয়ে রায়ট, ভাঙচুর, সুইসাইড, যুদ্ধ যেকোন কিছুই করা সম্ভব। চায়না কোম্পানী হুয়াওয়ে পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান ৫জি টেকনোলজি প্রোভাইডার এবং বিশ্বের বেশীরভাগ দেশের সাথেই অলরেডী এই কোম্পানীর চুক্তি হয়ে গিয়েছে। ট্রাম্প নি:সন্দেহে পাগল কিন্তু এক্ষেত্রে সে হুয়াওয়ে কে ঠেকানোর জন্য হুয়াওয়ে কে BAN করে শেষ রক্ষা করার চেষ্টা করেছে। 
এবং ইউরোপের দেশ গুলো থেকে হুয়াওয়েকে বের করে দেবার জন্য হুমকি ধামকি অব্যাহত আছে। কিন্তু আমেরিকা এখন নিজেই করোনার সবথেকে বড় হামলার শিকার অতএব হুয়াওকে বা চীনকে ঠেকানো সম্ভব না এই মুহুর্তে। এবং এই টেকনোলজি চীনের হাতেও শেষ অবধি থাকবে না। সে আরেক গল্প।
মোদ্দা কথা হল। যারা নিজেদের ভাইব্রেশনকে হাই রাখতে সচেষ্ট হবে মেডিটেশন, ইয়োগা, নামাজ, জিকির দ্বারা তাঁদের সামনের দিনের টিকে যাবার সম্ভাবনা বেশী। সারভাইভাল ফর দি ফিটেষ্ট মানে যোগ্যরা টিকে যাবে আর অযোগ্যরা ভেড়ার পালের অংশীদার হবে। যাদের কাছে এটা গালগপ্প মনে হচ্ছে তাঁরা HAARP সম্পর্কে google search দিয়ে দেখতে পারে যে টেকনোলজি দিয়ে কিভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন করা হচ্ছে দেড় দশক ধরে। কেন Chemtrail ছড়ানো হচ্ছে পৃথিবীর উপরের বাতাসে।
 যেটা হল BA & AL. এই দুটো হল বেরিয়াম আর এলুমিনিয়ামের সাংকেতিক নাম। এবার এই দুটো যোগ করলেই হয় BAAL আর এই BAAL হল সেই শয়তানের মুর্তির নাম যার পুজা তারা করে আজ ৬ হাজার বছর ধরে। ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসের সামনে, ভ্যাটিকানে, ইংলন্ডে, ফ্রান্সে, মিশরে যে ওবেলিস্ক ( খাড়া সিমেন্টের টাওয়ার) আছে সেটাই হল BAAL এর লিঙ্গ।
 এই লেখাতে শুধু এটুকুই লিখলাম কেন এখন থেকে কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে কারন শত্রু এখানে অদৃশ্য। লেখাটা বড় না করলে সামনের ছবিটা ভয়াবহতা বা গুরুত্ব বোঝানো কষ্টকর হয়ে যেত। কারো যদি বুঝতে কষ্ট হয় বা কোন প্রশ্ন থাকে তবে নক করলেই হবে আমি চেষ্টা করব উত্তর দিতে। এরপর থেকে কারেন্সী ওয়ারে বাদ বাকী লিখব।